রবিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

এদেশের কাজগুলো আমার খুবই প্রিয়

এদেশের কাজগুলো আমার খুবই প্রিয়

ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রিত হয়ে ‘বিজয়ার পরে’ নিয়ে প্রায় দেড় দশক পর ঢাকায় আসেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী স্বস্তিকা  মুখোপাধ্যায়। অন্যদিকে বাংলাদেশের দুটি সিনেমা কামরুল ইসলাম রিফাতের ‘ওয়ান ইলেভেন’ এবং হিমু আকরামের ‘আলতাবানু কখনো জোছনা দেখেনি’তে কাজ করার কথা রয়েছে তার। সপ্তাহখানেকের ঢাকা সফর শেষে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বস্তিকার মুখোমুখি- পান্থ আফজাল

 

এবার ঢাকায় এসে স্বস্তিকা কতটা স্বস্তিতে?

অনেকটাই। একদম! আপনারা যে ভালোবাসা দেন, এটা আমার জন্য বিশাল প্রাপ্তি। যেখানেই যাচ্ছি, এত ভালোবাসা পাচ্ছি, এত উন্মাদনা দেখছি, সত্যিই খুব ভালো লাগছে। ফেসবুকে ঢাকার দর্শকদের অনেকেই বলেছিলেন, ‘বিজয়ার পরে’ ছবিটি প্রদর্শনীর সময় যেন স্বস্তিকা বাংলাদেশি শাড়ি পরে আসে, আমি কিন্তু এসেছিলামও। কারণ, আপনারা আমাকে প্রচুর ভালোবাসেন বলে। এ বছর আমার বয়স ৪৩ পূর্ণ হলো। হিরোইনদের বয়স বাড়লে একটু ভয় লাগে। মন খারাপ লাগে এই ভেবে যে, মনে হয় মানুষের ভালোবাসা বুঝি এই একটু কমে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এসে সেই ধারণাটা আমার মন থেকে মুছে গেছে। গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশে এত এত এত ভালোবাসা পেয়েছি, মানুষ এত আদর দিয়েছেন যে নিজের দেশের মানুষের কট্ ুকথা আর খুব একটা গায়ে লাগছে না। আপনারা অনেক মনোবল বাড়িয়ে দিলেন, আর কিছু ভালো হোক না হোক, আপনাদের ভালোবাসায় আমার অনেক ভালো হবে। এবার এসে বুঝেছি বাংলাদেশের মানুষ আমাকে কলকাতার চেয়ে বেশি ভালোবাসেন। আমাকে মাথায় করে রেখেছেন। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ এবং অভিভূত। ‘লাভ ইউ বাংলাদেশ’।

‘বিজয়ার পরে’তে মৃণায়ী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। গল্প ও চরিত্র দর্শককে কতখানি রিলেট করতে পেরেছে?

‘বিজয়ার পরে’ এমন একটা ছবি যেটার সঙ্গে মা-বাবা-সন্তান সবাই রিলেট করতে পারবে। কারণ আমাদের বাবা-মারা এখন অনেক একা। এখন তো মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ফোন। সারা বছর সব বাবা-মা অপেক্ষা করে উৎসবে ছেলেমেয়েরা বাড়ি ফিরবে। তো এটা বাবা-মায়েদের অপেক্ষার গল্প, ছেলেমেয়েদের বাড়ি ফেরার গল্প এবং এত দূরে দূরে থাকার জন্য যে দূরত্ব তৈরি হয় সেটার গল্প। ছবিটির গল্প আপনার আমার জীবনের গল্প। আমার খুবই ভালো লেগেছে এত গুরুত্বপূর্ণ ছবি ঢাকায় এসে আপনাদের সঙ্গে একসাথে বসে দেখতে পেরেছি বলে।

 

ক্যারিয়ারে সাহসী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। নিজেকে উপস্থাপনা করেন, বিভিন্ন ইস্যুতে কথাও বলেন, কোনোরকম রাখঢাক না রেখে...

মেয়েদের এমনিতেই একটু সাহস বেশি। ছোট থেকে তো অনেক বিষয় নিয়ে লড়াই করতে হয়। সে যে শ্রেণি বা সমাজে বাস করি না কেন, লড়াই আমাদের সবাইকে করতে হয়। মেয়ে হয়ে জন্মেই লড়াই করতে হয়। তাই আমাদের মধ্যে সাহসটা একটু বেশিই থাকে। আর আমার বাবা-মা যেভাবে আমাকে বড় করেছেন, আমি যা শিক্ষা পেয়েছি তাদের থেকে, তাদের সাপোর্ট পেয়েছি, সে জন্য আমার মধ্যে অন্যদের থেকে একটু বেশিই সাহস।

 

বাংলাদেশে অনেকবারই এসেছেন, এবারও এলেন তবে নিজের ছবি নিয়ে। ফের কবে আসবেন?

এপ্রিলে আবার আসব। আমি একটি ছবি করছি কামরুল রিফাতের। তো, ছবিটা করতে আমি আসব এ বছরের এপ্রিল মাসে। এমন একটা কথা হয়ে আছে।

 

বাংলাদেশের সিনেমায় নিয়মিত অভিনয়ের ইচ্ছা আছে?

ভালো গল্প হলে তো নিশ্চয়ই করব। আমার যদি সেখানে কিছু করার থাকে তাহলে করব। কারণ হিরোভিত্তিক ছবি তো আমি করি না এখন আর।

 

বাংলাদেশের নাটক-সিনেমা আর ওটিটির কাজগুলো কেমন লাগে?

আমি খুবই ভালোবাসি বাংলাদেশের কনটেন্ট। এদেশের কাজগুলো আমার খুবই প্রিয়। অনেক বছর ধরে এদেশের ওটিটি প্ল্যাটফরমে আমার সাবস্ক্রিপশন আছে। যা রিলিজ হয় আমি সঙ্গে সঙ্গে দেখি।

 

এখানকার কোন অভিনয়শিল্পীর কাজ পছন্দ?

এখানকার শিল্পীদের আমি বিশাল ফ্যান। আমি তাদের সব কাজ দেখি। যে ছবিগুলো রিলিজ হয় কলকাতায় সেগুলো দেখি। এখন ওটিটি হওয়ার বদৌলতে আরও বেশি কাজ দেখা যায়। তো আমার খুবই ইচ্ছা যে বাংলাদেশে এসে কাজ করি। এখানকার শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করি। আগ্রহটা খুব বেশিই। যখন যেখানে দেখা হয় আমাদের ফিল্ম ফ্যাটারনিটির কলাকুশলীদের সঙ্গে আমি তখন খুবই নির্লজ্জের মতো বলি, প্লিজ আমার জন্য একটি ভালো স্ক্রিপ্ট লিখ। এখানে মোশাররফ করিম, আফরান নিশো, চঞ্চল চৌধুরীসহ আরও অনেকের কাজ আমি দেখি। তাদের খুবই ভক্ত আমি। বাংলাদেশের মিউজিক সিনটাও কিন্তু দুর্দান্ত। সবাই কলকাতায় কোক স্টুডিও বাংলার গানগুলো শুনি। গানবাংলার গান শুনি। মিউজিক ভিডিও দেখি। সো, আমি খুবই ওয়েট করছি এখানে কাজ করার জন্য।

 

টিএমফিল্মের কোনো কাজ করার প্ল্যান চলছে?

চুক্তি কিছুই হয়নি। তবে কথা হয়েছে কাজের। আর তাপসদার সঙ্গে আমার অনেকদিন ধরেই যোগাযোগ আছে। তো, কিছুতো একটা নিশ্চয়ই করব।

 

ইলিশ-বিরিয়ানি খাওয়া হয়েছে?

ইলিশ-চিংড়ি খেয়েছি তো! আরও অনেক সুস্বাদু খাবার খেয়েছি। এদেশে এসেই তো গানবাংলার ফারজানা মুন্নী আপার রান্না করা ইলিশ-চিংড়ি খেয়েছি, অসাধারণ ছিল! আর রাতভর আড্ডা দিয়েছি। শিল্পীদের গান শুনে তো আমি মুগ্ধ। নিজেও গান করেছি। তবে বিরিয়ানি খাওয়া হয়নি। সামনে এলে যা যা খাইনি তাই পরখ করে দেখব।

 

প্রেম ছাড়া থাকতেই পারেন না, সত্য?

জীবনে প্রেম খুব কম এসেছে। কিন্তু মানুষজন এ প্রেম নিয়ে এমনভাবে বলে যেন প্রেমে আমি সিদ্ধহস্ত, অর্ধশত প্রেম করেছি, আজব না!

সর্বশেষ খবর