শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার :- নওশাবা আহমেদ

আমি শেখাটা থামাতে চাই না

আমি শেখাটা থামাতে চাই না

সফল অভিনেত্রী নওশাবা আহমেদ। প্রতিটি চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতার অধিকারিণী তিনি। বিজ্ঞাপনের মডেল, মিউজিক ভিডিও ও টিভি নাটকে নজর কাড়ার পাশাপাশি এই গুণী অভিনেত্রী ওটিটি ও সিনেমাতে দর্শক মুগ্ধ করছেন। তাঁর সঙ্গে সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

‘মেঘনাকন্যা’ সিনেমাটির কাজের অগ্রগতি কতদূর?

এক সপ্তাহ আগেই মেঘনাকন্যার শুটিং শেষ করে এসেছি। এখনো দুই দিনের শুটিং বাকি আছে। দুটি গানের শুটিংও বাকি। যে দুই গানের মধ্যেই আমি রয়েছি। এই সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র মেঘনাকন্যার ভূমিকায় অভিনয় করেছি। এটি এই বছরেই মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। দেখা যাক।

 

সিনেমা কি কম করছেন?

আসলে অনেক চরিত্র করার অফার এসেছে কিন্তু আমি করিনি। আমার মনে হয়েছে সঠিকভাবে মূল্যায়নটা হয় না। আর ঠিকঠাক ক্যারেক্টার না হলে সেটা আমি কখনোই করি না। মনের মতো চরিত্র করার জন্য বসে থাকি। সেটা না হলে আপস করি না। তবে এখন সঠিকভাবে মূল্যায়নটা হওয়ার সময় এসেছে। হচ্ছেও।

 

তাহলে কি ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আশাবাদী?

আমি সবসময় একজন আশাবাদী মানুষ। আগের অশ্লীলতার সময় থেকে উতরে এখন ভালো ভালো সিনেমা ও ওটিটির কাজ হচ্ছে। নতুন নির্মাতারা ভালো কাজ করছেন। হুমায়ূন স্যারের পর ইন্ডাস্ট্রিতে একটা ভ্যাকুয়াম সৃষ্টি হয়েছিল। সেটা আবার পূরণ হয়েছে নতুন নির্মাতাদের নতুন কাজের মাধ্যমে। তারেক মাসুদ, মিশুক মুনিরদের মতো অনেক গুণীজনদের হারাইছি। তবে এখন আমাদের জেনারেশন লাগাম টেনে ধরেছে। এখন তো দুই বাংলার দর্শক চঞ্চল, মোশাররফ, নিশো, বাঁধন, জয়া আপাদের নিয়ে মুগ্ধতা প্রকাশ করে। সেটা ইতিবাচক। আসলে অসংগতি থাকবেই, তার মধ্য দিয়ে ভালো কাজ করে যেতে হবে। 

 

ঈদ উপলক্ষে কোনো নাটকের কাজ করেছেন?

প্রায় ৬-৭ বছর পর একটি নাটকের কাজ করলাম। এটি এনটিভির জন্য নির্মিত। নাম ‘বৃষ্টির চোখে মেঘ’। অরুণদার নির্মাণে এটি। আমার সঙ্গে আহসান হাবিব নাসিম ভাইও রয়েছেন।

 

বিজ্ঞাপনের কাজও করেছেন মনে হয়...

ফ্রেস প্রোডাক্টসের একটি টিভিসি করেছি। অনেক ভালো হয়েছে। এখানে সম্পূর্ণ নতুনরূপে নওশাবাকে দেখবে দর্শক।

 

বিভিন্ন গল্পে নানানরকম চরিত্র হয়ে ওঠা কীভাবে মেইনটেন করেন?

