রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আলাপন

সব ধরনের চরিত্রে সুঅভিনয় করতে চাই

সব ধরনের চরিত্রে সুঅভিনয় করতে চাই

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী রুনা খান। এ ভার্সেটাইল অভিনেত্রী প্রতিনিয়ত নিজেকে ভাঙছেন, নতুন করে সবার মাঝে উপস্থাপন করছেন। এ সুদর্শনার সঙ্গে সাম্প্রতিক কাজ ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

মহান বিজয় দিবস আপনার কাছে কতখানি তাৎপর্যপূর্ণ?

বিজয় দিবস প্রতিটি বাঙালির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আর গুরুত্বপূর্ণ দিন। আমার মতো যাদের স্বাধীনতা-পরবর্তী জন্ম তাদের কাছে বিজয় দিবস হলো চেতনা ও বিশ্বাসের বড় একটা বিষয়। আমার বাবা কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর কাছ থেকেই যখন সেই সময়ের কথা শুনি, তখন অনেক গর্ব অনুভব করি।

 

মুক্তির অপেক্ষায় কোন কাজগুলো রয়েছে?

কাজল আরেফিন অমির ‘অসময়’, শাহরিয়ার নাজিম জয়ের ‘শোধ’ এবং মাসুদ পথিকের চলচ্চিত্র ‘বক’। কৌশিক শংকর দাসের ‘দাফন’-এর শুটিং করেছি।

 

দাফনর গল্প ও আপনার চরিত্রটি কেমন ধরনের? এটিতে কীভাবে যুক্ত হলেন?

কৌশিক শংকর দাসের একজন পরিচিত সংগ্রামী নারীর জীবনে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা অবলম্বনে ‘দাফন’ নির্মিত। সেই নারী হলো কুলসুম, যেটি আমি চিত্রায়ণ করেছি। আসলে ২১ সালে কৌশিক দা আমার সঙ্গে গল্পটি যখন শেয়ার করেন, তখন গল্প ও চরিত্র-দুটোই ভীষণ পছন্দ হয়। এরপর ২২ সালের শেষদিকে ৮০% শুটিং সম্পন্ন হয়। সম্প্রতি আবারও প্যাচওয়ার্ক শুটে গেলাম কুষ্টিয়ায়। এখন কিছু কাজ ও পোস্ট প্রোডাকশন বাকি রয়েছে।

 

দেশের কোন বিষয়টি পরিবর্তন জরুরি?

মানসিকতার এবং পারিবারিক সাপোর্ট। কেন বলছি, আমার জন্ম মির্জাপুরে। আমার দাদির বাড়ি-নানীর বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। ৩ বছর বয়স থেকে বাবার চাকরির সুবাদে টাঙ্গাইলের সখীপুরে থাকা। আমি এসএসসি পাশ করছি টাঙ্গাইলের সখিপুর থেকে। এরপর তো ঢাকায় পড়েছি। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, একসঙ্গে পড়া ২০০ জনের মধ্যে ৯৮ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি মাত্র ৫০ জনের মতো! কেন এত কম? কারণ, ১১-১২ বছরের মধ্যে প্রতিটি মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়, যেটা বাল্যবিয়ে। সেটা কিন্তু ২৫ বছর আগের কথা। এবার যখন মাসুদ পথিকের ‘বক’ শুটিং করতে নরসিংদীর লালপুর চরে গেলাম, দেখলাম সেই একই ভয়াবহ অবস্থা। অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে মেয়েদের। নারী শিক্ষাটা সরকার অবৈতনিক করা সত্ত্বেও। আমি তো বলব দেশ এই পর্যায়ে ২৫ বছর আরও পিছিয়েছে। তাই সরকারি উদ্যোগ যতই থাকুক না কেন, পারিবারিক সাপোর্ট, সঙ্গে মানসিকতার উন্নয়ন খুবই জরুরি। দেশে আজো ৫১% মেয়ের ১৮ বছর বয়সের আগেই বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে তারা পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। এ কথাগুলো আমি সম্প্রতি হারনেট ফাউন্ডেশন ও হারনেট টিভির পরিচালনায় বাংলাদেশের ইইউ দূতাবাসের সহযোগিতায় ফরাসি দূতাবাসে ট্রান্সফরমেটিভ কথোপকথন ইভেন্টে উপস্থাপন করেছি। আমি কিন্তু বিএসআরএমের ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। কিছু দিন আগে তাদের হয়ে বাল্যবিয়ে রোধে একটি ওভিসি করেছিলাম। সেই ভিডিওটির পোস্টের মন্তব্যের ঘরে ৩০০০ কমেন্টের মধ্যে প্রায় ২০০০ কমেন্ট বাল্যবিয়ের পক্ষে কথা বলেছে। আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছে। এ থেকে বোঝা যায়, আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন এখনো হয়নি। মতের মিল না হলেই আক্রমণ করছে সোশ্যাল সাইটে। কেন? মতের মিল না হলে আলোচনা চলতে পারে, তাই না? যেমন আমার ওজন কমানো নিয়েও অনেকে অনেক কথা বলেছে। নিউজও হয়েছে অনেক। ৯০% মানুষ বিশ্বাস করে না আমি ন্যাচারালি ওজন কমিয়েছি। কিন্তু আমি তো এক বছরে স্বাভাবিক উপায়ে এটি করেছি। তারা মনে করে, আমি সার্জারি বা অন্য কোনো উপায়ে ওজন কমিয়েছি। আমাকে নিয়ে অনেক মিথ্যা গল্প জুড়ে দিচ্ছে। তারা মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। মানুষের এই অসম্মান ও অবিশ্বাস করার প্রবণতা ব্যথিত করে।

 

অন্য প্রসঙ্গ, কেমন গল্পে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?

কেন্দ্রীয় চরিত্র করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। ‘সাপলুডু’ সিনেমায় অতিথি চরিত্র সালমা বেগম বা হালদার পার্শ্ব চরিত্র জুই কিংবা সালমা ভাবির মতো চরিত্রে রুনা খান কতটা সময়জুড়ে স্ক্রিনে থাকবে সেটিও ভাবনার বিষয় নয়। আমি সব ধরনের চরিত্রে সুঅভিনয় করতে চাই। যে চরিত্রটি করছি দর্শক বিশ্বাস করে ব্যক্তি জীবনেও সে এমনই।

 

নাটকে খুব কম কাজ করার কারণ কী?

কোনো কারণ নেই। পছন্দসই কিছু আসছে না। গল্প, চরিত্র ও পরিচালক ভালো মনে হলে অবশ্যই কাজ করি, সামনেও করব।

সর্বশেষ খবর