সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
‘আসামী হাজির’

ওয়াসিম মারা যাননি

আলাউদ্দীন মাজিদ

ওয়াসিম মারা যাননি

ওয়েস্টার্ন ঘরানা বিশ্বের চলচ্চিত্রে অতিচর্চিত একটি বিষয়। ৪৫ বছর আগে ‘আসামী হাজির’ নির্মাণ করে দেওয়ান নজরুল দেখিয়ে দিয়েছিলেন ওয়েস্টার্ন ছবিতে আমরাও কোনো অংশে কম নই। ১৯৭৭ সালে ওয়াসিম, সোহেল রানা, জসিম ও ববিতা অভিনীত ‘আসামী হাজির’ দিয়েই প্রথম পরিচালনায় আসেন তিনি। ছবিটি মুক্তি দেন ১৯৭৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর। ছবিটির অভাবনীয় সাফল্যে দেওয়ান নজরুল ঢালিউডে দেখিয়ে দিয়েছিলেন ওয়েস্টার্ন প্যাটার্নের চলচ্চিত্র কীভাবে নির্মাণ করা যায়। আসামী হাজির ছবির নির্মাণ নেপথ্যের কিছু মজার গল্প এখানে তুলে ধরা হলো-

 

গল্প-১

কমলাপুর রেলস্টেশনে সেট ফেলা হয়েছে। সারি সারি মালগাড়ি রাখা যেখান থেকে ওয়াগনগুলো লুট করতে আসবেন ডাকাত জগনু ও তার দল অর্থাৎ ওয়াসিম ও তাঁর দল। এ ডাকাতি ঠেকাতে পুলিশ অফিসার সোহেল রানা ও তাঁর দল প্রস্তুত। দৃশ্যটির জন্য রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে ২০টি ঘোড়া ভাড়া আনা হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক করে ডাকাত ওয়াসিম বাহিনীর সঙ্গে পুলিশ অফিসার সোহেল রানার বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধের দৃশ্যটি ধারণ করা শুরু হলো গভীর রাতে। শুটিং করতে করতে সকাল হয়ে যায়। সারা রাত শুটিং করতে করতে সবাই ক্লান্ত। সূর্য ওঠার পর দেখা যায় সবার গায়ে মানুষের পায়খানা লাগানো। শুটিংয়ে সবাই এত আন্তরিক ছিল যে কেউ গায়ের গন্ধও টের পায়নি।

 

গল্প-২

সাভারের টাটি বাড়ি এলাকা দিয়ে ডাকাত জগনু (ওয়াসিম) ও তাঁর দলবল নিয়ে যাচ্ছে। পথে বাধার সৃষ্টি করবে ডাকাত ধর্মা (জসিম) ও তাঁর দলবল এবং দুই গ্রুপে সংঘর্ষ বাধবে। এ দৃশ্যটি ধারণের আগে পথে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য ওয়াসিম যে পথ দিয়ে ঘোড়া নিয়ে আসবে সেই পথেই কিছু ছররা বোমা মাটিতে বালু দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। ঘোড়া ছুটে আসতেই বোমার সুতোয় আগুন দেওয়া হয়। ওয়াসিমের ঘোড়াটি বোমার ওপর যেতে না যেতেই বোমাগুলো একে একে ফুটতে শুরু করে। ঘোড়া ভয় পেয়ে পাগলের মতো লাফালাফি শুরু করে। ওয়াসিম ঘোড়া থেকে পড়ে যান এবং ঘোড়া ওয়াসিমকে লাথি দিয়ে আরও ১৫ ফুট দূরে ছিটকে ফেলে। ওয়াসিম অজ্ঞান হয়ে যান। সবার ধারণা ওয়াসিম হয়তো মারা গেছেন। দ্রুত সাভার ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেখা গেল তিনি মারা যাননি।  তৎকালীন সাভার ক্যান্টনমেন্টের মেজর জেনারেল সামাদ সাহেবের আন্তরিকতায় ওয়াসিম সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন।

সর্বশেষ খবর