শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আলাপন

অভিনয় করার মতো যথেষ্ট মঞ্চ নেই

অভিনয় করার মতো যথেষ্ট মঞ্চ নেই

মঞ্চনাটক আন্দোলনের পথিকৃৎ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের এই অভিনেতার মহান মুক্তিযুদ্ধে ছিল অসামান্য ভূমিকা। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

 

এ দেশে মঞ্চনাটকের পরিস্থিতি কেমন?

আমাদের অনেক নাটকের দল রয়েছে। নতুন কিছু দল খুব ভালো প্রযোজনাও করছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে আমাদের অভিনয় করার মতো যথেষ্ট মঞ্চ নেই। আবার পাশাপাশি এটাও সত্যি যে, অনেক দল আছে যাদের প্রযোজনা মানসম্পন্ন নয়। সুতরাং সংখ্যার দিক নয়, আমি মনে করি গুণগত মানটাও আমাদের দেখা প্রয়োজন।

 

আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের মঞ্চনাটকের গ্রহণযোগ্যতা কতখানি রয়েছে?

আমরা যে নাট্যচর্চা করি, এটি একটা স্বীকৃতি বলে মনে করি। আমরা বিশ্বের কয়েকটি জায়গায় বাংলাদেশের নাটক নিয়ে যেতে পেরেছি। আমাদের ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন কর্মশালায় বিদেশে যায়। বিদেশ থেকে আমরা বাংলাদেশে অনেক নাট্যোৎসব ও সেমিনার করেছি। আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্র থেকে আমরা অনেক প্রকাশনা করেছি। সে সব কারণে বাংলাদেশ আইটিআই মহলে একটি মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত।

 

দীর্ঘদিন ধরে অভিনয়ে নেই। কারণ কি?

সাংগঠনিক দিকে মনোযোগ দেওয়ার ফলে অভিনয়ের ক্ষেত্রে একটা ছেদ পড়েছে। তবে আমি আমার দল ‘থিয়েটার’-এর কিছু প্রযোজনায় বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছি।

 

একসময় সংবাদ পাঠে আপনাকে দেখা যেত...

আসলে একটা বয়সের পর আর প্রয়োজন মনে করিনি। আর বাংলাদেশ টেলিভিশনের সংবাদের বিষয়বস্তু আমার পছন্দ নয়। অনেক কিছুই অর্থহীন মনে হয়। বিটিভিতে যেভাবে খবর প্রচার হয় তার একেবারে ঘোরতর বিরোধী আমি। যদি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেখি তবে দেখবেন বিটিভির খবর পরিবেশনটা ঠিক নয়।

 

একসময় মঞ্চে বা টেলিভিশনে অনেকেই দৃশ্য, আলো, স্ক্রিপ্ট, অভিনয়, নির্দেশনা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান রাখতেন। এখন সে রকম জানা লোক নেই, এর কারণ কী?

এমন কয়েকজন আছেন মঞ্চের ক্ষেত্রে। কিন্তু টেলিভিশনের ক্ষেত্রে সেটা কমে গেছে। টেলিভিশন নাটকের মান পড়ে গেছে অনেক চ্যানেলের কারণে। সবার নাটকের দরকার, যার কারণে মান থাকছে না।

 

মঞ্চনাটকের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে রাষ্ট্রীয় কোনো উদ্যোগ প্রয়োজন?

সরকার অবকাঠামোগুলো তৈরি করে দিক দেশব্যাপী। শুধু ঢাকায় করলে হবে না। সারা দেশে নাট্য ও সংস্কৃতিকর্মীরা যাতে সহজে বিভিন্ন মঞ্চে অভিনয় করতে পারেন, শিল্প-সংস্কৃতির কাজ করতে পারেন, তার অবকাঠামোগুলো তৈরি করে দিলেই যথেষ্ট সহায়তা হবে বলে আমি মনে করি।

 

আবদুল্লাহ আল মামুন থিয়েটার স্কুল নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

থিয়েটার স্কুল চালানোর প্রথম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে, আমাদের নিজস্ব কোনো জায়গা নেই। যদি সবার সহযোগিতায় একটা জমি বরাদ্দ পাই, তাহলে একটা স্কুল ভবন তৈরি করতে চাই; যাতে স্টুডিও থিয়েটারও থাকবে।

 

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তো আপনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাই।

মে মাসে কলকাতা যাই। ইচ্ছা ছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাজ করা। অনেক চেষ্টার পর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কয়েকটি অনুষ্ঠানে যুক্ত হই। তবে নিজের নামে নয়; অন্য নামে পড়ার সুযোগ পাই।

 

সে সময় তো বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা-বিবৃতির একটি ইংরেজি সংকলন ও সম্পাদনা করতেন...

হ্যাঁ, দিল্লি থেকে বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা-বিবৃতির একটি ইংরেজি সংকলন সম্পাদনা করে প্রকাশ করি। ওই সময় কলকাতার বাংলাদেশ মিশনে অনেক পুরনো কিছু পত্রিকা ছিল। একসময় মনে হলো, বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা-বিবৃতি নিয়ে কাজ করলে তো মন্দ হয় না।

সর্বশেষ খবর