মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

সেটাই করি যেটা আমার ভালো লাগে

সেটাই করি যেটা আমার ভালো লাগে

শ্রোতাপ্রিয় সংগীত তারকা জয় শাহরিয়ার। ব্যান্ড বা প্রথাগত আধুনিক গানের বাইরে সোলো রক পপ ধারায় শুরু এই পেশাদারি শিল্পীর একক ক্যারিয়ার। নিজে গান লেখা, সুর করা ও গাওয়ার পাশাপাশি তিনি উপস্থাপনাও করেন। ‘সত্যি বলছি’-খ্যাত এ গায়ক আজব রেকর্ড, আজব কারখানা, আজব প্রকাশসহ স্বপ্নবাজ ফ্যাশন হাউসের কর্ণধারও। তার সঙ্গে কথোপকথনে - পান্থ আফজাল

 

জয় শাহরিয়ারের স্টেজ শোর ব্যস্ততা কেমন?

এই তো চলছে। বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত তিনটি শো করেছি। সামনে ১৪, ২১ ও ১ তারিখে আরও তিনটি শো রয়েছে। ১ ফাল্গুন বাংলা একাডেমি আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও গান করব।

 

এ বছর কোনো একক গান আসবে?

এ মাসের শেষে একটি প্রকাশ হওয়ার কথা আমার ‘আজব রেকর্ডস’ থেকে। গানটির নাম ‘ভালো আছি’, যেটি আমার লেখা ও সুর করা। অন্যদিকে এ মাসে নচিদার একটা গান বের হয়েছে আমার সুরে। নাম ‘কেউ নেই ভালো’। সালমা সুলতানার লেখা গানটি।

 

একুশে বইমেলায় আপনার আজব প্রকাশের স্টল রয়েছে...

আমি আজব প্রকাশ শুরু করার পর থেকে যেটা চেষ্টা করেছি যেমন আমাদের দেশে যারা কিংবদন্তি শিল্পী, তাদের জীবন ধরে রাখার প্রয়াস বাংলাদেশে একেবারেই নেই। এটি সরকারি পর্যায়ে হওয়া উচিত। তবে সরকার তো একা সব করতে পারবে না, এর বাইরেও আমাদের নিজেদের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। সেই জায়গা থেকে আমি আজম খান বা আমি আইয়ুব বাচ্চুর জীবনী পড়তে পারি নাই। সঞ্জীবদা মারা গেছেন ২০০৭ সালে, এটা ২০২৪ সাল। সঞ্জীবদাকে নিয়ে আমি বই বের করলাম এ বছর। ১৭ বছর কেউ কেন করে নাই, আমি জানি না। তো সেই জায়গা থেকেই কাজগুলো করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এবার আজম খানকে নিয়ে বই করেছেন মিলু ভাই ও ফারুক ভাই, আমি বিশ্বদার বায়োগ্রাফি লিখেছি, আমরা নিলয়দার বায়োগ্রাফি করেছি, আমরা বাংলাদেশের ১৮০টা রক ব্যান্ড নিয়ে বই বের করেছি। এই ডকুমেন্টটেশনগুলো আমরা কেন করছি? কারণ এগুলো করা খুবই দরকার। যেমন আমি চাইলেই বব ডিলানের জীবনী পড়তে পারি। তাহলে কেন আমার দেশের একজন ছেলে আজম খানের জীবনী পড়তে পারবে না? আমি কিন্তু সঞ্জীবদাকে অনেক কাছ থেকে দেখেছি। আমার উচিত নতুন প্রজন্মের কাছে তাকে তুলে ধরা। সেটাই করার চেষ্টা করছি এখন। এ ছাড়াও এবার গল্প উপন্যাস, জীবনী ও কবিতার বইসহ আজব প্রকাশ থেকে প্রায় ৩০টি বই বের হয়েছে। 

 

বইমেলায় আপনার লেখা কয়টি বই পাওয়া যাবে?

আমার কবিতার বই আছে তিন-চারটা। অবশ্য এগুলো আউট অব প্রিন্ট। আমার লিরিক নিয়ে একটা বই আছে ‘সত্যি বলছি’। আমার লেখা জীবনী তিনটি ‘রূপালী গিটার’ (আইয়ুব বাচ্চু’, ‘এবং বিশ্বজিৎ’ (কুমার বিশ্বজিৎ) এবং ‘সঞ্জীবনামা’ (সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়) আজব প্রকাশে পাওয়া যাবে। এছাড়াও শিশুদের জন্য তিনটি বইও এসেছে এবার। আর আমার সংকলনে সঞ্জীবদার সব লিরিক নিয়ে বই আছে ‘তোমাকেই বলে দেব’। 

 

বাবার জন্মদিনে বাচ্চাদের নিয়ে আয়োজন করে থাকেন...

এবারও হবে। নভেম্বরে আমরা করি নাই। আশা করছি, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সামনে আমার গ্রামের বাড়িতে এই উৎসব করব। যেহেতু আমার শিকড় ওখানে। তাই বাবাকে উপলক্ষ করেই নিয়মিত করতে চেষ্টা থাকে।

 

সংগীতের সর্বক্ষেত্রে বিচরণের পাশাপাশি নিজেকে অনেক কিছুর সঙ্গে যুক্ত করেছেন। এত কিছুর সমন্বয় কীভাবে করেন?

আমি সেটাই করি যেটা আমার ভালো লাগে। আর নিজেরটা নিজে করতে পছন্দ করি। তাই অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেই করি। আসলে আমি যা করি প্রত্যেকটা একেকটার সঙ্গে লিংকআপ। আজব রেকর্ডস গান বানাই, রেকর্ড করি। আজব প্রকাশ থেকে নিজের পছন্দের মানুষকে নিয়ে লেখা প্রকাশ হয়। আজব কারখানা থেকে গান বানাই, গানের ব্যবসা, ইভেন্টসহ বিভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি কখনো লোক দেখাতে গান করি না। গান করে খাই। আগে আমি গানওয়ালা ছিলাম, ফেরিওয়ালা ছিলাম না। যখন দেখলাম শিল্পীর চেয়ে যারা অ্যারেঞ্জার তারাই বেশি লাভবান হচ্ছে তখন নিজেকে নিয়ে ভেবেছি। আমি আসলে ঠকতে ঠকতে শিখেছি। এখন জয়যাত্রার দিকে...

 

কিংবদন্তি নচিকেতা আপনার আমন্ত্রণে ঢাকায় এসেছিলেন। সামনে আরও কোনো চমক দর্শক-শ্রোতা আশা করতে পারে কি?

অবশ্যই। তবে এখনো বলতে পারছি না। এ বছরের শেষে ইচ্ছে আছে নতুন এক চমক দেওয়ার। শুধু নচিদা নয়; তার মতো আরও দু’একজন যারা আমাদের জেনারেশনকে অনেক প্রভাবিত করেছেন, একসঙ্গে তাদের আনার আমার খুবই ইচ্ছে। বলা যায়, এটা আমার স্বপ্ন। সুমন-অঞ্জন-নচিকেতাকে একসঙ্গে ঢাকার মঞ্চে আনার। একসঙ্গে তিনজনকে একই মঞ্চে শোনাতে চাই। আমি আশাবাদী মানুষ, স্বপ্ন পূরণ হবেই একদিন নিশ্চয়।

সর্বশেষ খবর