দুই বাংলার তারকা চঞ্চল চৌধুরীর ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’। এদিকে এ অভিনেতা সেরা চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
অভিনন্দন! শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে কেমন লাগছে?
ধন্যবাদ। আমি খুবই খুশি হয়েছি। যে কোনো রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বা সম্মাননা পেলে অবশ্যই আনন্দ লাগে। আর ভালো কাজের জন্য পুরস্কার- এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। একটি কাজ করলে কেউ স্বীকৃতি দেবে আবার কেউ দেবে না। তারপরও কাজ করে যেতে হবে। এর আগেও দুবার এ পুরস্কার পেয়েছি। তারপরও বলব, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তি সত্যিই ভালো লাগার ব্যাপার, আনন্দের কথা।
‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’-এর সঙ্গে সম্পৃক্ততা...
সবচেয়ে ভালো লাগা যেটা তাহলো এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পেরেছি। ইতিহাসের একটা অংশ হতে চেয়েছিলাম, হতে পারলাম। কোন চরিত্রে অভিনয় করেছি সেটি বড় কথা নয়। বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা। তাঁকে নিয়ে এত বড় বিশাল কাজ আগে কখনো হয়নি। সেই কাজের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা, এটা আমি মনে করি আমার জন্য একটা বড় পাওয়া। ভালো লাগা তো অবশ্যাই।
সিনেমাটি বঙ্গবন্ধুর জীবনের সঠিক ইতিহাস জানাতে কতখানি ভূমিকা রাখতে পারবে?
অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। কারণ আমরা ইতিহাস বিস্মৃত একটি জাতি। আমরা সঠিক ইতিহাস মনে রাখিনি। ইতিহাস বিকৃত হয়েছে বহুবার। সেই জায়গা থেকে আমি মনে করি, শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার মাধ্যমে পুরো জাতি বা নতুন প্রজন্ম একটি সত্য ইতিহাস জানতে পারবে।
মনপুরার সেই সোনাই চরিত্রের পর আয়না, মিসির আলী, চান মাঝিরূপে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। এরপর তো মৃণাল সেনে একাকার চঞ্চল...
আসলে যখন যে চরিত্রে অভিনয় করি সে চরিত্রের সঙ্গে ব্যাপারটা এরকম নয় যে, শুধু ক্যামেরা রোল দিল, অ্যাকশন বলল আর সঙ্গে সঙ্গে অ্যাক্টিং শুরু হয়ে গেল। ওইভাবে আসলে চরিত্র হয়ে ওঠা যায় না। সে চরিত্রটাকে নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়। নিজের মধ্যে ধারণ করতে হয়। শুধু মৃণাল সেন নয়, এর আগেও আমি যে চরিত্রগুলো করেছি সবগুলোর কথা বলব না। স্পেশাল যে চরিত্রগুলো আছে বা যে কাজগুলো দর্শকনন্দিত বা দর্শক পছন্দ করেছে, ওই চরিত্রগুলোর সঙ্গে আসলে অনেক দিনের বসবাস। এ চরিত্রগুলো হয়ে ওঠার জন্য একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে যেতে হয়। রিহার্সেল করতে হয়। চরিত্রগুলোকে প্রথমে নিজে বিশ্বাস করা, তারপর বিশ্বাসের জায়গা থেকে নিজেকে ভুলে ওই চরিত্র হয়ে ওঠা। এটা একটা অভিনেতার অভিনয় প্রক্রিয়া বা প্রস্তুতি। যেটা সে নিজের মতো করে নেয়। এটা একেক অভিনেতা একেকভাবে নেয়, আমি একভাবে নিই।
‘পদাতিক’ সিনেমাটি মুক্তির জন্য কি প্রস্তুত?
মৃণাল সেনকে নিয়ে বায়োপিক ‘পদাতিক’ আগামী বছর রিলিজ পাবে। এর মধ্যে গতকাল সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে লন্ডনে এসেছে। কারণ প্রথমবারের মতো লন্ডনে পদাতিকের একটি প্রদর্শনী হবে। তবে চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে কোন বায়োপিকে অভিনয় করা। কারণ আমি ওই মানুষটি নই, তারপরও দর্শক আমাকে যখন সিনেমার পর্দায় দেখছেন তখন হান্ডেড পার্সেন্ট তাঁর সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করছে। সেই মেলানো তো কখনোই মিলবে না। সেই জায়গা বা সেই চ্যালেঞ্জ থেকে কাজ করতে যায়, এটা তাঁর জন্য একটা বাড়তি চাপ। যেটা হয়তো শুভর ক্ষেত্রেও হয়েছে। শুভ বা আমি অথবা আমরা বা আমাদের দেশের অভিনেতা তো দূরের কথা, পৃথিবীতে এমন কোনো অভিনেতা নেই যে কি না পরিপূর্ণ। তারপরও আমরা চেষ্টা করি।
অন্যান্য কাজ নিয়ে জানতে চাই।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘মনোগামী’র পর আরেকটি ওয়েব সিরিজ করছি। আর আগামী বছর তো ছবি রিলিজ হবে, নতুন প্রজেক্ট নিয়ে কিছু কথাবার্তা চলছে।
নতুন কোনো গান আসছে?
গান নিয়ে আমার প্ল্যান থাকে না। কারণ আমি তো সিঙ্গার নই।