শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
কথোপকথন

তখন মনে হয় পৃথিবী খুব সুন্দর

তখন মনে হয় পৃথিবী খুব সুন্দর

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত মেহের আফরোজ শাওন একাধারে একজন স্থপতি, অভিনেত্রী, কণ্ঠশিল্পী, চলচ্চিত্র ও নাট্য নির্মাতা। মিডিয়া জগতের বাইরেও যুক্ত রয়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। গতকাল ১২ অক্টোবর ছিল এই গুণী মানুষের জন্মদিন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- সাইফ ইমন

 

জন্মদিন কীভাবে কাটে?

আসলে আমি জন্মদিন পালনও করি না কাউকে দাওয়াতও দিই না। কোনো পার্টি করি না জন্মদিনে। যেটা হয় আমাকে যারা ভালোবাসেন, স্নেহ করেন এমন খুব কাছের মানুষরা আসেন যারা সবসময় কাছাকাছি থাকেন।

 

আপনি একজন আর্কিটেক্ট আবার একটি কোম্পানির পরিচালকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নানা কাজে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তবে মিডিয়ায় ব্যস্ততা কমিয়ে দিয়েছেন...

বেশ কয়েক বছর থেকেই আমি কাজ কমিয়ে দিয়েছি। গান গাইছি। দেশে এবং দেশের বাইরে স্টেজ পারফর্ম করছি। কিছু গান রেকর্ড করা হয়েছে সামনে আসবে। মাছরাঙা টেলিভিশনের স্কয়ার সুরের সেরা জুনিয়র নামে একটি রিয়েলিটি শোতে বিচারক হিসেবে আছি। শুটিং চলছে। জন্মদিন উপলক্ষে একটি বিশেষ মুহূর্ত শেয়ার করতে চাই। স্কয়ার সুরের সেরা জুনিয়রে শুটিং চলাকালীন বারবার বলছিলাম, আমার বাসায় যেতে হবে বাচ্চারা অপেক্ষা করছে। কিন্তু তারা দেখছি লেটই করছে। এদিকে ১১টা বেজে গেছে। খারাপ লাগছে। ফোনে বাচ্চারা বলছে মা কখন আসবে বাসায়। এরপর উনারা হঠাৎ ঘোষণা দিলেন আমাদের অপেক্ষার অবসান হয়েছে। আমরা এখন কেক কাটব। বিশেষ একজন হ্যাপি বার্থডে গান গাইবে। আমি দেখলাম মাইক্রোফোনে নিষাদ হুমায়ূন গান করছে। স্কয়ার সুরের সেরা জুনিয়র আমাকে না জানিয়ে আমার বাসা থেকে নিষাদ-নিনিতকে নিয়ে এসে আমাকে জন্মদিনের সারপ্রাইজটা দিয়েছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি চমৎকার একটি সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।

 

সিঙ্গেল প্যারেন্ট হিসেবে আপনার পথচলা...

সিঙ্গেল প্যারেন্টিং কথাটার মধ্যেই এক রকম রহস্য ছিল। এখন আশপাশে আমরা অনেক সিঙ্গেল প্যারেন্ট দেখি। একা বাবা যেমন দেখি আবার তেমনি একা মা-ও দেখি। এই পথচলাটা কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। এটা একেক সময় অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়, আবার অনেক সময় ভীষণ আনন্দেরও। সারা দিন কাজ শেষে যখন বাসায় ফিরি তখন বাচ্চারা এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দেয়। তখন মনে হয় পৃথিবী খুব সুন্দর আর পৃথিবীটা আসলেই খুব সুন্দর।

 

হুমায়ূন স্যারের সঙ্গে আপনার পরিচয় তাঁর পরিবারের মাধ্যমে- এমন ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত রয়েছে, সত্যি ঘটনাটা জানতে চাই...

হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের কারও সঙ্গেই আমার পরিচয় ছিল না। হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের যার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় তিনি স্বয়ং হুমায়ুন আহমেদ। আমি সে সময় নতুনকুঁড়িতে নাচে অংশ নিয়েছি। এর আগে সুপ্রভাত ঢাকা এবং রাবেয়া খাতুনের নাটকে অভিনয় করেছি। নওয়াজেশ আলী খান এবং হুমায়ূন আহমেদ তখন জননী নামে একটি প্রজেক্টে কাজ করছেন। তারা শিশুশিল্পী খুঁজছিলেন নতুনকুঁড়ি থেকে প্রথম হয়েছে বা দ্বিতীয় হয়েছে এমন কেউ। নতুনকুঁড়ির প্রডিউসার আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা প্রথম দ্বিতীয় হয়েছে তারা তো রয়েছেই তবে উনি নিজে মনে করেন তাদের চেয়েও ভালো অভিনয় করতে পারব আমি। কারণ উনার নাটকে এর আগে কাজ করার কারণে উনার মনে হয়েছে, অভিনয়টা আমি ভালো পারি। তিনিই প্রথম নওয়াজীশ আলী খান এবং হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।

 

প্রথম পরিচয়ে হুমায়ূন আহমেদ স্যারকে কেমন দেখেছিলেন?

তখন ওই জননী নাটকের জন্য বাংলাদেশ টেলিভিশনে গিয়েছিলাম। কক্ষে ঢুকতেই দেখলাম এক লোক হাওয়াই সার্ট পরা, ফুলপ্যান্ট পরা, চেয়ারের ওপর পা তুলে বসা। একটু কুঁজো হয়ে সিগারেট ফুঁকছিলেন! এভাবে বসে থাকতে দেখে আমি প্রথমে একটু অবাক হয়েছিলাম। সেটাই প্রথম দেখা। নওয়াজীশ আলী খান আমাকে বললেন এই যে লোকটা বসে আছেন তিনিই হুমায়ূন আহমেদ।

সর্বশেষ খবর