শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

আমি হতাশায় বিশ্বাস করি না

শোবিজ প্রতিবেদক

আমি হতাশায় বিশ্বাস করি না

অভিনয় জগতের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ডলি জহুর। চার যুগেরও বেশি সময় ধরে সাবলীল অভিনয়ে তিনি জয় করেছেন কয়েক প্রজন্ম।  এবার অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘একুশে পদক ২০২৪’-এ ভূষিত হয়েছেন তিনি। এ গুণী অভিনেত্রীর সঙ্গে কথোপকথন-

 

একুশে পদক প্রাপ্তিতে কেমন বোধ হচ্ছে?

আলহামদুল্লিল্লাহ! জানি না আমি এতবড় সম্মানের যোগ্য কি না। তারপরও যারা যোগ্য মনে করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তবে এসব পুরস্কারের প্রতি আমার কোনো লোভ-লালসা নেই। আমি সবসময়ই বলতাম, আমার চেয়ে আরও অনেক গুণী মানুষ আছে, তাদের আগে পাওয়া উচিত। আসলে আমি অনেক সৌভাগ্যের অধিকারী যে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। এটাই যথেষ্ট।

 

মেইনস্ট্রিম চলচ্চিত্রে আপনাকে পাওয়া যাচ্ছে না...

মেইনস্ট্রিম চলচ্চিত্রে আর কাজ করতে যাব না হয়তো। কিন্তু ওটিটি ফিল্ম যেগুলো হচ্ছে, যেগুলোতে আমি যদি আমার মনের মতো চরিত্র পাই সেগুলো করব। যদি ডিরেক্টর আমাকে চয়েজ করে নিশ্চয়ই করব।

 

পর্দায় ছিলেন সালমান শাহের মা। বাস্তবে তার সঙ্গে সম্পর্কটা কেমন ছিল?

পর্দায় যেমন আমি ওর মা ছিলাম বাস্তবেও তাই ছিল। ও আমাকে আম্মু বলে যখন ডাক দিত মনে হতো আমার ছেলেই আমাকে ডাকছে। মা-ছেলের মতোই আমাদের কথার আদান-প্রদান হতো। একবার অভিনয় করছিল আরেক সেটে। ওর মা চরিত্রটি অন্য আরেকজন করছিল। ওই সেট থেকে আমার কাছে আসার পর আমি বললাম, ‘বাহ! এবারে তোর মা তো দেখতে খুবই গ্লামারাস, সুন্দর। তোর আজকে নিশ্চয়ই খুব ভালো লাগছে কাজ করতে? তখন সালমান আমার কাঁধে হাত দিয় কানের কাছে মুখ রেখে বলল, ‘নাহ, মা মা লাগে না।’ মাঝে মাঝে খুবই কষ্ট লাগে। আমি ইমোশনাল হতে চাই না কিন্তু হয়ে যাই। এ ছেলেটা বেঁচে থাকলে হয়তো আমাকে ফিল্ম ছাড়তে হতো না।

 

এ টি এম শামসুজ্জামানের শূন্যতা...

কখনো কখনো হঠাৎ আমার মনে হয়, এ মানুষটি তো নাই! তখন কষ্ট লাগে। এ টি এম ভাই ভালো থাকতেই চলে গেছেন, এটা আলহামদুলিল্লাহ! তাকে বেশি কষ্ট পেতে হয়নি। এখন যখন কোনো চরিত্র আসে তখন মনে হয়, ‘ইস ও থাকলে হয়তো আমার সঙ্গে করত।’

 

শিল্পীর অপেশাদারিত্ব সমাধান কোন পথে?

শিল্পীরা হালকা হয়ে গেছি। নতুন যারা এসেছে তারা সাংবাদিক কেন, কাউকেই সম্মান করতে শেখেনি। সাংবাদিক সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানবোধ নেই। কিছু সাংবাদিক আছে যারা শিল্পী সম্পর্কে জেনে প্রশ্ন করে না। এমনও অনেক শিল্পী আছেন যারা তার অনুগত সাংবাদিকদের ফোন করে তাদের কাজের ফিরিস্তি দিয়ে নিউজ করতে অনুরোধ করেন। শিল্পীদেরও সচেতন হতে হবে কথায় ও কাজে। মিডিয়ার সব ব্যাপার গুবলেট হয়ে গেছে। সেই পরিবেশ নেই সাংবাদিক-শিল্পীদের মধ্যে।

 

এ বয়সে নিজেকে একা অনুভব করেন?

কখনো একা ফিল করি না। এখনো করছি না। আমি হতাশায় বিশ্বাস করি না। কারণ আমার জীবনে যখন একবার চাকচিক্য থাকে, সকাল হলে রাত হয়, রাত হলে সকাল হয় আমি এটিকে বিশ্বাস করি। সূর্য যখন থাকবে না চাঁদ উঠবে চাঁদ যখন থাকবে না সূর্য উঠবে। আমার জীবনেও তা হতে পারে। আমি মেনে নেই। তাই আমার মধ্যে হতাশা বলে কোনো জিনিস নেই। সবসময় প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করি। সবকিছুর পরে রাতের বেলা উপরওয়ালাকে ধন্যবাদ জানাই। জীবনে আমার পাওয়ার ভাগটাই বেশি, না পাওয়ার ভাগ কম।

 

অভিনয় জগতের ব্যস্ততার বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে এখনো আড্ডা দেওয়া হয়?

বাইরের বন্ধু আছে আমার অনেক বেশি। ইউনিভার্সিটির বন্ধুদের একটা গ্রুপ, কলেজের বন্ধুদের আরেকটা গ্রুপ আর আমার স্কুলজীবনের বন্ধুদের আরেকটি গ্রুপ আছে। প্রায়ই আমরা এ তিনটি গ্রুপ একসঙ্গে হই। আমি বন্ধু-বান্ধব নিয়ে থাকতে ভালোবাসি, আড্ডা মারতে অনেক পছন্দ করি।

সর্বশেষ খবর