সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

শিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা কোম্পানি বোঝে না

শিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা কোম্পানি বোঝে না

শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী ক্লোজআপ তারকা পুলক অধিকারী। ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে চলচ্চিত্র-অডিওতে অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। সুফি গানের জন্যই তিনি সবার কাছে সমাদৃত। তার উঁচু স্কেলের রাগাশ্রয়ী গান শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। স্টেজ শো আর ১০০ গানের প্রজেক্ট বাস্তবায়নে ব্যস্ত সময় কাটছে তার। সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে তার কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

 

স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ততা কেমন?

চলছে ভালোই। ইলেকশনের পর থেকে ব্যস্ততা বেড়েছে স্টেজ শোর। এখন পর্যন্ত ভালো, তবে সামনে রোজা। তাই রোজার খানিক বিরতির পর আবার চলবে পুরোদমে। এখন পর্যন্ত ছয়-সাতটি শো করেছি, সামনে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আরও তিন-চারটি স্টেজ শো কনফার্ম রয়েছে। আরও কিছুর কথাবার্তা চলছে। ভালোই যাচ্ছে।

 

স্টেজ নাকি স্টুডিও, কোনটাতে শিল্পী বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে?

একজন শিল্পীর জন্য স্টেজ তো প্রাণের জায়গা। কারণ স্টেজে অডিয়েন্সের সঙ্গে যোগাযোগটা সরাসরি হয়, প্রাণের সঙ্গে প্রাণের মেলবন্ধন হয়। আর স্টুডিও তো অরিজিনাল শিল্পীর জন্য নয়। স্টুডিও হলো চালাকির জায়গা। অটো টিউনে কাজ সারা যায় সহজেই। তাই আমার কাছে ফিল্ম ও স্টেজ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের স্থান। নিজেকে প্রুফ করার স্থান এ দুই জায়গা।

 

ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে নতুন গান প্রকাশ পেয়েছে। সাড়া কেমন?

আমার ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ ‘পুলক অধিকারী’ অফিশিয়ালে আমার ও আয়েশা মৌসুমীর কণ্ঠে গাওয়া ‘আউলা ঝাউলা পোলা’ রিলিজ হয়েছে। যতটুকু সাড়া পেয়েছি অনেক খুশি। আমি সাধারণত ট্রেন্ডি সং করি না। তবে এ বছর অনেক ভেবেচিন্তেই ট্রেন্ডকে ধরার জন্য দুটো করেছি। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়া ও টিকটককে মাথায় রেখেই মূলত এ গানগুলো করা।

 

১০০ গানের প্রজেক্টের মধ্যে এ বছর কয়টি প্রকাশের পরিকল্পনা?

আমার লেখা ও সুরে ১২ মাসে ১২টি নতুন মৌলিক গান তৈরি করছি। আমার আগের অ্যালবাম ‘যাযাবর সময়’ এর নয়টি পুরান গানও রয়েছে। সব মিলিয়ে ২১টি গান আমার নিজের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ ‘পুলক অধিকারী’তে একটার পর একটা রিলিজ পাবে।

 

‘পুলক অধিকারী’ চ্যানেল করার পেছনে উদ্দেশ্য?

একজন শিল্পীর গানের জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এরপর আর্থিক দিকটা তো রয়েছেই। এটা কিন্তু সবাই বোঝে না। এত পরিশ্রম ও অর্থ খরচ করে গান করার পর অডিও কোম্পানিকে দিলে তারা আশ্বাস দিয়ে রেখে দেয়। এটা শিল্পীর জন্য কতটা সম্মানের? একজন শিল্পী কতবার নিজের টাকায় ও মেধা খরচ করে গান করে অন্যের পেছনে ধরনা দেবে? শিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা তো কোম্পানি বোঝে না; তারা বোঝে শুধুই ব্যবসা। ফলে মুখ থুবড়ে পড়ছে শিল্প ও শিল্পী। কোম্পানির এ ঠকবাজি বুঝেই এখনকার শিল্পীরা নিজেদের চ্যানেলেই নিজের সৃষ্টি অবমুক্ত করছে। লাভবানও কিন্তু হচ্ছে। সে চিন্তা থেকেই আমার এ উদ্যোগ নেওয়া। 

 

এ বছর কয়টি সুফি গান করেছেন?

আমার সবচেয়ে প্রিয় এই জনরা। গাইতে পছন্দ করি সুফি গান। এ বছর একটা করেছি। বাকি গানগুলো করেছি অবশ্য বিভিন্ন শিল্পীকে মাথায় রেখেই। এ পর্যন্ত দুই-তিনজন শিল্পীর ভয়েজ নিয়েছি। বাকিটা দেখা যাক।

 

প্লেব্যাকের কী খবর?

১৮ বছরের ক্যারিয়ারে প্রায় ২৫০টির মতো প্লেব্যাক করেছি। এর আগেও দুটি ছবিতে প্লেব্যাক করেছি। তবে আগের থেকে কমিয়ে দিয়েছি। কারণ প্লেব্যাকে সিন্ডিকেট হয়ে গেছে আর ট্রেন্ডভিত্তিক গান বেশি হচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফরম আসায়।

 

ক্লোজআপ ওয়ানের শিল্পীরা এখন কি অবস্থায় রয়েছে?

সবাই যে যার জায়গা থেকে চেষ্টা করছে। কেউ চেষ্টা করে যাচ্ছে, কেউ পারিবারিক চাপে গান থেকে দূরে, কেউ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে পারছে না, আবার কেউ চেষ্টাটা কমিয়ে দিয়েছে। তবে কেউ কিন্তু বসে নেই। আমি মনে করি, যারা শুধু গায়ক তারা পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া সামনে যেতে পারে না। কিন্তু যারা ক্রিয়েটিভ গায়ক তাদের কেউ কখনোই ঠেকিয়ে রাখতে পারে না।

সর্বশেষ খবর