সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
ক থো প ক থ ন

দর্শকের টেস্ট ধরতে পারছে না কেউ

দর্শকের টেস্ট ধরতে পারছে না কেউ

পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেতা রজতাভ দত্ত রনি। যিনি নানা মাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এপারের বেশ কিছু ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই তারকার সঙ্গে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

 

পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের জয়া, মোশাররফ, বাঁধন, চঞ্চলরা এখন দাপিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের কারণে সেখানকার জনপ্রিয় শিল্পীদের কাজ কমে গেছে?

যাঁরা এ-বাংলা থেকে গিয়ে ওখানটায় কাজ করেছেন, অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, ৫০টি ছবি পেয়েছেন- সেটা তাঁরা নিজের যোগ্যতায় পেয়েছেন। ঠোঁট ফুলিয়ে অভিনয় করে, এ-করলা না ও-করলা না- এ নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়িয়ে লাভ কী! তাঁরা কি মেশিনগান নিয়ে ঢুকেছেন যে, ছবি দেন, না হলে গুলি করে মেরে ফেলব! আমরাও তো এ-বাংলায় এসে চুটিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। যদি মানুষ ভালোবাসে, তাহলে করব; না হলে করব না। এটা নিয়ে আক্ষেপ করার তো কিছু নেই। তাঁরা তাঁদের প্রতিভা দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। যদি প্রতিভা না থাকে তাহলে তো হবে না। বাংলাদেশি এসব শিল্পীর মধ্যে নিশ্চয়ই কোনো এক্সফ্যাক্টর আছে।

 

ওপারে আগের মতো এখন কেন কমার্শিয়াল ছবি ব্যবসাসফল হচ্ছে না?

কমার্শিয়াল ছবি মানেই হচ্ছে ব্যবসানির্ভর ছবি। কাজেই সবাই চান যে, তাঁর ছবি ব্যবসা করুক। এখন ব্যবসাসফল ছবি করতে গিয়ে সেই ছবি কি আমি সস্তায় বাজিমাত করার চেষ্টা করছি, নাকি আমি রুচির অংশটা একেবারেই নামিয়ে দেব বা সূক্ষ্মতার দিকে কোনোভাবেই মন দেব না- সেগুলো একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি কোনো কমার্শিয়াল ছবি ফ্লপ করে থাকে তবে আমার ধারণা, সেই মাপের কমার্শিয়াল ছবিই হচ্ছে না বা কোনো কারণে হোক ফেল করছে। অথবা দর্শকদের টেস্ট ধরতে পারছে না কেউ। আবার যাঁরা বানাচ্ছেন তাঁরা হয়তো ভাবছেন যে, টেস্টটা বেশিই ধরে ফেলেছি; ফলে মসলাটা বেশি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ছবিটা তো বুকের মধ্য থেকে বানাতে হয়! মনটা যদি তার মধ্যে না থাকে তাহলে সম্ভব নয়।

 

মূল গলদটা কোথায়?

এখন তো অনেকের বাড়িতেই অসংখ্য চ্যানেল রয়েছে। ১৫ বছর আগের কমার্শিয়াল ছবিগুলো যখন চলে তখন কেন আবার মানুষ দেখতে বসে? বা শোলে যদি কোনো ভারতের হলে আসে, মানুষ ফিরে দেখে কেন? কাজেই কমার্শিয়াল ছবিকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। অন্য কোথাও কোনো একটা গন্ডগোল আছে, সেটা সবাইকে খুঁজে বের করতে হবে। আমরাও চেষ্টা করছি। কোথাও ফাঁক থেকে যাচ্ছে। এরপর এখন কিন্তু প্রচুর মাল্টিপ্লেক্স হচ্ছে। আগে তো এত মাল্টিপ্লেক্স ছিল না। এটিতে যে টিকিটের দামটা থাকছে সেটা সাধারণ সিঙ্গেল স্ক্রিনিং থেকে চড়া। এখন মাল্টিপ্লেক্সে যারা যাচ্ছেন তারা কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম। এটা হলো একাংশ। বাকিদের কিন্তু অর্থনৈতিক সামর্থ্য নেই চড়া দামে টিকিট কেটে ছবি দেখার। এসব নিয়ে দ্রুতই ভেবে দেখা দরকার।

 

কলকাতায় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন?

ইন্ডিয়ায় প্রচুর কাজ হচ্ছে, তবে সেটা ওটিটি প্ল্যাটফরমের জন্য হচ্ছে। কিন্তু আমরা যাঁরা থিয়েটার বা ফিল্ম থেকে এসেছি, সেটা থিয়েটার হলেও যেমন পারফর্ম না করতে পারলে আমাদের ভালো লাগে না। তেমনি কষ্ট লাগে ছবিগুলো হাউসে না দেখতে পেলে। দর্শকদের মধ্যে দেখা, নিজেও আমি অন্যের ছবি হাউসে গিয়ে দেখি। আমার বাড়িতে টেলিভিশন প্রায় চলেই না। আমি হাউসে গিয়ে ছবি দেখা পছন্দ করি খুব। আমি এসব অভিজ্ঞতা খুব মিস করছি।

 

অভিনয়ে বাংলাদেশে তো কয়েক দফায় আসা হয়েছে...

বেশ কয়েকবার। আগে বেশির ভাগ ছবিই এফডিসিতে করেছি। একটা ছবি অনেকদিন আগে করেছিলাম, সেটা বান্দরবানে। তবে বাংলাদেশের একদম নিজস্ব শিকড়ে গিয়ে কাজ করার বা গ্রামাঞ্চলে গিয়ে কাজ করার সুযোগ হয়েছে পুজনের ‘প্রিয়া রে’ এর মাধ্যমে।

সর্বশেষ খবর