মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : খুরশিদ আলম

বেতার টিভির শিল্পী সম্মানী লজ্জাজনক

বেতার টিভির শিল্পী সম্মানী লজ্জাজনক

কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী খুরশিদ আলম এ পর্যন্ত প্রায় চার শতাধিক ছবিতে গেয়েছেন গান। গড়ে প্রতিটি ছবিতে পাঁচটি করে গান হলেও প্রায় ২ হাজারের বেশি গান তিনি আমাদের সংগীতাঙ্গনে উপহার দিয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন - সাইফ ইমন

 

ঈদ কেমন কাটল?

ঈদ ভালো কেটেছে আলহামদুলিল্লাহ। আগে একটা গরু কয়েকজন মিলে কোরবানি দেওয়া হতো। সবার মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি কাজ করত। এখন দেখা যায় কোনোরকম নিজের ভাগটা নিয়েই চলে যাচ্ছে। আরও একটা ব্যাপার ছিল যে, পাড়া-প্রতিবেশী সবার মধ্যে ঈদের আনন্দটা ভাগাভাগি করার প্রচলন ছিল। এখন এটা দেখা যায় না। সময়ের সঙ্গে ঈদের ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে।

 

গানের জগতে প্রচুর জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। কোনো অপ্রাপ্তি কি আছে?

শ্রোতাদের ভালোবাসা পেয়ে এসেছি এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। ১৯৭৫ সালে আমার গাওয়া ‘চুমকি চলেছে একা পথে’ গানটি ২০২৩ সালে এসেও মানুষ শুনছে, এরচেয়ে আনন্দ আর কি হতে পারে। ভারতের বিখ্যাত চলচ্চিত্র দোস্ত দুশমন-এর বাংলাদেশি রিমেক ‘দোস্ত দুশমন’ চলচ্চিত্রে গানটি গেয়েছিলাম। এখনো মানুষ গানটি শুনছে।  গানটির চিত্রায়ণে ছিলেন শাবানা এবং ওয়াসিম। এমন আরও অনেক গানই করেছি যা শ্রোতারা পছন্দ করেছে। তবে আমি এত বছরে এখনো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাইনি। এটা ঠিক আক্ষেপ বলব না। কারণ প্রকৃত শিল্পী কখনো কোনো পুরস্কার পাওয়ার আশায় গান করে না।

 

আপনি বলেছিলেন আপনাকে যাতে মরণোত্তর সম্মাননা না দেওয়া হয়...

হ্যাঁ, একদম ঠিক। আমি চাই না আমার মৃত্যুর পর আমাকে মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়া হোক। জীবিত অবস্থায় মানুষকে প্রাপ্য সম্মান দিতে না পারলে মৃত্যুর পর সেই সম্মানের কোনো দাম থাকে না মৃত মানুষটির কাছে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার না পেলেও জীবিত থাকা অবস্থায় একুশে পদক পেয়েছি এটা আমার জন্য সম্মানের। ২০১৮ সালে সরকার আমাকে একুশে পদকে ভূষিত করেছে। এর জন্য আমি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। 

 

বর্তমানে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক পরিবর্তন, কীভাবে দেখছেন?

এখন অনেক নতুন শিল্পী ভালো কিছু করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আবার খারাপ দিকও আছে। সংগীতে মাস্টার্স করা একজন যদি ফেরদৌসী রহমান, আবদুল জবারকে না চিনে এটা আমাদের জন্য দুখঃজনক। তবে অনেকে ভালো করছে। নতুন নতুন কাজ করছে। আমি মনে করি এটার মূল্যায়ন আরও ২০-২৫ বছর পর হবে। নতুন কিছু হঠাৎ করে মানুষ নিতে পারে না। সময় লাগে। আরেকটা দিক হচ্ছে সবাই টাকার পেছনে ছুটছে, ফলে ভালো গান করার প্রবণতা কমছে। এটাও ঠিক যে, আপনি সংগীত করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন না কারণ বেতার টেলিভিশন থেকে যে সম্মানী দেওয়া হয় তা লজ্জাজনক।

সর্বশেষ খবর