সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
ক থো প ক থ ন

শিল্পী হিসেবে আমার জীবনে কোনো অপূর্ণতা নেই

শিল্পী হিসেবে আমার জীবনে কোনো অপূর্ণতা নেই

বাংলা গানের পাখি সাবিনা ইয়াসমিন। দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে সংগীতের ভুবনে তাঁর সগর্বে বিচরণ। তিনি গান গাইতে এখন আমেরিকায় রয়েছেন। এক মাস পর দেশে ফিরবেন। বাংলা গানের অসম্ভব এই জনপ্রিয় শিল্পীর জন্মদিন আজ। জন্মদিনে তাঁর সঙ্গে কথোপকথনে- পান্থ আফজাল

 

আজ আপনার জন্মদিন। এই দিনটি আপনার কাছে কেমন?

জন্মদিনটা সবসময়ই আমার কাছে খুব ভালো লাগার। কিন্তু বয়স বাড়ছে, আর এ বিষয়টি যখন মনে পড়ে তখন মন খারাপ হয়ে যায়। জন্মদিন মানেই জীবন থেকে আরও একটি বছর হারিয়ে যাওয়া। এই সময়ে আমার আব্বা-আম্মা যদি থাকতেন, আমি সবচেয়ে খুশি হতাম। তারপরও এখনো বেশ ভালো আছি, সুস্থ আছি।

 

ছোটবেলার জন্মদিন কেমন ছিল?

জন্মদিন এলেই আব্বা-আম্মা এবং আমার বোনদের খুব মিস করি। কিন্তু তারপর সবার ভালোবাসা পেয়ে আমি সে কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্টা করি। ঈদ এলে যেমন নতুন জামাকাপড় লুকিয়ে রাখতাম, ছোটবেলায় জন্মদিন এলেও তাই করতাম। জন্মদিনে এসব কাপড় বের করতাম। তখন আনন্দটাই ছিল অন্যরকম। তখন ভাবতাম কখন বড় হব, কখন স্কুলে যাব, কলেজে যাব, ভার্সিটিতে পড়ব। কিন্তু এখন বড় হয়ে ভাবি, আহারে আবার যদি সেই ছোটবেলায় ফিরে যেতে পারতাম।

 

সংগীত জীবনে কোনো অপ্রাপ্তি আছে?

একজন শিল্পী হিসেবে আমার জীবনে কোনো অপূর্ণতা নেই। আল্লাহ আমাকে অনেক দিয়েছেন। অনেক মানুষের ভালোবাসা, সম্মান, শ্রদ্ধা পেয়েছি, এটাই বড় কথা।

 

দিনকাল কীভাবে কাটছে?

সমসাময়িক অনেকেই তো চলে গেছেন। তাই কিছু নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করি। বাসায়ই সময় কাটে। নামাজ কালাম পড়ি। পাশাপাশি গানের চর্চাটাও চালু রেখেছি। যেহেতু আমি গানের মানুষ, এখনো দেশ এবং দেশের বাইরে নিয়মিত অনুষ্ঠানে গান করছি।

 

গাজী মাজহারুল আনোয়ারের শূন্যতা কতখানি অনুভব করেন?

কিছু কিছু মৃত্যু আমাদের মনে অন্যরকম নাড়া দেয়। আমরা একে একে অভিভাবকশূন্য হয়ে যাচ্ছি, আমাদের গুরুজনেরা চলে যাচ্ছেন। এই শূন্যতা কীভাবে পূরণ করা যাবে, আমি জানি না। গাজী ভাই ২০ হাজারের মতো গান লিখেছেন। আমার মনে হয় এরমধ্যে আমিই ৬ থেকে ৭ হাজার গান গেয়েছি। গাজী ভাই, সত্যদা (সত্য সাহা) আমরা একটি টিমের মতো ছিলাম। একসঙ্গে অসংখ্য গান করেছি। কত স্মৃতি, কত রকম কথা, কত গান, কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব!

 

আর এন্ড্রু কিশোরের সঙ্গে স্মৃতি...

এন্ড্রুর সঙ্গে কত যে স্মৃতি আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু আজ সব শুধুই স্মৃতি। আর দেখা হবে না, কথা হবে না, গান গাওয়া হবে না একসঙ্গে। ভাবতেই বুকের ভিতরটা কেঁদে ওঠে। এন্ড্রু কিশোরের মতো শিল্পী আমরা আর পাব না। বিশেষ করে চলচ্চিত্রের গানের জন্য এমন নিখুঁত কণ্ঠ আর পাওয়া যাবে না। এন্ড্রু ছিল আমার ভাইয়ের মতো, বন্ধুর মতো।

 

সিনেমার গানে আপনাকে কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

সিনেমার গান বেশি গাইছি না। যেগুলো আমার মতো গান সেগুলো গাই।

 

বর্তমানে যারা গান গাইছেন তাদের সম্পর্কে কি বলবেন?

সবাই ভালো গাইছে। কারণ মানুষ তো তাদের গান পছন্দ করছে, না হলে এত শিল্পী গাইতে পারত না।

 

এখনো প্রতিদিন নিয়ম করে রেওয়াজ করা হয়?

প্রতিদিনই করার চেষ্টা করি। সকালে-বিকালে করি। মিনিমাম এক ঘণ্টা রেওয়াজ করি। ভালো লাগলে আরও বেশি সময় করি। রেওয়াজ তো গানের অন্যতম প্রাণ।

সর্বশেষ খবর