বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আলাপন

ব্যস্ততা আছে বলেই বেঁচে আছি

ব্যস্ততা আছে বলেই বেঁচে আছি

শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর। সংগীতশিল্পীর বাইরেও তাঁর আরেকটি পরিচয় তিনি কিংবদন্তি অভিনেতা আলমগীর ও গীতিকার খোশনূর আলমগীরের কন্যা। দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এ তারকা বছরজুড়েই একক গান ও স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাঁর সঙ্গে সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। সেরা গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তির খবরটি পাওয়ার সেই অনুভূতিটা কেমন ছিল?

চার বছর আগে এই নভেম্বর মাসের ৮ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে আমার কাছে সেই অসম্ভব আনন্দের ফোনকলটি এসেছিল। সব ছাড়িয়ে কেন যেন দুই/তিন দিন ধরে ফোন, ফেসবুকজুড়ে আমাকে শুভেচ্ছা জানানোর ঢল ছিল। পুরস্কার প্রাপ্তির দিনও একই চিত্র ছিল। সেই স্মৃতিটা অমলিন। আসলে দিন শেষে মানুষের ভালোবাসার চেয়ে বড় কিছু আর হয় না।

 

মিস এভারগ্রিন প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন...

মিস এভারগ্রিন প্রতিযোগীদের গ্রুমিং করেছিলাম। শুক্রবার ফিনালে হয়ে গেল। মিস এভারগ্রিন প্রতিযোগিতার একজন বিচারক হতে পেরে গর্বিত, কারণ এবারই প্রথম কোনো ট্রান্সজেন্ডার নারী সেকেন্ড রানার আপ বিজয়ী হয়েছে।

 

কারার ঐ লৌহ কপাট এর সুর বিকৃতি...

সুরটা ভালোই লাগেনি। লিরিকে নাম আছে কাজী নজরুল ইসলাম। এ আর রহমান তো সুরও শুনে থাকবেন। এগুলো হচ্ছে অবজ্ঞা। এরকম নিম্নমানের মিউজিক উনার থেকে আশা করা যায় না। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

 

ইন্ডাস্ট্রি নায়ক আলমগীরের মূল্যায়ন করতে পারেনি বলে মনে করেন?

অভিনেতা আলমগীরের মূল্যায়ন করা যায় না। তবে মেয়ে হিসেবে আমি বলতে চাই, আব্বু সবদিক থেকেই অলরাউন্ডার। তিনি একজন অসাধারণ ও চমৎকার বাবা। তবে আব্বু অনেক প্রফেশনাল। শর্টকাট রাস্তায় তাঁকে কখনো চলতে দেখিনি। আব্বু আমাকে আমার মতো করে জীবনের পথে লড়াই করতে বলেছেন। তিনি স্পষ্টবাদী মানুষ। আমাকে সোজাসুজি বলে দিয়েছিলেন, তোমার পথে তুমি নিজের সাহায্যে চলবে। এ জন্য কোথাও কোনো সুপারিশ করতে পারব না। ৫০ বছর পার করেছেন। চাই আব্বু নিয়মিত স্ক্রিনে থাকুক। একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে ব্যস্ত থাকলেও যেন নিয়মিত কিছু চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করেন।

 

বছরের শুরু থেকেই আপনি দেশ-বিদেশে প্রচুর স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন...

ব্যস্ত থাকা আর কি! নিজেকে ব্যস্ত রাখার ব্যাপার থাকে। ব্যস্ততা আছে বলেই এখনো বেঁচে আছি। যদিও অনেক কাজ করা হয়ে ওঠে না। তবে হ্যাঁ, দেশ ও দেশের বাইরে স্টেজ শো করা হয়েছে পুরোদমে।

 

গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে নিয়ে স্মৃতিচারণা...

গাজী আঙ্কেলের সঙ্গে অনেক কাজ করেছি। তিনি আমার জন্য গান লিখেছেন; গান দিয়েও গেছেন। তাঁর সঙ্গে সম্পর্কটা পারিবারিক। আমাকে অনেক আদর করতেন। তাঁকে নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে। উনার লেখা অন্য একজন শিল্পীর গাওয়া একটি গান আমার খুবই পছন্দ হয়েছিল। মেল ভার্সন ছিল। আমি এরপর গানটি গাওয়ার জন্য শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নেই। এরপর গাজী আঙ্কেলের সঙ্গে দেখা করি। খাওয়া-দাওয়া পর্বের পর যখন আঙ্কেলকে আমার ইচ্ছার কথা বলি, তখন তিনি বলেন, ‘তোমার পারমিশন কেন লাগবে? তুমি গাও’। গাজী আঙ্কেল এমনই অসাধারণ ছিলেন! তাঁর হঠাৎ চলে যাওয়া আমাদের ও সংগীতাঙ্গনের জন্য বিশাল এক শূন্যতা। অনেক ক্ষতি। ভীষণ দুঃখ পেয়েছি।

 

ইদানীং প্লেব্যাকে কম দেখা যাচ্ছে কেন?

নতুন সিনেমা হচ্ছে, অনেক গান হচ্ছে। তবে লিয়াজোঁ ম্যানটেইন করে কখনো গান গাইতে চাই না। আমার সঙ্গে সেটা যায় না। আমার গান গাওয়ার জায়গার অভাব তো নেই! নতুনরা ভালো গায়। কিন্তু নতুন মিউজিক ডিরেক্টররা বোঝে না কাকে দিয়ে করালে গানটি ভালো হতে পারত। তবে কেউ ভালো গানের জন্য নক দিলে আমি সর্বদা তৈরি।

 

গানের বর্তমান অবস্থা...

আমি আশাবাদী মানুষ। ইতিবাচক থাকতে ও রাখতে পছন্দ করি। অ্যালবাম বা ক্যাসেটের সেই সময় এখন নেই। পরিবর্তন এসেছে গানের প্ল্যাটফরমে। এ চেঞ্জটাকে গ্রহণ করতে হবে। হা-হুতাশ করা যাবে না। সবকিছু মানিয়ে নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর