মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আলাপন

লক্ষ্য স্থির করে কোনো কাজ করি না

লক্ষ্য স্থির করে কোনো কাজ করি না

শীর্ষ অভিনেতা মোশাররফ করিম। দীর্ঘদিন ধরেই টিভিনাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে কাজ করছেন সদর্পে। একসময় সরব ছিলেন মঞ্চে। দুই বাংলায় বেশকিছু চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি। সম্প্রতি ব্রাত্য বসুর ‘হুব্বা’ সিনেমার ট্রেলারে গ্যাংস্টাররূপে একরাশ চমক নিয়ে আবির্ভূত হয়েছেন। এই অভিনেতার সঙ্গে সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

 

‘হুব্বা’র ট্রেলার প্রকাশের পর আপনাকে নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়ে গেছে। দুই বাংলাতে এমন প্রশংসা কেমন লাগছে?

অবশ্যই ভালো লাগছে। কারণ, প্রশংসা শুনতে কার না ভালো লাগে! তবে আমি সর্বদা আনন্দ পাই কাজটি ভালো হলে যদি প্রশংসা পাই। সেই হিসেবে এটির গল্পটা যেমন একদম আলাদা, চরিত্রটাও তেমন। চরিত্রটার মধ্যে আরোপিত কিছু নেই। চরিত্রটি যদিও ভালো চরিত্র না ...হা হা হা (গ্যাংস্টার)। তবে অভিনয়ের জন্য চরিত্রটি অসাধারণ বলা যায়। অভিনয় করে খুশি আমি।

 

কখনো উকিল, কখনো ডিটেকটিভ আবার কখনো মাফিয়া-আসল মোশাররফ করিম কোনটা?

ব্যক্তিগতভাবে আমার পরিচয়, আমি মোশাররফ করিম। আর মোশাররফ করিম পেশা বা চরিত্রের খাতিরে উকিল, ডিটেকটিভ, মাফিয়া বা অন্য কেউ। এগুলো ব্যক্তি মোশাররফ করিমের বহুজীবন।

 

মোবারকনামার মোবারক...

গোলাম সোহরাব দোদুলের নির্মিত এই সিরিজটি সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফরম হইচইতে অবমুক্ত হয়েছে। মোবারক একসময়ের অত্যন্ত সফল আইনজীবী যিনি অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা তাকে কাঁপিয়ে দেয়। ঘটনাটি তাকে এমনভাবে প্রভাবিত করে যে এ ধরনের মামলায় তার পরাজয় নিশ্চিত জেনেও তিনি আইনজীবী হয়ে আবারও আদালতে ফিরে আসেন।

 

আর গোয়েন্দা কর্মকর্তা?

কিছুদিন আগেই কাজটি করেছি। ‘ডিটেকটিভ সহজ আকন্দ’। নির্মাতা সাগর জাহান। চরিত্রটি একজন প্রাইভেট গোয়েন্দা কর্মকর্তার; যিনি একসময় দেশের গোয়েন্দা বিভাগে চাকরি করতেন। কিন্তু একসময় চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। এরপর প্রাইভেট ডিটেকটিভ হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। খুব মজার ছলে চরিত্রটি এগোবে।

 

‘বৈদ্য’র অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

ভালোই বলা যায়। নেত্রকোনার বিরিসিরি দুর্গাপুরের বিভিন্ন লোকেশনে শুটিং হয়েছে। নিয়ামুল মুক্তা খুবই যত্ন নিয়ে কাজটি করছেন। পুরো ইউনিটও বেশ কষ্ট করছে।

 

‘মহানগর’, ‘দৌড়’ দিয়ে দুই বাংলায় সাড়া...

হইচই থেকে মুক্তি পাওয়া এই দুটি ওয়েব সিরিজই দুই বাংলার মানুষই পছন্দ করেছেন।  যদিও ভালো কাজে সবাই প্রশংসা করবে, এটাই স্বাভাবিক। তাই না?

 

‘বিলডাকিনী’ ও ‘গাঙকুমারী’র কবে মুক্তি পাবে?

দুটি কাজই ফজলুল কবীর তুহিনের। ভালো হয়েছে। তবে সবকিছু সম্পন্ন করে কবে মুক্তি পাবে সেটা নির্মাতাই ভালো বলতে পারবেন।

 

কোন তাগিদ থেকে অভিনয় করেন?

আমি অভিনেতা। তাই যতদিন বাঁচি অভিনয় করতে চাই। আমি কাজটা করে আনন্দ পাই। আর এই আনন্দটা সারাজীবন পেতে চাই। ভালো না লাগলে তা আমি করি না, করতে পারি না। মানুষ আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। এত ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য কি না, তা ঠিক জানি না।

 

শিল্পী হিসেবে সব কাজ করেই কি সন্তুষ্ট থাকতে পারেন?

অনেক কাজ করতে গিয়ে আমি অতৃপ্তও থাকি। সব কাজ যে আমাকে সেটিসফাইয়েড করে এমন তো না। আমি খুব টেকনিক্যাল উত্তর দিতেও রাজি নয় যে, সব সন্তান আমার কাছে সমান! সব সন্তান তার পিতা মাতার কাছেও সমান হয় না। তা সন্তানের কারণেই হয় না। একেকজনের ধরন একেক রকম। আর আমি কখনো আমার কোনো কাজ নিয়ে গলা বড় করে কিছু বলিওনি কখনো, এ ধরনের লজ্জা আমার আছে। তারপরও বেশকিছু কাজ করে আমিও সেটিসফাইয়েড।

 

গান লিখতে ও গাইতে পারেন। গান লিখছেন না কেন?

বহু বছর হলো। সেই ছোটবেলায় লিখছিলাম। তখন গানের কথাগুলো এমনিতেই মনের চিত্রপটে ধরা দিত। আহা, সেই সময়! তবে দলে থাকলে গান লেখা হতো। এখন তো হতে চায় না। এখন তো মিডিয়ায় ঢুকে ট্যাকার লাগি বন্দি হইয়া গেছি।

 

নিজের লেখা কবিতা নিয়ে বই বের করার ইচ্ছা আছে?

অনেকেই বলে কিন্তু লজ্জা লাগে। অনেক কবিতা লিখেছি এবং কিছু কবিতা পত্র-পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছে। তবে আক্ষেপ, আমার কবিতাকে অন্যসব কবিদের লেখা কবিতার মতো মূল্যায়ন করা হয়নি। ‘তারকাদের কবিতা’ নামে কেন ছাপানো হবে!

 

টিভির জন্য কি কোন নাটক লিখেছেন?

কোনো নাটক লেখাই শেষ করতে পারি নাই। লিখছি, ভালো লাগে নাই; তা আবার ছিঁড়ে ফেলে দিছি। একটি লিখছি- ‘তালাক’। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রামা ডিপার্টমেন্ট আমার লেখা তিনটি নাটক করেছে।

 

থিয়েটারে ফিরবেন কবে?

থিয়েটার হলো শিকড়, ফিরতেই হবে।

 

নির্মাণে আসার পরিকল্পনা আছে?

আমি লক্ষ্য স্থির করে কোনো কাজ করি না। লক্ষ্য স্থির করে দৌড় দেওয়া তা আমার জীবনে ঘটেনি।

সর্বশেষ খবর