সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডালাসে প্রতিবছর ‘ববিতা ডে’

ববিতাকে আবারও আন্তর্জাতিক সম্মাননা

আলাউদ্দীন মাজিদ

ডালাসে প্রতিবছর ‘ববিতা ডে’

অভিনেত্রী ববিতার হাতে সম্মাননা তুলে দিচ্ছেন ডালাসের মেয়র রিচার্ডসন

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী ববিতা আবারও অনন্য আন্তর্জাতিক সম্মাননায় ভূষিত হলেন। এখন থেকে প্রতি বছর ডালাসে ‘ববিতা ডে’ উদযাপিত হবে। এমন তথ্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানালেন খোদ এ বরেণ্য অভিনেত্রী। গতকাল তিনি জানান, চলতি বছরের ৪ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ডালাসে অনুষ্ঠিত ‘ডালাস -বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব’-এ আমাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় এবং ডালাসের অঞ্জিলিক ফিল্ম সেন্টারে ‘ববিতা চলচ্চিত্র উৎসব’-এর আয়োজন করা হয়। এ উৎসবটি আমার অভিনীত এবং প্রয়াত আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘নয়নমনি’ ছবিটি দিয়ে উদ্বোধন করা হয়। এরপর আমার অভিনীত কলকাতার খ্যাতিমান নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’সহ আমার আরও কয়েকটি ছবি প্রদর্শন করা হয়। পরদিন ৫ আগস্ট ডালাসে ‘ববিতা ডে’ পালন করা হয়। এবার এলো আরও একটি নতুন সুখবর। এখন থেকে প্রতি বছর ৫ আগস্ট ডালাসে ‘ববিতা ডে’ উদযাপন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ডালাস নগরীর মেয়র রিচার্ডসন। আবারও এমন একটি অনন্য আন্তর্জাতিক সম্মাননায় ভূষিত হওয়ায় আবেগাপ্লুত ববিতা বলেন, এ সম্মান আমার একার নয়, এ অর্জন আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের মানুষের। আমি আমার ফিল্ম ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছি আমার দেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়ন ও বিদেশে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে মহিমান্বিত আসনে উপবিষ্ট করার। আজ জীবনের এ প্রান্তে এসে মনে হচ্ছে আমি দেশের জন্য ভালো কিছু করতে কিছুটা হলেও সফল হয়েছি। আমি শুধু চলচ্চিত্র নয়, সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেও দেশ ও জাতির উন্নয়নে আমৃত্যু চেষ্টা করে যাব। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামাজিক সংগঠন ডিসিআইআই-এর বাংলাদেশের শুভেচ্ছাদূত নিযুক্ত হয়ে ২০১২ সাল থেকে ববিতা দেশ ও বিশ্বের সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও নারীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। অভিনেত্রী এবং প্রযোজক ববিতা ১৯৭৩ সালে ২৩তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে গোল্ডেন বীয়ার জয়ী নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রশংসিত হন। ববিতা ৩৫০টির বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ১৯৭৫ সালে  জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রবর্তনের পর টানা তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। এ ছাড়া ১৯৮৫ সালে আরেকবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী, ১৯৯৬ সালে শ্রেষ্ঠ প্রযোজক, ২০০২ ও ২০১১ সালে পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় সম্মান লাভ করেন। ২০১৬ সালে তাঁকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। জহির রায়হানের ‘সংসার’ চলচ্চিত্রেসহ অভিনেত্রী হিসেবে ববিতার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৮ সালে। চলচ্চিত্র জগতে তাঁর প্রাথমিক নাম ছিল ‘সুবর্ণা’। জহির রায়হানের ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়েই তাঁর নাম ‘ববিতা’ হয়ে যায়। প্রযোজক ক্যামেরাম্যান আফজাল চৌধুরী ও তার স্ত্রী ববিতা নাম রাখার প্রস্তাব করেন। ১৯৬৯ সালে ‘শেষ পর্যন্ত’ চলচ্চিত্রে ববিতা অভিনয় করেন প্রথম নায়িকা চরিত্রে। ববিতার প্রকৃত নাম ফরিদা আক্তার পপি।

সর্বশেষ খবর