বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নাটক-অভিনয়ে পেশাদারিত্বের সংকট

নাটক-অভিনয়ে পেশাদারিত্বের সংকট

দেশীয় চ্যানেলগুলো নির্মাতাদের দিয়ে কম বাজেটে নাটক বানাতে বাধ্য করছেন; ফলে শিল্পীও থাকছেন কম। নেই মান নিয়ন্ত্রণ। অপেশাদারি মনোভাবের কারণে কাজ খারাপ হচ্ছে। যথেষ্ট বাজেট না থাকায় মানহীন চিত্রনাট্য দিয়ে নাটক বানানো হচ্ছে। তাই নির্মিত ৮০ শতাংশ নাটক হারাচ্ছে গ্রহণযোগ্যতা। অনেকেই এ পেশা থেকে সরেও যাচ্ছেন। দর্শক সময় কাটাচ্ছেন ভারতীয় চ্যানেলগুলো দেখে। নাটকে নানা সংকট ও উত্তরণ নিয়ে লিখেছেন- পান্থ আফজাল

 

মামুনুর রশীদ

আমাদের এই সংকট তো আজকের নয়, দীর্ঘদিনের। টিভি নাটকে পেশাদারিত্ব মানে আমি বুঝি, অভিনয়ে গুণগত মানের উৎকর্ষ সাধন। যথাসময়ে ঠিকঠাকমতো কাজ করা, সময় মেনে শুটিংয়ে আসা, কথা দিয়ে কথা ঠিক রাখা আর পরিশেষে কাজের পরিধি, ক্ষেত্র ও দক্ষতা অনুযায়ী সম্মানী পাওয়া- আমার কাছে এগুলোই হলো টিভি নাটকে পেশাদারিত্ব। যা আমাদের এই ইন্ডাস্ট্রিতে অনুপস্থিত। এসব ঠিক করতে পারলে এই মাধ্যম আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।

 

আহসান হাবীব নাসিম

অনেক সমস্যাই তো রয়েছে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে কিছু আবার হয়নি। আরও কিছু সমস্যা তো রয়েই গেছে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই, ন্যূনতম সম্মানী নির্ধারণ হয়নি, বিজ্ঞাপন প্রচারে ভারসাম্যহীনতা, মান নিয়ন্ত্রণে চ্যানেলের উদাসীনতা, নাটকের মূল্য কমে যাওয়া, চরিত্র অভিনেতাদের হারিয়ে যাওয়া, নির্মাণে নিম্নমুখী প্রতিযোগিতা, ভুয়া টিআরপি সিস্টেম তো আছেই। পে-চ্যানেল নেই এ দেশে; থাকা উচিত বলে মনে করি।

 

এজাজ মুন্না

টিভি নাটকে পেশাদারিত্ব যদি না থাকে তাহলে এই পেশা কেন, কোনো পেশাই আর টিকে থাকবে না! পেশাদারিত্ব ছাড়া টিভি সংগঠনগুলোকেও শক্তিশালী করা যাবে না। আর টিভি নাটককে শিল্প ঘোষণা করতে হবে। আমাদের প্রধান দুটি সমস্যা রয়েছে- সৃজনশীল সমস্যা আর নৈতিক সমস্যা। আর কি লিখব, কি লিখব না, তা বোঝা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। পাণ্ডুলিপি ছাড়া নাটক করাটা বর্জন করা দরকার। এটা দরকারি। এখনকার সময় পাণ্ডুলিপি সংকট বড় বিষয়।

 

আফরোজা বানু

যখনই নাটকের শুটিংয়ে ডাকবে, তখনই হাজির হওয়া উচিত নয়। কাজের একটি নির্দিষ্ট সময় থাকতে হবে। সাপ্তাহিক ছুটি থাকতে হবে। পরিবারকে সময় না দিলে পরিবার টেকানো সম্ভব নয়।

 

আজাদ আবুল কালাম

এতগুলো টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, অথচ এগুলোতে কী চলবে আর কী চলবে না, সে বিষয়ে কোনো নীতিমালা নেই। এর দায় কর্তৃপক্ষের। সবাইকে কেন টেলিভিশন চ্যানেল খোলার অনুমতি দিতে হবে? অন্যদিকে আমরা অভিনয়শিল্পীরা নিজেকে দক্ষ করে তোলার বদলে একে অন্যকে দোষারোপ করছি। মন্দের ভালো খুঁজতে খুঁজতে আমরা মন্দের ভিতরে ডুবে গেছি।

 

মোশাররফ করিম

অনেক কাজ করলেও আমি আসলে তৃপ্ত নই। অনেক টাকা রোজগার করি, কিন্তু তা একটা ভালো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে করতে চাই। নাটকের পেছনে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের যথাযথ সম্মানী দিতে হবে। আর এ জন্য নাটকের বাজেট বাড়াতে হবে।

 

চঞ্চল চৌধুরী

চ্যানেল বা এজেন্সির লেজুড়বৃত্তি না করার মনোভাব থাকতে হবে। নিজেদের শিরদাঁড়া টানটান করে কাজ করে যেতে হবে।

সর্বশেষ খবর