বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আলাপন

আমি লেখক নই, অভিনেত্রী

শোবিজ প্রতিবেদক

আমি লেখক নই, অভিনেত্রী

কিংবদন্তি অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার। অভিনয় জগতে ছয় দশক পার করেছেন। অর্জনের ঝুলিতে জমা স্বাধীনতা পদক, বাংলা একাডেমিসহ নানা সম্মাননা। ২৪ নভেম্বর ত্রপা মজুমদারের নির্দেশনায় ‘মুক্তি’ নাটকে অভিনয় করবেন তিনি। সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথোপকথন-

 

শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমিতে মুক্তি নাটক মঞ্চস্থ হবে। এ নাটকটি নিয়ে কিছু জানতে চাই।

মুক্তি নাটকটা এক নিঃসঙ্গ মায়ের গল্প। প্রতিষ্ঠিত সন্তানদের কর্মমুখর জীবনের স্বার্থে তেপান্তরিত হওয়ার গল্প। প্রচলিত রীতি ভেঙে বাঁচতে চাওয়া মেয়ের গল্প। যেভাবে তরুণ প্রজন্ম নিজেদের বাঁচার পথ নিজেরাই করে নিতে চাইছে তাদের গল্প। এই বাঁচার পথ খোঁজা এবং খোঁজার মধ্যে অস্তিত্ব ও অস্তিত্বহীনতার আমেরিকার আবার বাংলার গল্পের নাটক মুক্তি। এই মুক্তি প্রহসনের আবার এই মুক্তি মনুষ্যত্বের জাগরণের।

 

একজন অভিনয়শিল্পীর দৃষ্টিকোণ থেকে এ নাটকটি নির্মাণ নিয়ে বলুন।

মিজারুল যে কীভাবে মানুষের নিঃসঙ্গকে এত চমৎকারভাবে কাহিনি বিন্যাস এবং সংলাপে ধরলে বিষয়টা আমার অবাক লাগে। আর ত্রপার নির্দেশনার একটা বিষয় আমাকে অবাক করে তা হলো চরিত্র নির্বাচন। যেভাবে মা ও তার তিন কন্যার চরিত্রে নির্বাচন করল, বিষয়টা যথাযথ। আবদুল্লাহ আল মামুন যে চোখ দিয়ে আমার অমতে আমাকে দিয়ে কোকিলারা চরিত্রে নারীর ক্ষমতায়নের আর গল্প বলে গেল ঠিক তেমনিভাবে ত্রপা আমাদের দিয়ে সম্পর্কের বন্ধন ছিন্ন ঠেকাতে রিলেশন বিল্ডআপ গল্প বলে গেল।

 

নির্দেশক ত্রপা মজুমদার কতখানি নির্ভরতার?

মা হয়ে মেয়ে ত্রপাকে নিয়ে বেশি কিছু বলব না। তবে আমার হাঁটুজনিত অসুস্থতায় এবং আমাকে সারিয়ে তুলতে ওর বাবার অস্থিরতার সেই টালমাটাল সময়ে ত্রপা বারামখানা নির্মাণের মধ্য দিয়ে থিয়েটার দলটাকে গোছায় যেটি আমার ভালো লেগেছিল। ত্রপা ওর বাবার দিক দিয়ে সাংগঠনিক ক্ষমতা, আমার দিক দিয়ে অভিনয় এবং দলের প্রয়োজনে নির্দেশনা শক্তি আয়ত্ত করে চলেছে বলেই আমার বিশ্বাস। ওর নির্দেশিত মুক্তি একাত্মতা, বারামখানা ঐতিহ্যের পুনঃরুদ্ধার আর লাভ লেটারসে মানুষের অসহায়ত্ব যেভাবে সপ্তরঙের বর্ণিল ব্যঞ্জনায় ফুটিয়ে তুলেছে তাতে ওর শক্তির ওপর আমাদের নির্ভরতা বাড়ছে।

 

আপনার রচিত গ্রন্থ বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছে। এ নিয়ে আপনার অনুভূতি কেমন?

আমি সার্বক্ষণিক অভিনেতা কিন্তু লেখক নেই। বিগত সময়ে প্রতিষ্ঠিত এবং নতুন অনেকেই চেয়েছে আমি যেন আমার পরিবার-অভিনয় জীবন লিপিবদ্ধ করি। পুরস্কার লাভ করায় আনন্দ হয়েছে কিন্তু বলব, এই গ্রন্থদ্বয় আমার পরিবার-মঞ্চ-টেলিভিশন-চলচ্চিত্রের অভিনয় জীবনটা বাঁধা রইল। কোনো ভালো চলচ্চিত্র তো সে অর্থে করতে পারলাম না। এই লেখার মধ্যেই আমার বাঁচা, সবাইকে নিয়ে বাঁচা, সবার মাঝে বাঁচা।

 

থিয়েটার-এর আগামী পরিকল্পনা কী?

২৭ নভেম্বর শিল্পকলার এক্সপেরিমেন্টাল হলে থিয়েটার প্রদান করবে মুনীর চৌধুরী ও জাকারিয়া সম্মাননা পদক। দুজন নাট্যকর্মীর মাঝে এ পদক প্রদান করা হবে। মুনীর ভাই আমাকে মঞ্চে এনেছিলেন এটা প্রাপ্তি, জাকারিয়া ভাই চলে গেলেন এটা সহশিল্পীর জায়গা থেকে বড় শূন্যতা। পদক প্রদান থিয়েটারচর্চার প্রবহমানতার নান্দনিক ও উৎসাহের স্বীকৃতি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর