জনপ্রিয় অভিনেতা ইরেশ যাকের, তারকা দম্পতি আলী যাকের-সারা যাকেরপুত্র। নাটক, ওটিটি কিংবা সিনেমা- সব মাধ্যমেই সাবলীল অভিনয়ে চরিত্রকে দুর্দান্তভাবে ফুটিয়ে তোলেন তিনি। সম্প্রতি কাজল আরেফীন অমির ‘অসময়’-এ মোখলেস চরিত্র দিয়ে দর্শকদের ভালোবাসা কেড়ে নিয়েছেন। তার অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শকরা। তার সঙ্গে সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
মিম রশিদ আর একমাত্র কন্যা মেহা রশিদ যাকেরকে নিয়ে দিনকাল কেমন যাচ্ছে?
ভালো। আমার মেয়ে আমার লাইফের সবকিছু। পরিবার তো অবশ্যই, বিশেষ করে আমার কন্যা জীবনের সবচেয়ে বড় ব্লেসিং। ওর বয়স এখন চার বছর চার মাস। আমি বলি যে, আমি কখনো হয়তো ভালো কিছু করেছিলাম বলে মেহার বাবা হতে পেরেছি। ‘এভরিডে নিউ কাইন্ড অব ব্লেসিং’। এটা বলে হয়তো বোঝানো যাবে না।
‘অসময়’-এর মোখলেস চরিত্রটি দিয়ে ফের নজর কাড়লেন...
‘অসময়’-এ নাটকীয়ভাবেই তো সবকিছু দেখানো হয়েছে। সেখানে আমি এস আই মোখলেসের চরিত্রে ও আরেকজন সাংবাদিক চরিত্রে ছিলেন জীবন। তার চরিত্রের নাম হালিম (পাটোয়ারী)। এখানে আমাদের বিভিন্ন বিষয়কে একটু বাড়িয়ে মানে বেশি করে দেখানো হয়েছে। যেমন আমাকে একটু বেশি বোকা বা সহজ-সরল দেখানো হয়েছে। আর হালিমকে একটু বেশি চালাক দেখানো হয়েছে। আমার চরিত্রটি মোটামুটি সৎ, একটু মাথা মোটা টাইপ। তবে সে সত্যের পথেই থাকে।
শহরের নতুন জুটি, ইরেশ-জীবন! দর্শকদের এ কথার সঙ্গে আপনিও একমত?
কেন নয়! এটা যে হয় না এমন নয়; আমাদের পাশের দেশেই তো হয়। আমরা তো ‘থ্রি ইডিয়েটস’ দেখেছি, ‘ধুম’, ‘দিল চাতা হে’, ‘রাং দে বাসন্তি’ দেখেছি। ছেলে-ছেলে জুটি। আসলে আমাদের জীবনে প্রেম তো কম হয়, বন্ধুত্বটাই বেশি হয়। সে হিসেবে আমরা বন্ধুত্বের গল্প তো দেখাতেই পারি এভাবে। কাজল আরেফিন অমির ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ওর সঙ্গে কিন্তু আরেকটি কাজ করেছিলাম। সেটি ৭ পর্ব। তার আগে ও ফাহমীর অ্যাসিসট্যান্ট ছিল। ওই সুবাদে ওর সঙ্গে কিছু প্রজেক্টে কাজ হয়েছিল। তাই অমিকে কিছুটা হলেও আমি জানি-বুঝি। আমি যেটা মনে করি, অমি যে গল্পটা গাঁথে সেটা কিন্তু অনেকভাবে ভাবার চেষ্টা করে। সেখানে ওর মধ্যে কোনো আলস্য থাকে না। আর জীবনের সবকিছু বন্ধুত্ব, প্রেম, শত্রুতা সবকিছুই গল্পে ঢোকানো যায়। তবে শ্রম দিতে হয়, চিন্তা করতে হয়। তাহলে অনেক কিছুই বের হয়ে আসবে। আর এ ওয়েব সিরিজটিই কিন্তু আমার প্রথম ছেলের সঙ্গে জুটি নয়। এর আগে ‘এক্স ফ্যাক্টর’-এর তিনটি পর্বে অপূর্বর সঙ্গে অর্থাৎ মাফি-মইন জুটিকে দর্শক কিন্তু খুবই পছন্দ করেছিল। সো এমন গল্প বলা উচিত।
দেয়াল টপকাতে কতবার টেক দিতে হয়েছিল?
বেশি দিতে হয়নি। তিন-চারবার টেক করতে হয়েছিল। যদিও খুবই ভয়ে ছিলাম, যদি ইনজুরি-টিনজুরি হয়ে যায়! বয়স তো অনেক হয়েছে, ৪৫ বছর। এ ছোটখাটো কাজেই মানুষের ইনজুরি হয়ে যায়। আর জীবন? সে তো কোনো লাফই দেয়নি!
আপনার অভিনয় নিয়ে বাবার দর্শন?
বাবা আসলে কোনো কিছু নিয়েই তেমন করে মতামত দিতেন না। তিনি যে কোনো কাজে সবসময় অনেক উৎসাহ দিতেন। এমন নয় যে আমি অভিনয়ে এসেছি দেখে আমাকে অনেক পুশ করবেন। আমি যেন নিজের মতো করে কাজ করতে পারি, সেই বিষয়টা বাবাও চাইতেন। আর ছেলের যে কাজগুলো দেখত সেটা তো বাবা হিসেবে পছন্দ করতই।
বাবা-ছেলের জন্মদিনও একই দিনে। শেষ জন্মদিন কেমন কাটিয়েছেন দুজনে?
শেষ জন্মদিনটা তো একটু হৃদয়বিদারকও ছিল। তখন তো জানিই বাবার চলে যাওয়ার বেশি বাকি নেই! তখন কভিড টাইম। আমি, বাবা আর আমাদের ক্লোজড ফ্যামিলি মিলেই ছোট করে জন্মদিন সেলিব্রেট করি।। ডাক্তার তো বলেই দিয়েছিলেন, ওনার আর মাস খানেক সময় আছে। তাই সেদিনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আমি আরেকবার হলেও বাবাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি রতনপুর যাব। বাবার লাইফের প্রিয় জায়গা রতনপুর। তো পরের দিন সবার অমতেই অক্টোবর মাসে শ্রিয়ার সঙ্গে বাবাকে নিয়ে যাই। এরপর ফের নভেম্বরে আমাদের বার্থ-ডেতে। কারণ জানতাম, রতনপুর না যেতে পারলে বাবার মনে অনেক আক্ষেপ থেকে যেত।