মিডিয়া আসার আগে থেকেই কিন্তু আমার বিভিন্ন শ্রেণির, বয়সের মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা। সবার সঙ্গে খুব সহজেই মিশে যেতে পারি। তাই যখন যেই গল্প ও চরিত্র আমার কাছে আসে সেটা নিয়ে ভাবী, দেখি, করতে চেষ্টা করি। যে কোনো চরিত্রের সঙ্গেই আমার পরিচয় রয়েছে। সেটা গার্মেন্টকর্মী হোক বা পরিচ্ছন্নতাকর্মী অথবা করপোরেট গার্ল বা নায়িকা- সেটা সহজে প্রোটেট করার চেষ্টা করি। সব নিজের মতো করেই ভাবী ও করি।

 

ওটিটিতেও কাজ করছেন কিন্তু কাজের সংখ্যা কম। কেন?

সর্বদা মাথায় থাকে কোন চরিত্র রিপিট করব না। আর যদি কোনোভাবে মিলেও যায় সেটাকে অন্যভাবে করার চেষ্টা থাকে। আসলে আমি যদি কোনো চরিত্র নিয়ে বিরক্ত অনুভব করি তবে দর্শকও তো বিরক্ত হবেন। অর্থের প্রয়োজন আছে, তবে শিল্পটা আগে। শিল্পকে ভালোবাসি বলে একটু যত্ন করে করার প্রচেষ্টা থাকে। সেই কারণে কাজের সংখ্যাটাও কম। তবে মনে প্রশান্তি আসে যখন ভালো কাজে দুই বাংলার দর্শকের থেকে অফুরন্ত সাড়া পাই। আমি ভিকি জাহেদের কাছে কৃতজ্ঞ। যখন নাটকের প্রতি বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম তখন ভিকিই আমাকে নতুনভাবে সবার সামনে এনেছে। আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে, আমার মেয়ে প্রকৃতির স্কুলের বন্ধুরা তো রীতিমতো আমাকে বর্ষা আন্টি বলে ডাকে।

 

নতুন কোনো গানচিত্রের মডেল হয়েছেন?

হ্যাঁ, নতুন একটি মিউজিক ভিডিও করেছি, সামনে প্রকাশ হবে। একটা বিষয় মাথায় থাকে সর্বদা, যেই কাজটাই করি যেন অভিনয়শিল্পী হিসেবে মূল্য থাকে। যারা বুঝে কাজটি নওশাবা পারবে তারাই আমাকে কাজে ডাকে। 

 

থিয়েটারে দেখলাম সময় দিচ্ছেন...

হ্যাঁ, জামিল স্যারের কাছে অ্যাকটিং ওয়ার্কশপ করার পর সম্প্রতি ডিরেক্টর ওয়ার্কশপ শেষ করেছি। শুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে এই ওয়ার্কশপগুলো করেছি। শুটিং করে কিছু টাকা পেলে এগুলো করি। লাস্ট দেড় মাস তো কাজই করিনি স্যারের ওয়ার্কশপ করব বলে। আসলে আমি এখনো শিখি। শেখাটা থামাতে চাই না। সর্বদা তৈরি থাকতে চাই।

 

নিজের সংগঠন ‘টুগেদার উয়ি ক্যান’ এর কার্যক্রম কেমন চলছে?

একা একা সংগঠন টেনে নেওয়া খুবই কঠিন। কেউ পৃষ্ঠপোষকতা করে না। অনেকে বাহবা দেয়, কিন্তু কেউ দুই শ বা পাঁচ শ টাকা নিয়ে এগিয়ে আসে না। তারপরও প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি ওয়ার্কশপ করেছি এ বছর। তিনটি  নাটকও তৈরি আছে। তবে শো নামানোর জন্য অর্থ নেই।

 

নওশাবা-প্রকৃতির মাঝে নতুন কারও আগমনের সম্ভাবনা...

এই মুহূর্তে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমি প্রকৃতির একটা বয়স পর্যন্ত শত ভাগ দিতে চাই। সেটা এই মুহূর্তে খুবই জরুরি। আমার জীবনের সঞ্চয় প্রকৃতি। আমি মনে করি, সবার সঙ্গে আমার জীবনের দিকগুলো নাও মিলতে পারে। সত্যি বলতে আমি এখন মানসিক ও আর্থিকভাবে তৈরি না। এখন নিজের পায়ে দাঁড়ানোটাই জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর