বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
কথোপকথন

মিসির আলি চরিত্রটি করার ইচ্ছা ছিল

মিসির আলি চরিত্রটি করার ইচ্ছা ছিল

নাট্যজন আসাদুজ্জামান নূর। একজন তুখোড় অভিনয়শিল্পীর পাশাপাশি নিজেকে ঋদ্ধ করেছেন নির্দেশক, আবৃত্তিশিল্পী, সংগঠক ও রাজনীতিবিদ হিসেবে। তাঁর ভরাট গলার আবৃত্তি তন্দ্রাচ্ছন্ন করে রাখে শ্রোতাদের। এই তারকার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

কেমন আছেন?

আছি, ভালোই তো। সব কাজ ঠিকঠাক মতো করতে পারছি।

 

অভিনয় কমিয়ে দেওয়ার কারণ কী?

আমরা যাঁরা রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছি, আমাদের ব্যক্তিগত জীবনটা তেমন নির্ঝঞ্ঝাট নয়। সে কারণেই হয়তো অভিনয় অনেক কম করি বা করি না বললেই চলে। দীর্ঘদিন অভিনয় না করার ফলে, যেটা বলা হয় অনভ্যাসে বিদ্যা হ্রাস পায়। আমারও বিদ্যা হ্রাস পেয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।

 

নাটকে নিয়মিত আপনাকে দেখতে চায় দর্শক...

আমি নিয়মিত অভিনয় করতে চাই, তবে ভালো গল্পের স্ক্রিপ্ট হতে হবে। আমার কাছে অনেকেই স্ক্রিপ্ট নিয়ে আসে; কিন্তু গল্প পছন্দ হয় না। গল্প ও নির্মাণ ভালো হলে করতে সমস্যা নেই। আগে প্রচুর একক নাটকেও অভিনয় করেছি। এখন অবশ্য ধারাবাহিকে অভিনয় করতে চাই না। একক হলে করব। ভালো গল্পের ওয়েব-সিরিজ হলেও করতে অসুবিধা নেই। ভালো গল্প ও নির্মাণ ভালো হলে চলচ্চিত্রও নিয়মিত করা যায়।

 

কিংবদন্তি পরিচয় দিতে আপত্তি  কেন?

এই শব্দটি বহুবার ব্যবহৃত হতে হতে খুব মলিন হয়ে গেছে। এটি ব্যবহার কম বা না করাই ভালো। আমার চোখে কিংবদন্তি শিল্পী বলতে যাঁদের বুঝি, যেমন গোলাম মুস্তাফা আছেন, আনোয়ার হোসেন আছেন কিংবদন্তি শিল্পী। আমরা ওই পর্যায়ের শিল্পী এখনো হতে পারিনি বলে আমি বিশ্বাস করি।

 

থিয়েটার মঞ্চে নতুন নাট্যকারের অভাব রয়েছে?

এই অভাবটা একই সঙ্গে মঞ্চে এবং টিভিতে। এখন তো ভালো নাট্যকারের অভাব। নতুন নাট্যকার সেভাবে তৈরি হচ্ছে না। তেমন করে তাদের ভালো নাটক পাচ্ছে না থিয়েটার দল। একসময় আবদুল্লাহ আল মামুন, সৈয়দ শামসুল হক, মমতাজউদ্দীন আহমদের মতো দুর্দান্ত নাট্যকার ছিলেন। হুমায়ূন আহমেদ টেলিভিশনের জন্য দারুণ সব নাটক লিখতেন। তাঁদের লেখা নাটক টিভিতে ও মঞ্চে মঞ্চস্থ হতো। দর্শক মুগ্ধ হয়ে সংলাপ শুনতেন। মুখস্থও করে ফেলতেন সংলাপ।

 

এখন কি ভালো নাটক হচ্ছে?

হচ্ছে, তবে অনেক কম। তেমন করে তো ভালো নাটক হচ্ছে না। ভালো নির্মাতারও সংকট রয়েছে। হুমায়ূন আহমেদের মতো নির্মাতার অভাব অনুভব করি।

 

সেই সময়ের নাটকের সঙ্গে এই সময়কার পার্থক্য...

আমাদের সময় নাটক ছিল ভিন্ন স্বাদের। শুটিং শেষ করেছি সুন্দরভাবে। বিটিভিতে সন্ধ্যার পর সবাই মিলে নাটকের মহড়া করেছি; সঙ্গে জম্পেশ আড্ডা তো চলতই। এখন তো সবাই যান্ত্রিক হয়ে গেছে। নাটকে নেই কোনো অ্যাকশন-রিঅ্যাকশন!

 

‘চাঁদের অমাবস্যা’য় অভিনয় করেছেন। এটিতে আপনার চরিত্র ও গল্পটি কেমন?

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর বিখ্যাত উপন্যাস ‘চাঁদের অমাবস্যা’ থেকে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন জাহিদুর রহিম অঞ্জন। মানিকগঞ্জে সিনেমাটির শুটিং করা হয়। এটিতে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছি; বড় ভাইয়ের চরিত্রে।

 

‘জয় বাংলার ধ্বনি’তে শম্ভু রাজাকারের মতো নেতিবাচক চরিত্রটি কেন বেছে নিলেন?

আমার নেতিবাচক চরিত্রের প্রতি আগ্রহ অনেক। এই সিনেমাটির গল্প শুনে মনে হলো করা যায়। খুবই ইন্টারেস্টিং লাগল। তাই কাজটির সঙ্গে যুক্ত হওয়া।

 

অনেক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কোন চরিত্রটি করার ইচ্ছা অপূর্ণ রয়ে গেছে?

মিসির আলি চরিত্রে কাজ করার খুব ইচ্ছা ছিল আমার। হুমায়ূনকে বলেওছিলাম মিসির আলি তৈরি কর, আমি এ চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। সে বেঁচে থাকলে এতদিনে হয়তো হতো।

সর্বশেষ খবর