সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

৬৪ বসন্তে সঞ্জয় দত্ত

৬৪ বসন্তে সঞ্জয় দত্ত

বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনয় তারকা সুনীল দত্ত ও নার্গিস দম্পতির সন্তান দর্শকপ্রিয় অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত।  শনিবার ছিল সঞ্জয়ের ৬৪তম জন্মদিন। সঞ্জয়ের ঘটনাবহুল জীবন কাহিনির চুম্বক অংশ তুলে ধরেছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ

 

জন্মদিনে নতুন সিনেমার লুক

বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের ৬৪তম জন্মদিন ছিল শনিবার। আর জন্মদিনেই নিজের নতুন ছবির লুক প্রকাশ্যে আনলেন শক্তিমান এই অভিনেতা। পরিচালক পুরী জগন্নাথের ব্লকবাস্টার ‘ইস্মার্ট শঙ্কর’ সিনেমার সিক্যুয়েল, ‘ডবল ইস্মার্ট’ সিনেমার ফার্স্ট লুক প্রকাশ্যে এসেছে। সেই  পোস্টার তাঁর ইনস্টাগ্রাম পেজে  পোস্ট করেছেন সঞ্জয় দত্ত। পোস্ট করা ছবিতে সঞ্জয়কে কানে দুল, হাতে আংটি, ভ্রুর পাশে ট্যাটু, দামি ঘড়ি, চুরুট ধরিয়ে বোল্ড লুকিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে। সঞ্জয় দত্ত জানিয়েছেন, তিনি এ সিনেমায় কাজ করতে পেরে গর্বিত। ২০২৪ সালে মহাশিবরাত্রিতে হিন্দি, তেলেগু, তামিলসহ একাধিক ভাষায় মুক্তি পাবে।

 

ভালোবাসার উপহার সঞ্জয়

নার্গিস আর সুনীল দত্ত। বলিউডের দুই জনপ্রিয় তারকাশিল্পী। ১৯৫৮ সালে তাঁরা সাতপাকে বাঁধা পড়েন। বিয়ের এক বছরের মাথায় ভালোবাসার উপহার হিসেবে তাদের ঘর আলো করে আসেন পুত্র সঞ্জয় বলরাজ দত্ত। জন্ম ২৯ জুলাই ১৯৫৯ সাল।

 

বাবা-মায়ের পথে

সঞ্জয় উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পর মা-বাবার পথ ধরেই হাঁটতে থাকেন। ১৯৮১ সালে ‘রকি’ চলচ্চিত্রে অভিষেকের পর তিনি ১৮০টির অধিক হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। প্রায় ৩৮ বছরের চলচ্চিত্র জীবনে দুটি ফিল্মফেয়ার, দুটি আইফা, দুটি বলিউড মুভি, দুটি স্ক্রিন, তিনটি স্টারডাস্ট ও একটি করে গ্লোবাল ইন্ডিয়ান ফিল্ম ও বঙ্গ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার অর্জন করেছেন। তাঁর অভিনীত ‘রকি’, ‘সড়ক’, ‘সাজান’, ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’, ‘লাগে রাহো মুন্না ভাই’ কিংবা ‘খলনায়ক’-এর মতো অসাধারণ সব ছবির কথা সারা বিশ্বের দর্শকের মনে চির জাগরূক হয়ে থাকবে। এর আগে শিশুশিল্পী হিসেবে সঞ্জয় ১৯৭২ সালে ‘রেশমা অউর শেরা’তে অভিনয় করেন, চলচ্চিত্রটিতে তাঁর বাবা সুনীল দত্ত ছিলেন, সঞ্জয়কে চলচ্চিত্রটিতে  বাচ্চা কাওয়ালি গায়ক হিসেবে দেখানো হয়।

 

বাস্তব জীবনে কেন খলনায়ক

বাস্তব জীবনে একসময় সঞ্জয় দত্ত খলনায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেও এতে তাঁর কোনো দোষ ছিল না। অকালে মাকে হারানোর শোক সহ্য করতে না পেরে অতিমাত্রায় ড্রাগ আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর মা নার্গিস মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৮১ সালে অকালে মারা যান, এ বছরই সঞ্জয় অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘রকি’ মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার আগেই নার্গিস মারা যান। মা নার্গিসের অকাল মৃত্যুর শোক সঞ্জয়কে বাস্তব জীবনেও খলনায়ক হতে বাধ্য করে। শুরু হয় তাঁর বেপরোয়া জীবনযাপন। একসময় মাদকাসক্তির হাত থেকে পুত্রের মুক্তির জন্য বাবা সুনীল তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেন। পরে অবৈধ অস্ত্র বাড়িতে রাখার দায়ে করা মামলায় ২০১৩ সালের ২১ মার্চ সঞ্জয়কে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৬ সালে সাজা শেষে মুক্তি পান সঞ্জয়।

 

জেলে ফাইল বানাতেন

মুম্বাইয়ের ইয়েরাওয়ারা কেন্দ্রীয় কারাগারের ১৬৬৫৬ নম্বরের কয়েদি ছিলেন সঞ্জয়। সেখানে কাগজের ফাইল বানানো আর বাঁধাইয়ের কাজ করেছেন তিনি। ওই কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে তিনি দিনে ২৫ থেকে ৪০ রুপি পেতেন।

 

বিবাহিত জীবনেও ঝড়ো হাওয়া

ঝড়ো হাওয়া সঞ্জয়ের একাধিক প্রেম-বিয়ে লন্ডভন্ড করে দেয়। ১৯৮০-তে অভিনেত্রী টিনা মুনিমের সঙ্গে প্রেমে জড়ান। তাদের আট বছরের প্রেমের সম্পর্ক এক সময় বিষাদে ভরে ওঠে। ১৯৮৭ সালে অভিনেত্রী ঋচা শর্মাকে বিয়ে করেন। ঋচা ১৯৯৬ সালে মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ১৯৯৮ সালে বিমানবালা-মডেল রিয়া পিল্লাইকে বিয়ে করেন সঞ্জয়। ২০০৮ সালে বিবাহবিচ্ছেদে রূপ নেয় তাদের। সঞ্জয় ২০০৮ সালে মান্যতা দত্তের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

 

সঞ্জয়কে নিয়ে বায়োপিক ‘সঞ্জু’

রাজকুমার হিরানি সঞ্জয়ের জীবনের গল্প নিয়ে বায়োপিক নির্মাণ করেন। ‘সঞ্জু’ বায়োপিকটি মুক্তি পায় ২০১৮ সালের ২৮ জুন। ওই বায়োপিকে সঞ্জয়ের চরিত্রে দেখা যায় রণবীর কাপুরকে। বায়োপিক থেকে সঞ্জয়ের জীবনের আরও কিছু অজানা তথ্য সবার সামনে আসে। চলচ্চিত্রটি ব্যবসা-সফল হয়।

সর্বশেষ খবর