এ প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জিনিয়া জাফরিন লুইপা। স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তবে এসব ব্যস্ততার পাশাপাশি নিজের চ্যানেল ও নতুন মৌলিক গান প্রকাশেও মনোযোগী হয়েছেন। সম্প্র্রতি তার গাওয়া ম্যাশআপ ‘জামাল কুদু মিক্স’ শ্রোতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এ গান ও সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
‘জামাল’ আর ‘কমলা’কে এক সুতোয় গেঁথে প্রশংসিত...
আমি মূলত স্টেজ শোয়ের মানুষ। শোয়ের ফাঁকে রেকর্ডিং করি। ফলে প্রতিদিনই মঞ্চের সামনে থাকা শ্রোতাদের কথা আমাকে ভাবতে হয়। তাদের নানামাত্রিক গানের আবদার শুনতে হয়, অনুরোধ রাখতে হয়। ইদানীং তো প্রায় প্রতিটি শোয়ে ‘জামাল কুদু’ গানটার অনুরোধ পাই। কিছুদিন আগেও পেতাম ‘নয়া দামান’ গানটি। আর ‘কমলায় নৃত্য করে’ তো আমাদের রক্তে মেশা একটা গান। তিনটি গানই ট্র্যাডিশনাল। তিনটির সুর প্রায় একই। ভাবলাম মঞ্চে যেহেতু প্রায়শই এ গানগুলো গাইতে হয়, তাহলে একটা রেকর্ডেড ভার্সন করলে ক্ষতি কি? বরং আরও অনেক মানুষ একসঙ্গে গানগুলো উপভোগ করতে পারবেন। সেই ভাবনা থেকেই হুট করে কাজটি করা। এখন স্টেজ শোতে এটি গাইতে অনুরোধ পাচ্ছি, গাইছি। আর শ্রোতাদের প্রশংসা শুনতে ভালোই লাগছে।
সামনে আরও ম্যাশআপের প্ল্যান রয়েছে?
কেবল তো একটা করলাম। সামনেও ইচ্ছা রয়েছে। সেটা অবশ্য আধুনিক গান নিয়ে, দেখা যাক। টেলিভিশনে তো সব ধরনের গানই করি। তবে স্টেজে সিঙ্গেল কম করা হয়, ম্যাশআপই বেশি। তবে রেকর্ডেড ভার্সন থাকলে সেটা বেটার।
স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ততা কেমন?
আলহামদুলিল্লাহ, ভালোই। এইতো রাজশাহী পুলিশ লাইনে একটি শো করলাম। ২৫ তারিখে বিজিবি ঢাকায়, ২৬-২৭ তারিখে ঢাকার বাইরে গাজীপুরে দুটি শো রয়েছে। আসলে গত বছর স্টেজ শোর অবস্থা ভালো ছিল না, নির্বাচন ছিল। এখন ব্যস্ততা বেড়েছে শিল্পীদের।
এ বছরে কয়টি গান রিলিজ পাবে?
এ বছরে এখনো কোনো প্ল্যান হয়নি। দেখা যাক কী হয়। গত বছরও কোনো গান রিলিজ পায়নি। তার আগের বছর তিনটি গান করেছিলাম। সেগুলো বিগ বাজেটের। সবই টিএম রেকর্ডসের, তাপসদার কথা-সুর ও মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্টে।
‘লুইপা অফিশিয়াল’ নিয়ে পরিকল্পনা কী?
সেরাকণ্ঠের পর ২০১১ সালে এ চ্যানেলটি খুলেছিলাম। তখন একটি মাত্র মৌলিক গান করে প্রকাশ করি। সেটা অবশ্য নিজ উদ্যোগে। অপু মাহফুজের সুর-কথায় ‘অনল’ গানটি প্রথম করি। যখন দেখলাম রিয়েলিটি শো থেকে বের হওয়ার পর কেউ আমাকে নিয়ে ইফোর্ট দিচ্ছে না, তখন নিজেই চ্যানেলটি স্টাট করি। এরপর একটি গান করেছিলাম সিয়ামকে নিয়ে ‘জেন্টেলম্যান’, তবে সেটা অন্য চ্যানেলে প্রকাশ হয়। এরপর রোশানকে নিয়ে ‘রঙিলা হাওয়া’ নিজের চ্যানেলে রিলিজ দিলাম। এই মিজানের লেখা আর শওকত আলী ইমনের সুর-সংগীতে গানটি করি। এ পর্যন্ত ২০টির মতো গান করে চ্যানেলে দিয়েছি। এর মধ্যে কিছু কাভার আর কিছু মৌলিক গান। রুনা লায়লা ম্যামের ‘যখন থামবে কোলাহল’ গানটি কভার করে চ্যানেলে দিলে অনেক সাড়া পাই। এরপর ম্যামের নিজের সুর করা একটি গান ‘এই দেখা শেষ দেখা’ করি, তবে সেটি ধ্রুব মিউজিক স্টেশনে রিলিজ পায়। এখন নিজের চ্যানেলের জন্য নিয়মিত গান করছি, হাতেও তৈরি রয়েছে কিছু। সামনে একে একে আপ দেব।
নিজের একটি দল রয়েছে...
হ্যাঁ, ‘লুইপা এন্ড উইংস’। অন্তর (কিবোর্ড), আলামিন (গিটার), সজীব (বেজগিটার), এমডি আলমগীর হোসেন (অক্টোপ্যাড) আর পিকে (পারকেসন) এই পাঁচজন নিয়ে দলটি। সবাই মিলে স্টেজ শো করছি নিয়মিত।
প্লেব্যাক করেছিলেন আগেও। এ বছর কোন ছবিতে গান করছেন?
আগে টুকটাক করেছি। রবিউল ইসলাম জীবনের লেখা আর ইমন চৌধুরীর সুর-সংগীতে রায়হার রাফির ‘পরাণ’ ছবিতে ‘ধীরে ধীরে’ করেছিলাম। এরপর ‘প্রেম-প্রীতির বন্ধন’ ছবিতে ‘পাগল মন’ করেছি আমি আর ইমরান। এ বছর এখনো কোনো গান করার অফার নেই। আসলে প্লেব্যাকে সিন্ডিকেট হয়ে গেছে। তাই সুযোগ হয় না।
সংগীতের বর্তমান অবস্থা কী মনে হয়?
যতটুকু ভালো হতে পারত সেটা শিল্পীরাই জায়গাটা নাই করে ফেলেছে। এখন তো শিল্পীদের সম্মানটাও নেই।
সংগীত আর ব্যক্তিজীবন সমন্বয়...
সংগীত আর ব্যক্তিজীবন তো মিলেমিশে একাকার। প্রফেশনাল লাইফটা খুবই ইনজয় করছি। পেশাগত জীবন, ব্যক্তিজীবন দুদিকেই পরিপূর্ণ একজন মানুষ আমি। একজন পূর্ণাঙ্গ নারী।