রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

আবার কেন সংসার ভাঙল মাহিয়া মাহির

আবার কেন সংসার ভাঙল মাহিয়া মাহির

তৃতীয়বারের মতো বিবাহ বিচ্ছেদের পথে হাঁটলেন আলোচিত-সমালোচিত নায়িকা মাহিয়া মাহি। এবার রাকিবকে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা ফেসবুক লাইভে এসে শুক্রবার রাতে ঘোষণা দিলেন এ নায়িকা।  মাহির প্রেম বিয়ে ও  রাজনীতির নানা কথা তুলে ধরেছেন-আলাউদ্দীন মাজিদ

 

এবার রাকিবকে ডিভোর্সের ঘোষণা

আরও একবার ভাঙল আলোচিত চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সংসার। এ নিয়ে তৃতীয়বার। শুক্রবার গভীর রাতে সর্বশেষ স্বামী রাকিব সরকারের সঙ্গেও বিচ্ছেদ হয়েছে অগ্নিকন্যা খ্যাত নায়িকা মাহির। বার্তা এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। ভিডিওবার্তায় মাহি জানিয়েছেন, রাকিবের সংসারে তিনি নেই। শুক্রবার রাত ১১টায় লাইভে মাহি বলেন, ‘আমাকে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে কখনো ভাবিনি। তবে আমার মনে হয়েছে এখন সবাইকে বলার সময় হয়েছে আমাদের নিজেদের ভালোর জন্য। আমি আর রাকিব খুব ভালো বোঝাপড়া থেকে বিয়ের সিদ্ধান্তে এসেছিলাম। আমরা খুব ভালোই ছিলাম। কিন্তু জীবনের এ পর্যায়ে এসে বুঝলাম আমরা আসলে দুজন দুজনের জন্য না।’ ফলে বিয়ের হ্যাটট্রিক তো মাহি তিন বছর আগেই করেছেন, এবার ডিভোর্সের হ্যাটট্রিকটাও সেরে ফেললেন।

 

প্রথম বিয়ে শাওনকে

নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত এ নায়িকা প্রথম বিয়ে করেন ২০১৬ সালের মাঝামাঝি শাহরিয়ার ইসলাম শাওন নামে এক যুবককে। সে সময় ওই যুবক মাহিকে তার স্ত্রী বলে দাবি করেন। জানান, তাদের বিয়ে হয়েছে। এক মাস সংসারও করেছেন। ওই সময় শাওনের সঙ্গে তোলা মাহির বেশকিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তার মধ্যে কিছু ছিল খুবই ঘনিষ্ঠ, কিছু ছিল বিয়ের সাজের। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা মোকদ্দমা হয়। ওই সময় সিলেটের ব্যবসায়ী মাহমুদ পারভেজ অপুকে বিয়ে করেন মাহি। সেটি জেনেই তার এবং মাহির বিয়ের খবর সামনে আনেন শাওন। প্রমাণ হিসেবে পেশ করেন বিয়ের কাগজপত্র এবং ঘনিষ্ঠ কিছু ছবি। কিন্তু মাহির ‘ক্ষমতা’ আর জনপ্রিয়তার কাছে টিকতে পারেননি শাওন। শোনা যায়, নায়িকার করা মামলায় টাকা ঢালেন তার দ্বিতীয় স্বামী অপু। পুলিশের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে আইনিভাবেও সহায়তা দেন। ফলে সে সময় মাহির করা মামলায় গ্রেফতার হন নায়িকার প্রথম স্বামী শাওন। ২০১৬ সালের ১৬ জুন আদালতে ১ লাখ টাকার মুচলেকা দিয়ে পরে তিনি জামিন পান। এর পরের বছর শাওনকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। পরবর্তীতে আর স্বামীর দাবি নিয়ে মাহির সামনে দাঁড়াননি শাওন।

