শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আলাপন

সবচেয়ে বেশি ভালোবাসার জায়গা অভিনয়

সবচেয়ে বেশি ভালোবাসার জায়গা অভিনয়

আজ সন্ধ্যা ৭টায় মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে থিয়েটারের সাম্প্রতিক প্রযোজনা ‘লাভ লেটারস’। আমেরিকার নাট্যকার এ আর গার্নির নাটক থেকে আবদুস সেলিমের রূপান্তরিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন অভিনেত্রী-নির্দেশক ত্রপা মজুমদার। তিনি সম্প্রতি আগন্তুক রেপারটরির হয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন ‘এক গুচ্ছ গল্প’ নাটকে ত্রয় নির্দেশকের একজন হয়ে। তাঁর সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

রামেন্দু মজুমদার-ফেরদৌসী মজুমদারকে কেন্দ্র করে নাটক লাভ লেটারস নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে চাই...

২০১৭ সালে প্রথম লাভ লেটারস-এর বাংলা রূপান্তর থিয়েটার নাট্যদলের হাতে তুলে দেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম। আলী যাকের এবং ফেরদৌসী মজুমদার দুজনেই একে অপরের অত্যন্ত প্রিয় সহশিল্পী। প্রাথমিকভাবে এ দুজনকে আরেকবার একসঙ্গে মঞ্চে আনার অভিপ্রায় থেকেই লাভ লেটারস মঞ্চায়ন ভাবনার সূত্রপাত। বারবার উদ্যোগ নিয়েও যখন অসুস্থতার কারণে মহড়ায় অংশ নিতে পারছিলেন না আলী যাকের তখন তিনি নিজেই রামেন্দু মজুমদারকে বলেছিলেন, ‘আপনারা শুরু করুন, আমি যোগ দিচ্ছি’। আমরা বিশ্বাস করি, আজও তিনি প্রেরণা হয়ে যুক্ত আছেন আমাদের এ প্রযোজনার সঙ্গে।

 

থিয়েটারের সাম্প্রতিক এ প্রযোজনার যে হাউসফুল দর্শক এবং ব্যবসায়িক সফলতা তাকে একজন নাট্যকর্মীর দৃষ্টিতে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

দর্শক সংকটের এ সময়ে দাঁড়িয়ে একই নাটকে বারবার মিলনায়তনপূর্ণ দর্শক পাওয়া নিঃসন্দেহে আমাদের সবার জন্য ভীষণই আনন্দের এবং অনুপ্রেরণার এক বিষয়। এর অন্যতম আকর্ষণ বোধকরি ফেরদৌসী মজুমদার এবং রামেন্দু মজুমদার। প্রবীণ-নবীন, মঞ্চ নাটকের নিয়মিত বা অনিয়মিত দর্শক, নাট্যকর্মী- সবারই একটা বাড়তি আগ্রহ আছে এ দুজন নাটকের মানুষের ব্যাপারে।

 

ফেরদৌসী মজুমদার প্রমাণিত অভিনয় শিল্পী কিন্তু এ নাটকের বড় প্রাপ্তি রামেন্দু মজুমদারের অভিনয়ে বিস্ময়কর উত্থান। এটা কি নির্দেশক সত্তায় কন্যা হিসেবে কোনো পক্ষপাত আছে কি না ?

ফেরদৌসী মজুমদারের মতো রামেন্দু মজুমদার অভিনয়ে ততটা মনোযোগী কখনোই ছিলেন না যতটা সাংগঠনিক কর্মকান্ডে তাঁর সম্পৃক্ততা। লাভ লেটারস-এ আমি নির্দেশকের দায়িত্ব পালন করেছি, কন্যার দায়িত্ব নয়! দুজন অভিনয় শিল্পীর কাছ থেকে আমার চাহিদাটুকু আদায় করে নিতে চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব! বাকি কৃতিত্ব অভিনয়শিল্পীদ্বয়ের নিজেদের।

 

তাহ্নীনা ইসলামের ছয়টি খন্ডগল্প নিয়ে অখন্ড নাটক এক গুচ্ছ গল্প-এর সঙ্গে যুক্ত কীভাবে এবং কেন?

বাংলাদেশের বিভিন্ন নাট্যদলের নাট্যকর্মীদের সম্মিলিত প্রয়াস আগন্তুক রেপার্টরি। শুরু থেকেই আগন্তুকের লক্ষ্য ছিল গল্প ও অভিনয়নির্ভর নাটক করা। তারই ধারাবাহিকতায় ‘এক গুচ্ছ গল্প’ মঞ্চে এনেছে আগন্তুক। মৌলিক বাংলা নাটকের আকালের সময়ে যখন তাহ্নীনা ইসলামের মতো একজন নবীন নাট্যকার নাটক রচনায় উৎসাহী হন, আর আগন্তুক সেটি প্রযোজনা করতে উদ্যোগী হয়, তখন সেই কাজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখতে পারাটা আমার জন্য আনন্দের।

 

ছয়টি গল্পের তিন নির্দেশকের একজন আপনি। স্ক্রিপ্টিং অংশ নির্বাচন থেকে প্রডাকশনের পথপরিক্রমা নিয়ে বলুন...

আজাদ আবুল কালাম, পান্থ শাহরিয়ার এবং আমি ‘এক গুচ্ছ গল্প’-এর দুটি করে গল্প নির্দেশনা দিয়েছি। আজাদ আবুল কালাম ও পান্থ শাহরিয়ার দুজনই অনেক গুণী এবং অভিজ্ঞ নির্দেশক। তাঁদের পাশাপাশি কাজ করাটা আমার জন্য শিক্ষণীয় ছিল। স্ক্রিপ্ট বাছাই সবাই মিলে আলোচনা করেই হয়েছে। শুধু আমরা চেয়েছি নির্দেশকরা কেউ নিজের নাটকে অভিনয় করবেন না।

 

এক গুচ্ছ গল্প বর্তমান প্রাসঙ্গিকতাকে আপনি কীভাবে দেখেন?

‘এক গুচ্ছ গল্প’ একদমই এ সময়ের ছয়টি গল্প, ছয়টি মুহূর্ত। এ সমসাময়িকতা দর্শকের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক। প্রতিটি দর্শক নিজেদের জীবনের, পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে গল্পগুলোকে মেলাতে পারেন, আনন্দ পান।

 

নির্দেশনা নাকি অভিনয়ে, কোনটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ বেশি?

আমার প্রথম ও প্রধান পরিচয় আমি একজন অভিনেতা। দলের প্রয়োজনে আমাকে নির্দেশনা দিতে হয়, কিন্তু আমার সবচেয়ে বেশি ভালোবাসার জায়গা অভিনয়!

সর্বশেষ খবর