২০০০ সালের প্রথম পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক ছিল, সরকারের রাজস্বও জোগান দিত। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের আয় কমার মূল কারণ এফডিসির সূত্র মাধ্যমে জানা গেছে- ৩৫ মিলিমিটারে (সেলুলয়েড) চলচ্চিত্র নির্মাণের সময় কাঁচা ফিল্ম বিক্রয় ও ল্যাব প্রিন্ট হতো। এরপর ডিজিটাল প্রযুক্তিতে কাঁচা ফিল্ম বিক্রয় বন্ধ, ল্যাব প্রিন্ট এবং এফডিসির ভবন নির্মাণে তিনটি ফ্লোর ভেঙে ফেলায় প্রতিষ্ঠানটির ৭০ ভাগ আয় কমে যায়। এ ছাড়াও সিনেমা হল কমে যাওয়ায় প্রযোজকদের চলচ্চিত্র নির্মাণের আগ্রহ কমেছে।
বেহাল দশায় পড়েছে এফডিসি। চার মাস ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। তাই আগামী সোমবার সংস্থার জহির রায়হান কালার ল্যাবের সামনে কলাকুশলীদের সংগঠন সিবিএ মানববন্ধন করবে। সংস্থাটিতে চলচ্চিত্র নির্মাণ কাজও কমছে উদ্বেগজনক হারে। আর কয়েকদিন পরেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। অথচ এখনো বেতনভাতা পাননি এফডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চলতি মাসের বেতন পাওয়াও অনিশ্চিত। এমন আশঙ্কা এফডিসি কর্তৃপক্ষের। এর মূল কারণ ক্রমান্বয়ে সংস্থার আয় কমে যাওয়া। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ১৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একমাত্র এ প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব আয় থেকে সব ব্যয় নির্বাহ করে। ২০০০ সালের প্রথম পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক ছিল, সরকারের রাজস্বও জোগান দিত। বর্তমানে এ সংস্থার আয় কমার মূল কারণ হিসেবে এফডিসি সূত্রে জানা গেছে, ৩৫ মিলিমিটারে (সেলুলয়েড) চলচ্চিত্র নির্মাণের সময় কাঁচা ফিল্ম বিক্রয় ও ল্যাব প্রিন্ট হতো। এছাড়া ডিজিটাল প্রযুক্তিতে কাঁচা ফিল্ম বিক্রয় বন্ধ, ল্যাব প্রিন্ট এবং এফডিসির ভবন নির্মাণে তিনটি ফ্লোর ভেঙে ফেলাতে প্রতিষ্ঠানটি ৭০ ভাগ আয় কমে যায়। এ ছাড়াও সিনেমা হল কমে যাওয়ায় প্রযোজকদের চলচ্চিত্র নির্মাণের আগ্রহ কমেছে। বর্তমানে এফডিসিতে ফ্লোর, ক্যামেরা ডাবিং, এডিটিং, লাইট, কালার গ্রেডিং, বিএফএক্স, শুটিং স্পট ইত্যাদি ভাড়া দেওয়ার মাধ্যমে মাসে ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা আয় হয়। তার বিপরীতে ২১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ
![](/assets/archive/images/Print-Edition/2024/03.%20March%20-%202024/08-03-2024/Bd-Pratidin-08-03-24-F-03.jpg)
তারা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে বায়োপিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণে এফডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে তা কেউ জানে না। অথচ ওই ফান্ডে টাকা থাকলেও তা তারা খরচ করতে পারছেন না। প্রতিষ্ঠানটি রাজস্বভুক্ত না হওয়ায় অবসরের পর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পেনশনও পাচ্ছেন না। তারা বলেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনের পর দিন অর্ধাহারে, অনাহার জীবন কাটাচ্ছে। অর্থের অভাবে চিকিৎসাও ব্যাহত হচ্ছে। এখনো গ্রাচ্যুয়িটি না পাওয়ায় অর্থকষ্ট আর হতাশায় অবসরকালীন এ পর্যন্ত আটজনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। বাকি বেশিরভাগরই জরাজীর্ণ অবস্থায় দিন অতিবাহিত হচ্ছে বলে জানান অনেকে। নতুন বছর আসার পর তাদের সন্তানদের স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় ভর্তিসহ আনুষঙ্গিক বহুবিধ খরচ রয়েছে, গত চার মাস শেষ হলো এখনো বেতন জোটেনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাগ্যে। অথচ একসময় তারাই লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সংস্থাটির আয় বৃদ্ধি করেছিলেন। এফডিসির সূত্র জানায়, এ সমস্যা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কে বারবার লিখিত আবেদনপত্র দিয়ে জানানো হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বহুবার অর্থ মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছে। এফডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের প্রণোদনার ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ ছাড়ে কেন এত গড়িমসি তথ্য মন্ত্রণালয়ের তা জানা নেই বলে জানায় এফডিসি প্রশাসন।