বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইলিয়াস কাঞ্চনের সেরা তিন নায়িকা

আলাউদ্দীন মাজিদ

ইলিয়াস কাঞ্চনের সেরা তিন নায়িকা

প্রকৃত নাম ইদ্রিস আলী। চলচ্চিত্রে এসে হয়ে গেলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। এ ফিল্মি নামটি প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সুভাষ দত্তের দেওয়া। ১৯৭৭ সালে সুভাষ দত্ত নির্মাণ করার উদ্যোগ নিলেন ‘বসুন্ধরা’ নামের একটি চলচ্চিত্র। খ্যাতিমান সাহিত্যিক আলাউদ্দিন আল আজাদের পাঠকপ্রিয় উপন্যাস ‘তেইশ নাম্বার তৈলচিত্র’ অবলম্বনে গড়ে উঠেছে ‘বসুন্ধরা’ ছবির গল্প। এ গল্পের নায়ক একজন চিত্রশিল্পী। ছবির এ চরিত্রের জন্য নির্মাতা একজন নতুন মুখ খুঁজে হয়রান। একদিন এক কলেজের মঞ্চনাটকে ইদ্রিস আলীর জীবন্ত অভিনয় দেখে তাঁকে চিত্রশিল্পী চরিত্রের জন্য মনে ধরে নির্মাতার। বাবরি চুলের ইদ্রিস আলীকে চিত্রশিল্পী চরিত্রের জন্য পারফেক্ট মনে হলো সুভাষ দত্তের। তাঁকে নিয়ে শুরু হলো ‘বসুন্ধরা’ ছবির কাজ। নায়িকা কিন্তু অনেক সিনিয়র। ববিতা। গল্পের সঙ্গে কাঞ্চন-ববিতা জুটি সুন্দরভাবে মানিয়ে গেল। কাঞ্চনের প্রথম ছবি ‘বসুন্ধরা’ দর্শকনজর কাড়ে এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। এরপর ইলিয়াস কাঞ্চন জনপ্রিয়তার পথ ধরে প্রচুর ছবিতে অভিনয় করেন। তাঁর নায়িকা হন অনেকে। কিন্তু চলচ্চিত্রকার ও দর্শকদের চোখে কাঞ্চনের সঙ্গে তিন নায়িকাই নাকি বেশি মানানসই ছিলেন। কারা এ তিন নায়িকা। সেই চিত্রই এখানে তুলে ধরা হলো-

 

কাঞ্চন-অঞ্জু

অঞ্জু ঘোষ

ঢাকাই চলচ্চিত্রে এ জুটিকে অন্তত একটি কারণে হলেও দর্শক মনে রাখবে, কারণ বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল সিনেমা ‘বেদের মেয়ে জোছনা’র নায়ক-নায়িকা হচ্ছেন এ ইলিয়াস কাঞ্চন-অঞ্জু জুটি। আজও ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ ছবিটি কিংবা এর গান ‘বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে’ শুনলে তাৎক্ষণিকভাবে চোখের সামনে ভেসে ওঠে ‘কাঞ্চন-অঞ্জু’ জুটির চেহারা। এ ছবির আকাশছোঁয়া সাফল্যে পরবর্তীতে এ জুটিকে নিয়ে নির্মাতারা একই ধারার বেশকটি ছবি নির্মাণ করেন। একসময় অঞ্জু ঘোষ ঢাকাই চলচ্চিত্র থেকে বিদায় নিলে এ জনপ্রিয় জুটির কাজ থেমে যায়। এ জুটির উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে দায়ী কে, বেদের মেয়ে জোছনা, মহানবন্ধু, আয়না বিবির পালা, শঙ্খমালা অন্যতম।

 

দিতি

দিতি

এ জুটিকে বড় পর্দায় প্রথম একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল ভাই-বোনের চরিত্রে। আশির দশকের সুপারহিট সিনেমা ‘ভাই-বন্ধু’তে তাঁদের এ চরিত্রে দেখা গিয়েছিল। এরপরই জুটি হয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে একসঙ্গে হাত ধরেন। একে একে বহু সিনেমায় জুটি হিসেবে কাজ করেন এবং দর্শক প্রশংসা কুড়ান। এরমধ্যে ‘মহানবন্ধু’ সিনেমায় ইলিয়াস কাঞ্চনের বন্ধুর স্ত্রীর চরিত্রে দিতিকে দেখা গেলেও প্রধান চরিত্রে জুটিবদ্ধ হন তাঁরা। এ জুটির সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল সিনেমা ‘চরম আঘাত’। রুপালি পর্দায় জুটি বাঁধতে গিয়েই বাস্তব জীবনেও তাঁরা জুটি বাঁধেন। যদিও সেই জীবন জুটি বেশিদিন টিকেনি। এরপর এ জুটিকে আর ঢাকাই সিনেমায় দেখা যায়নি। কাঞ্চন-দিতি জুটির উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে- মহানবন্ধু, চাকর, অজানা শত্রু, সৎ মানুষ, আসামী গ্রেফতার, প্রেমের প্রতিদান, বেনাম বাদশা, দুই ভাই, চরম আঘাত, শাস্তির বদলে শাস্তি, আমার দেশ আমার প্রেম প্রভৃতি।

 

চম্পা

চম্পা

প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সুচন্দা প্রযোজিত প্রথম ছবি এবং শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘তিনকন্যা’তে প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন ইলিয়াস কাঞ্চন-চম্পা জুটি। এ ছবিতে চম্পার বড় পর্দায় অভিষেক হয় এবং চম্পার চলচ্চিত্রজীবনের প্রথম নায়ক ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। প্রথম ছবিতেই এ জুটি আলোচিত হওয়ায় পরিচালকরা তাঁদের নিয়ে বেশকটি সিনেমা নির্মাণ করেন। এগুলো জনপ্রিয়তা পেলে এ জুটির চাহিদা বেড়ে যায়। এ জুটির সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘ভেজাচোখ’, যা দর্শকদের হৃদয়ে অন্যতম রোমান্টিক সিনেমা হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। তাঁদের একসঙ্গে অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘জটিল প্রেম’। কাঞ্চন-চম্পা জুটির উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে- তিনকন্যা, সহযাত্রী, ভেজা চোখ, অচেনা, বন্ধন, ত্যাগ, শাস্তি, বিদ্রোহী পদ্মা, জটিল প্রেম প্রভৃতি।

সর্বশেষ খবর