দ্বিতীয় স্বামী অপুকেও ছাড়লেন

যাকে বিয়ে করে শাওনকে পর করেছিলেন মাহি, সেই দ্বিতীয় স্বামী অপুর সঙ্গেও সংসার করতে পারেননি তিনি। ২০২১ সালের জুন মাসে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন মাহি ও অপু। ওই বছরেরই সেপ্টেম্বরে তৃতীয় বিয়ে করেন গাজীপুরের ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান রাকিব হাসান সরকারকে। এ রাকিব ছিলেন বিবাহিত। দুটি সন্তানও আছে তার। শোনা যায়, মাহিকে বিয়ে করার জন্য প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন রাকিব। তৃতীয় সংসারে গত বছরের ২৮ মার্চ মাহির একটি পুত্রসন্তান হয়। নাম ফারিশ। কিন্তু সন্তানের বাঁধন টেকাতে পারল না রাকিব-মাহির সংসার।

 

রাজনীতিতেও ব্যর্থ

শুধু বিয়ে এবং ডিভোর্স নয়, আরও একটি ক্ষেত্রে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেছেন মাহি। সেটি হলো- রাজনীতির মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হওয়া। গত বছরের শেষদিকে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটে দুটি পদ পেয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে পথচলা শুরু হয় মাহির। এর মাত্র দুই মাসের মাথায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বসেন নায়িকা। কিন্তু পাননি। সে সময় দল থেকে মনোনয়ন দেয় জিয়াউর রহমানকে। তিনি বিজয়ীও হন। এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান মাহি। কিন্তু দ্বিতীয়বারও তাকে মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। ফলে তিনি রাজশাহী-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়াই করেন। কিন্তু  বড় ব্যবধানে হেরে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। হার না মানা মাহি সম্প্রতি সংরক্ষিত নারী আসন থেকেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয়বারও মাহিকে প্রার্থী করেনি সরকারি দলটি। ফলে মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার ক্ষেত্রেও হ্যাটট্রিক হয়ে যায় এ অভিনেত্রীর। শোনা যাচ্ছে, সব ভুলে তিনি আবার অভিনয়ে নিয়মিত হবেন। মানুষের মতো মানুষ করবেন একমাত্র ছেলে ফারিশকে। তার জন্য সবার দোয়া চেয়েছেন মাহি।

 

শুক্রবার লাইভে এসে যা বললেন

‘তার সংসার কেন ভাঙে। কেন হাজবেন্ডের সঙ্গে থাকতে পারল না বা হাজবেন্ড কেন তাকে সহ্য করতে পারছে না। অথবা তার ওয়াইফটা কেন তার হাজবেন্ডকে সহ্য করতে পারছে না। অথবা দুজন কেন ভালো নেই। দুজনের মধ্যে আসলে কী ঝামেলা হয়েছে, এগুলো তো আমরা আসলে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বুঝব না। তাই আমরা কাউকে নিয়ে যেন জাজ না করি।’ শুক্রবার মধ্যরাতে এসব কথা ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।

রাকিবের প্রতিক্রিয়া

এদিকে মাহি-রাকিবের বিয়ের খবরটি প্রকাশ্যে আসার পর ফেসবুকে সমালোচনায় পড়েন তারা। অনেকে অনেক ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন। বিয়ের পর রাকিব সরকার তার ফেসবুক আইডিতে মাহির একটি ছবি প্রকাশ করে লিখেছেন- ‘আমার একমাত্র বউয়ের আলোকচিত্রী আমি।’ 

লাইনটির শেষে ভালোবাসার ইমোজিও জুড়ে দিয়েছেন তিনি। সেই স্ট্যাটাসের নিচে এমডি জুনায়েদ নামের একজন মন্তব্য করেছেন- ‘দুইমাত্র হবে কাকা।’ পাল্টা মন্তব্যে রাকিব সরকার লিখেছেন- ‘আমার বউ একটাই। ডিভোর্সের পর বউ থাকে না।’ ওই দিনই রাকিব সরকারের স্ট্যাটাস এবং রাকিব ও জুনায়েদের মন্তব্যগুলোর স্ক্রিনশট মাহিয়া মাহি তার ফেসবুকে শেয়ার করেন।

সর্বশেষ খবর