বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
কথোপকথন

হুমায়ূন স্যারকে সবখানে খুঁজে বেড়াই

হুমায়ূন স্যারকে সবখানে খুঁজে বেড়াই

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তাঁর পরিচালিত নাটক-চলচ্চিত্রের নিয়মিত মুখ হিসেবে রঙিন ভুবনে সুপরিচিত তারকা ডা. এজাজুল ইসলাম। হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে স্মৃতিচারণা ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ডা. এজাজের সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

আজ হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যবার্ষিকী তাঁর সঙ্গে আপনার স্মৃতিকথা জানতে চাই

নির্মাণের নানা কাজেও স্যার আমার ওপর ভরসা রাখতেন। শ্যামল ছায়া চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের সময় দেখি স্যারের ঠিক করা লোকেশনে গিয়ে শুটিং সম্ভব নয়। কিন্তু ‘স্যার’কে বলতেও পারছিলাম না ব্যাপারটা। তাই তাঁকে দুশ্চিন্তায় না ফেলে মুহূর্তের মধ্যেই শুটিং লোকেশন ঠিক করে ফেলি। আমার কাজে অবাক হয়ে স্যার তখন ‘গুড জব ডাক্তার’ বলে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বাহবা দিয়েছিলেন। আবার নুহাশ পল্লীর জন্য জায়গা দেখতে গিয়ে এক রিকশায় স্যারের সঙ্গে গ্রামের রাস্তায় চলার কথা ভুলিনি। সেদিনই প্রথম জেনেছিলাম বৃষ্টিতে ভিজতে স্যার অনেক পছন্দ করতেন। সেদিন খাবার তালিকায় ইলিশ মাছ দেখে দারুণ খুশি হয়েছিলেন স্যার। আর স্যারকে খুশি করা খুব সহজ ছিল। শুটিং চলাকালীন বা শুটিং শেষে একই রকম মানুষ ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। সব সময় সবার খেয়াল রাখতেন। আর তাঁর কাছে সবচেয়ে অপছন্দের বিষয় ছিল মিথ্যা কথা।

 

স্যার তো বিশাল আয়োজন করে শুটিং করতেন, তাই না?

স্যার ছিলেন নির্লোভ মানুষ। যা করতে ইচ্ছা হতো তিনি তা বিশাল করে করতেন। মনের আনন্দের জন্য, মনের প্রশান্তির জন্য তিনি সবই করতেন। শ্রাবণ মেঘের দিন বা দুই দুয়ারীর শুটিংয়ের আয়োজন ছিল বিশাল। দুই দুয়ারী যদি তিন মাস টানা চলত তাহলে সে সময় তিনি ২০-৩০ কোটি টাকা ব্যবসা করতে পারতেন। তিনি নির্লোভ বলেই সে চিন্তা করেননি।

 

তাঁর শেষ কোনো ইচ্ছা ছিল, যা পূরণ হয়নি?

একটি ক্যান্সার হাসপাতাল করার ইচ্ছা ছিল।

 

নাট্যজগতে হুমায়ূন আহমেদের শূন্যতা কতখানি?

শূন্যতা তো পূরণ হওয়ার নয়। হুমায়ূন আহমেদ যেভাবে নাটক করতেন সেভাবে লেখা আর ডিরেকশন দেওয়া এখন আর এই পর্যায়ে কাছাকাছিও কেউ নেই। এখন আর ওই ধরনের নাটকও নাই, ওই শ্রেণির দর্শকও নাই।

 

তাঁকে তো আপনিস্যার বলে সম্বোধন করতেন?

তিনি আমার শিক্ষকের বন্ধু ছিলেন বলেই সবসময় ‘স্যার’ বলেই সম্বোধন করেছি। স্যারের পরিচালনায় প্রথমবারের মতো অভিনয় করেছিলাম ‘সবুজ সাথী’ নাটকে, স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠকর্মী হিসেবে। চরিত্র ছিল ছোট। এটির পর থেকেই স্যারের প্রায় সব নির্মাণেই থাকতাম। আর তাঁর সঙ্গে প্রথমবার কাজ করি ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে।

 

তাঁর পরিচালিত কোন কাজটিকে আপনার অভিনীত শ্রেষ্ঠ কাজ বলে মনে করেন?

আলাদা করে কোনোটির নাম বলা সম্ভব নয়। যত কাজই করা হোক না কেন, যত ভালো কাজই হোক, স্যারকে সব স্থানেই খুঁজে বেড়াই। মৃত্যুর পর তাঁর জন্মদিনেও অন্য সবার মতো আনন্দ করতে পারি না। কারণ, মৃত পিতার জন্মদিনে সন্তানের উচ্ছ্বাস মানায় না।

সর্বশেষ খবর