রবিবার, ১০ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার

গল্প লেখকরা সিনিয়রদের উপেক্ষিত রেখেছেন

গল্প লেখকরা সিনিয়রদের উপেক্ষিত রেখেছেন

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা)। দেশীয় চলচ্চিত্রের এ কিংবদন্তি স্বাধীন দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ নির্মাণসহ সব ধরনের গল্পের চলচ্চিত্র নির্মাণ ও অভিনয়  করে আমাদের চলচ্চিত্রকে করেছেন সমৃদ্ধ। এ জীবন্ত কিংবদন্তির চোখে বর্তমান সময়ের চলচ্চিত্রের অবস্থা কেমন, এ বিষয়ে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

প্রথমেই জানতে চাইব দীর্ঘদিন চলচ্চিত্র থেকে কেন দূরে আছেন?

আমি বলব কমপক্ষে গত এক দশক ধরে চলচ্চিত্রের গল্প লেখকরা তাদের গল্পে আমাদের মতো সিনিয়রদের উপেক্ষিত রেখেছেন। আমাদের এখনকার গল্পে বড়জোর বড়ভাই বা বাবার চরিত্রেই সীমিত রাখা হয়। এটি একটি অদ্ভুত ও দুঃখজনক ব্যাপার। কারণ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেই লেখক-নির্মাতারা উদাহরণ নিতে পারেন। সেখানে অমিতাভ বচ্চন, রেখাসহ অন্য অনেক সিনিয়র শিল্পীর ওপরই গল্প লেখাসহ  তাদের প্রধান চরিত্রে কাস্ট করে ছবি নির্মাণ করা হয়।  আমাদের এখানে এ মানসিকতা গড়ে ওঠেনি বলেই আমিসহ সিনিয়র শিল্পীদের এখন চলচ্চিত্র থেকে দূরে রাখা হয়েছে।

 

কমপক্ষে দ্ইু বছর ধরে কিছু চলচ্চিত্র সাড়া জাগাচ্ছে, এতে কি আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন?

এক কথায় মোটেও না। কারণ  চিকিৎসাধীন ১০০ রোগীর মধ্যে যদি একজন বাঁচে তাহলে তাতে কী আশার আলো দেখা যায়? ৯৯ জন রোগীকেতো জেনেশুনে মেরে ফেলা হচ্ছে। সারা বছরে যদি ৩/৪টি ছবি ব্যবসা করে তা দিয়ে কি চলচ্চিত্রজগতকে টিকিয়ে রাখা যাবে। একজন প্রযোজক যদি সিনেমা নির্মাণ করে তার লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত না পায় তাহলে তিনি আবার কেন ছবি নির্মাণ করতে যাবেন। আমার কথা হলো সিনেমা হলে দর্শক ফিরিয়ে আনতে সব শ্রেণির দর্শকের উপযোগী সিনেমা নির্মাণ করতে হবে। যা একসময় কমপক্ষে ষাট-সত্তর কিংবা আশির দশকে হতো।

 

সিনেমা হলের উন্নয়ন নিয়েও সমস্যা আছে, এ ব্যাপারে কী বলবেন?

শুনেছি প্রতি জেলায় সরকার সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করবে।  এটি করা হলেও চলচ্চিত্র জগতের জন্য তা কিছৃুটা হলেও অক্সিজেনের মতো কাজ করবে। তবে আমি বলব সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করে লাভ কী। সেখানেতো সব শ্রেণির দর্শক যেতে পারবে না। কারণ সিনেপ্লেক্সে টিকিটের মূল্য বেশি। সাধারণ দর্শকের পক্ষে তা কেনার সামর্থ্য নাও থাকতে পারে। তাই কয়েকটি স্থান ছাড়া বাকি সব জায়গায় নরমাল সিনেমা হল নির্মাণ করা প্রয়োজন। আমি কিন্তু সিনেপ্লেক্সের বিপক্ষে নই। আমার কথা হলো সব শ্রেণির  মানুষ যাতে সিনেমা দেখতে পারে, সিনেমা হলে যেহেতু টিকিটের দাম কম, তাই আগে বেশি করে সিনেমা হলই নির্মাণ করতে হবে। তাহলে নির্মাতারাও ছবি নির্মাণ করে আয়ের মুখ দেখবে। এখানে আরেকটি কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন। তা হলো- এ ক্ষেত্রে পরিবেশকরাও বিমাতাসুলভ আচরণ করে আসছে। যেমন পরিবেশকরা সিনেপ্লেক্স থেকে ৩০ ও সিনেমা হল থেকে ৬০ পার্সেন্ট অর্থ আদায় করে। এতে সিনেমা হল মালিকরা ছবি প্রদর্শনে উৎসাহ হারায়। সিনেমা হলের উন্নয়ন ও সংখ্যা বাড়াতে এ অব্যবস্থা দূর করতে হবে।

 

বাংলাদেশ প্রতিদিন ১৫ মার্চ ১৫ বছরে পদার্পণ করছে, আপনার অনুভূতি জানতে চাই।

বাংলাদেশ প্রতিদিন সংবাদপত্র জগতে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে। পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমার অকৃত্রিম শুভেচ্ছা রইল। আমি এ পত্রিকার এমন সাহসী সাংবাদিকতার ধারাবাহিকতা চাই। সঙ্গে প্রত্যাশা থাকবে আগামীতেও পত্রিকাটি সত্য কথা বলতে যেন পিছপা না হয়।

সর্বশেষ খবর