মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আলাপন

বায়োপিকে অভিনয় করা খুবই কঠিন

বায়োপিকে অভিনয় করা খুবই কঠিন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্মিত ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন নন্দিত অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু। এই সিনেমায় তিনি খন্দকার মোশতাকের চরিত্রে রূপদান করেছেন। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন - পান্থ আফজাল

 

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ মুক্তি পেয়েছে। কেমন লাগছে?

আমরা অনেকদিন ধরে প্রতীক্ষার প্রহণ গুনছিলাম। এমন একটি সময়ে আমরা কাজটা শুরু করেছিলাম, যখন রিলিজ হওয়ার কথা ছিল মাঝখানে প্যান্ডেমিকের কারণে কাজটা পিছিয়ে গেছে। দীর্ঘ সময় লেগেছে। এটা আমাদের অনেক প্রতীক্ষিত একটা সময়। আমরা আশা করছি আমাদের ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এখনো পর্যন্ত ১৫৩টি হলে মুক্তি পেয়েছে। সারা দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে দেখবে, মুজিবকে দেখবে, আমাদের ইতিহাসকে দেখবে, আমাদের সংগ্রাম দেখবে এবং আমাদের বঙ্গবন্ধুর ট্র্যাজেডিটা দেখবে। সবকিছু মিলিয়ে ভালোই লাগছে।

 

নানামাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এই চরিত্রটি করা কতখানি চ্যালেঞ্জিং ছিল?

একটা অভিনেতাকে তো নানাভাবে নিজেকে ভাঙতে হয়। তবে এই চরিত্রটা করা আমার জন্য একটু ডিফিকাল্টই ছিল। কারণ, এটা বায়োপিক তো। বায়োপিকে অভিনয় করা খুবই কঠিন। ওই মানুষটা হতে হয়। ওই মানুষটা হওয়া, একেবারে হয়ে যাওয়া খুবই কঠিন কাজ। তারপরও আমরা নানাভাবে চেষ্টা করি। সেই মানুষটাকে বোঝার চেষ্টা করি। এবং সেই মানুষটা যে ইমেজ মানে ধরুন আমি যে চরিত্রটা করেছি একজন ব্রিটেয়ার। একজন ব্রিটেয়ার কি করতে পারে? কীভাবে চলে, কীভাবে তাকায়, কতটা খায়, কতটা খায় না, কতটা ঘুমায়, কতটা ঘুমায় না-এভাবেই আমি চরিত্রটাকে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি। ভাবার চেষ্টা করেছি।

 

অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে কিছু বলবেন?

আমি খন্দকার মোশতাকের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঘৃণ্য চরিত্র। আমি নিজেও এই চরিত্রটিকে ঘৃণা করি। তিনি মুজিব হত্যার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার অনেক ঘটনা রয়েছে। সেই ঘটনাগুলো আমি আমার চরিত্রটির মধ্য দিয়ে সিনেমায় তুলে ধরার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। তবে এখানে একটা লিমিটেশনের জায়গা হলো, এই বায়োপিকের সময়কাল কিন্তু ৭৫ সাল পর্যন্ত। বঙ্গবন্ধুর সপরিবারের নিহত হওয়ার সময় পর্যন্ত। আমরা তো আসলে তার আগে খন্দকার মোশতাককে চিনি না। সে তো তখন বঙ্গবন্ধুর কাছের একজন মানুষ। আমরা তো চেনা শুরু করেছি ৭৫-এর পর থেকে। বঙ্গবন্ধু সপরিবারের নিহত হওয়ার পর থেকে। তারপর আর ছবির অংশ নাই। যদি তারপরের অংশ থাকত তাহলে খন্দকার মোশতাককে আরও বেশি চিনতে পারতাম।

 

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আপনার কথা হয়েছে?

আমাদের শিল্পীদের সবার সঙ্গেই তিনি কথা বলেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, ‘আপা আমি এ সিনেমায় খারাপ মানুষের চরিত্রে অভিনয় করেছি।’ এ কথা শুনে তিনি বলেন, ‘এটা তো তোমার সিনেমায় চরিত্র। তুমি তো আর খারাপ মানুষ না।’

 

ছবিটার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মূল কারণ কী?

এটা আমার ক্যারিয়ার গ্রাফের চাইতে আমি চিন্তা করেছি এই ছবির সঙ্গে যুক্ত থাকার। যুক্ত থাকার চেষ্টা করেছি কারণ এটা ইতিহাসের একটা অংশ। আর শ্যাম বেনেগাল এমন একটা চলচ্চিত্রকার যিনি ভারতের অনেক বড় বড় অভিনেতাকে তাঁর ছবিতে অভিনয় করিয়েছেন। যাঁরা আমাদের আইকন। আমি যদি দুই-একজনের নাম বলি নাসিরুদ্দিন শাহ, স্মিতা পাতিল, শাবানা আজমী, ওম পুরি। এই মহৎ অভিনেতাদের কিন্তু পর্দায় হাজির করিয়েছিলেন শ্যাম বেনেগাল। এই মানুষটির বয়স এখন ৯০ বছর। তিনি সামনে আর কাজ করবেন কি না জানি না, কিন্তু তাঁর সঙ্গে কাজ করার একটা সৌভাগ্য তো আমার হয়েছে এই ছবিতে কাজের বদৌলতে।

সর্বশেষ খবর