শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আলাপন

শিল্পচর্চা ছাড়া অন্য কোনো চর্চা করিনি

শিল্পচর্চা ছাড়া অন্য কোনো চর্চা করিনি

বালিকা, ভালোবাসার মিছিলে এসো, ভোট ফর ঠোঁট, ভাইয়া, চলো পালাই, কিংবা কপি পেস্টের মতো অনেক জনপ্রিয় গানের শিল্পী প্রীতম আহমেদ। তিনি একাধারে একজন গীতিকার, সুরকার, অভিনেতা ও সংগীত শিক্ষক। বর্তমানে তিনি ইংল্যান্ডে বসবাস করছেন এবং ব্রিটিশ-হলিউড চলচ্চিত্রে নিয়মিত কাজ করছেন। তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক বিষয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

স্বল্প সময়ের জন্য বাংলাদেশে এসেছিলেন। সময়টা কেমন কেটেছে?

ভালো। আসলে থাকি দেশের বাইরে কিন্তু মনটা তো সবসময় পড়ে থাকে দেশেই। এই দেশে জন্মেছি, এই দেশে বড় হয়েছি, কাজ করেছি এই দেশে, জীবনের বেশির ভাগ সময় শিক্ষাগ্রহণ করেছি। সো, একটা ফিলিংস সবসময় কাজ করে দেশের জন্য।

 

ই যাত্রায় সহধর্মিণী স্মৃতি ফাহমি ছাড়া একা কেন?

জীবনটা যে আরেকটু সুন্দর ও মুক্ত সেটা উপস্থাপনের জন্য... হাহাহা। বোঝার জন্য, ফিল করার জন্য। জোকস! আসলে আমি কিছু কাজে এসেছিলাম। আমি একটা বিষয় নিয়ে রিসার্চ করছি। পিএইচডি করছি সংগীত নিয়ে। সেগুলোর কিছু কাজ ছিল। কিছু আর্টিস্টের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশে। ইন্ডিয়ায়ও কিছু নিচ্ছি ইন্টারভিউ। ওয়ার্ল্ডওয়াইড কিছু আর্টিস্টের সঙ্গে কাজ করব। সে বিষয়গুলো ঠিক করছি। আর আমি যত বছর কাজ করলাম মানে ২৪ বছর ধরে আমি মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি। আমি ২৫ বছরে পড়ব নেক্সট নভেম্বরে। তো সেটা উদযাপনে একটা প্ল্যান করছি।

 

পরিকল্পনাটা কী?

কিছু কনসার্ট করার প্ল্যান আছে। ২৫ বছর সেলিব্রেট করব একটু বড় পরিসরে। কিছু মানুষের অবদান আছে আমার এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারের পেছনে। আপনার মতো অনেক সাংবাদিক বন্ধু আছে। অনেক শিল্পী ও মিউজিশিয়ান বন্ধু আছে, যাঁরা আমাকে গত ২৫টা বছর পরিবারের মতো আগলে রেখেছে। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যই একটা গেট-টুগেদারের মতো করব। আর এই গেট-টুগেদারে আমি কিছু গান ও অনুষ্ঠানের ঘোষণা করব। এ বিষয়গুলো সেলিব্রেট করতেই মূলত এবারের বাংলাদেশ ভ্রমণটা।

 

বাংলাদেশে কতদিন থাকা হলো?

দুই-তিন দিন ছিলাম। এখন ইন্ডিয়ায় রয়েছি। এখান থেকে বাংলাদেশে ফিরব কিছুদিন পরে। তারপর থাকব প্রায় এক সপ্তাহের মতো।

 

প্রীতমকে অনেক বিশেষণে বিশেষিত করা যায়...

প্রথমত. আমি একজন শিল্পী। আমার জীবনে আমি শিল্পচর্চা ছাড়া অন্য কোনো চর্চা করিনি। আমি শিক্ষাগ্রহণ করেছি শিল্পে। আমার প্রথম শিক্ষাগ্রহণ আর্ট-কালচারে শুরু হয় গানের পাশাপাশি কিন্তু থিয়েটারে। আমি কুশীলবের সদস্য ছিলাম। সেখানে আমি প্রচুর পরিমাণ অ্যাক্টিং প্রাকটিস, কর্মশালা থেকে শুরু করে অনেক কিছু করেছি। আমি অনেক বড় বড় অ্যাক্টরের কাছ থেকে শিখেছি। মঞ্চের লাইট-মিউজিক করেছি। সেই এক্সপেরিয়েন্সগুলো তো আমি কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। ফাইনালি আমার পরিচিতিটা হয় মিউজিশিয়ান হিসেবে।

 

শ্রোতাপ্রিয় গানগুলো নতুন করে আনার উদ্যোগের অগ্রগতি কতখানি?

রেকর্ডিং প্রায় শেষ। আমি যে সব গান আগে অ্যারেঞ্জ করেছি, সেগুলোর জ্ঞান ছিল সীমিত। এখন বাড়তি কিছু নলেজ যোগ হয়েছে। এ দুটো মিক্সড করে গানগুলো ইম্প্রোভাইজ করার চেষ্টা করেছি।

 

বিদেশ-বিভূঁইয়ে প্রীতম আহমেদের পথচলাটা কেমন ছিল?

২০১৬ সালে আমি যাই। প্রথম তিন বছর শুধু আমাকে জানতে হয়েছে যে, ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রি বা হলিউড অ্যাফিলেটেড ইন্ডাস্ট্রি কোন কোন ধরনের মানুষদের তাদের ইউনিটে কাজ করতে দেয়। এখান থেকে অনেকে তো অনেক কিছুই ভাবি। বাংলাদেশ থেকে গিয়ে কেউ প্রফেশন চেঞ্জ না করে অনেক কিছুই করে, কিন্তু এখানে এসে কিছুই বলে না। এমন কিছু মানুষ আছে না! এদের সংখ্যাই কিন্তু বেশি। কিন্তু আমাকে জানতে হয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে নাকি তারকাখ্যাতি থাকতে হবে, নাকি ১০ ফুট হাইট থাকতে হবে। কোন যোগ্যতা থাকলে তারা তাদের ফিল্ম, মিউজিক বা স্টুডিওগুলোতে কাজ দেবে। সেটা জানতেই আমার সময় লেগেছে দুই-তিন বছর। বিকজ অব, ইংল্যান্ডে গিয়ে আমি এমন কোনো বাঙালিকে পাইনি, যিনি সেখানকার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অ্যাক্টর, প্রোডিউসার বা মিউজিশিয়ান। এমনকি এমন কোনো বাঙালিকে আজ পর্যন্ত দেখিনি যার গান সনি মিউজিক থেকে বের হয়েছে। বা ওয়ার্নার ব্রাদারস থেকে তার ফিল্ম রিলিজ হয়েছে। সো, আমাকে এ বিষয়ে কেউ হেল্প করেনি। যাকেই বলতাম সেই বলত এই পথে যেও না, এই পথ কঠিন। এই পরিশ্রম না করে একটা রেস্টুরেন্ট দাও, ভালো লাভ হবে। সো, আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। আমার যা উপার্জন বা অর্জন, যেটুকু কাজ করতে পারছি বা সুযোগ পেয়েছি সেটা আমার স্টাডিং ইউনিভার্সিটি, টিচার ও অ্যাফিলেটেড এজেন্সিদের কাছ থেকে।

 

বালিকাদের এখন কী কী পরামর্শ দেন?

আপনাদের মতো যারা নাকি মিষ্টভাষী তাদের কাছ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেই (মৃদু হাসি), সাবধানে থাকার।

 

সর্বশেষ খবর