বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার

নারীবাদী চরিত্র আমাকে খুব টানে

নারীবাদী চরিত্র আমাকে খুব টানে

মৃত্যুর পরেও কাজের মাঝেই বাঁচতে চান দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী ইয়ামিন হক ববি। ২০১০ সালে ‘খোঁজ দ্য সার্চ’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দার অভিনয়ে অভিষেক তার। শুরুতেই গ্লামার আর দক্ষতা দিয়ে দর্শক মনে স্থায়ী আসন গড়ে নেন তিনি। তারপর এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রকেই ধ্যান- জ্ঞান করে রেখেছেন এবং অভিনেত্রী হিসেবে মানুষের ভালোবাসাও  পেয়ে চলেছেন। তার এখনকার ব্যস্ততা কেমন? সে কথাই জানতে চেয়েছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ

 

কেমন আছেন?

হুম, সবকিছু বেশ ভালোই চলছে, তবে হুট করে আম্মার চোখের সমস্যা হয়েছে সম্প্রতি। হাসপাতালে ভর্তি করালাম। চোখের অপারেশন হলো। এখন আল্লাহর রহমতে আম্মা ভালো আছেন। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

 

অবশ্যই দোয়া রইল, যেহেতু আপনি একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী, তাই এবার আপনার সিনেমার কাজ নিয়ে কিছু জানতে চাই-

ধন্যবাদ, আসলে আমার অভিনীত বেশকটি ছবি এখন মুক্তির জন্য প্রায় প্রস্তুত হয়ে আছে। এসব ছবির মধ্যে রয়েছে-ময়ূরাক্ষী, খোয়াব, এবার তোরা মানুষ হ। এর মধ্যে প্রথম দুটো মুক্তির জন্য প্রস্তুত আর শেষটির ডাবিং বাকি আছে।

 

এসব ছবিতে আপনার চরিত্র একটির চেয়ে আরেকটি কতটা আলাদা?

আসলে সবকটি ছবির গল্প ও চরিত্র জীবনবোধের ছায়ায় বেড়ে উঠেছে। সমাজের নানা অংশের প্রতিনিধি হয়ে পর্দায় দর্শকের সামনে উপস্থিত হবে এসব গল্প আর চরিত্র। এই যেমন ময়ূরাক্ষীর গল্পে আমার চরিত্রটি হলো একজন স্টার হিরোইনের। যার কর্ম এবং জীবনের উত্থান- পতনের চিত্র আছে এতে। ‘খোয়াব’ ছবির চরিত্রটিও ্একজন হিরোইনের জীবন যন্ত্রণায় ঘেরা। আর এবার তোরা মানুষ হ ছবিতে আমার প্লে করা চরিত্রটি হলো একজন রেপ ভিকটিমের। এখানেও এক নারীর জীবনের আলো-আঁধারের চিত্র মর্মস্পর্শী হিসেবে গড়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, নারীর জীবন যন্ত্রণার নানা রূপ ছবিগুলোর মাধ্যমে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি।

 

আসলে কেমন চরিত্র রূপায়ণে স্বাচ্ছন্দ্য আপনার?

ওই যে বললাম, আমি জীবনধর্মী চরিত্রের মধ্যেই থাকতে চাই। কারণ একটি চলচ্চিত্র হলো মানুষের জীবনের নানা চিত্রের উপস্থাপনা। আর সমাজ, দেশ, পরিবার, পরিস্থিতির ছায়া আর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক থেকে উত্তরণের উপায় একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই উদ্ভাসিত হয়। তাই চলচ্চিত্রের মানুষরা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের কাছে দায়বদ্ধ। চলটিচ্চত্রের মানুষ হিসেবে আমিও তাই। আমার ভালো লাগে শাবানা, ববিতা এবং বলিউড অভিনেত্রী শাবানা আজমী রূপায়িত জীবন ঘনিষ্ঠ চরিত্রগুলো। তাই এমন চরিত্র রপায়ণেই আমার স্বাচ্ছন্দ্য। সত্যি কথা বলতে নারীবাদী চরিত্র আমাকে খুব টানে।

 

২০১০ সালে বড় পর্দার অভিনয়ে এলেন। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এ অঙ্গনে হেঁটেচলা। সফলতার প্রাপ্তি কেমন?

প্রথমে বলব দর্শক ভালোবাসায় দীর্ঘ সময় এ অঙ্গনে আত্মবিশ্বাস আর আত্মতৃপ্তির সঙ্গে সফলভাবে হেঁটে চলেছি। দর্শক যদি আমার কাজ সাদরে গ্রহণ না করত তাহলে এখনো আমি টিকে থাকতে পারতাম না। ২০১০ সালে এ অঙ্গনে এসেছি, এ দীর্ঘ সময় ধরে এগিয়ে চলেছি, ভাবতেই স্বপ্নের মতো লাগে। ওই সময় থেকে অভিনয় নিয়ে আমার স্ট্রাগল আজ আমাকে এ সফলতার আলো দেখিয়েছে। আসলে সফলতা পেতে হলে যে কোনো পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করে এগিয়ে যেতে হয়। স্ট্রাগল ছাড়া সফলতা আসে না। কাজটা যেন সততা দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা যায় সেই চেষ্টা থাকতে হবে। তা ছাড়া আমি সব সময়ই কোয়ান্টিটি নয়, কোয়ালিটিতে বিশ্বাসী। এ দীর্ঘ সময়ে যতটুকু কাজ করেছি তা ভেবেচিন্তে করেছি। আর তাই দর্শক-নির্মাতার অবারিত ভালোবাসাও সহজে পেয়েছি।

 

আগামীতে কেমন পূর্ণতা নিয়ে আসছেন?

এ অঙ্গনে আসার এক যুগেরও বেশি সময় পরে যেহেতু আমার প্রতি দর্শকের ভালোবাসা এক রত্তিও কমেনি, তারা বোর হয়নি, এটি আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। তাই আমার দায়িত্ব যেন আরও বেড়ে গেল এবং চেষ্টা থাকবে আগামীতে আরও সেরা কাজটি উপহার দেওয়ার।

 

নিজেকে প্রযোজক হিসেবে কেমন উপভোগ করেন?

আসলে তখন খুব জেনে-বুঝে প্রযোজনায় আসিনি। তারপরেও দর্শক আমার প্রযোজিত ‘বিজলী’ ছবিটির যেমন অ্যাপ্রিসিয়েট করেছে তাতে আমার মাঝে এ বিশ্বাস জন্মেছে যে অভিনয়ের মতো নির্মাণেও দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছি। দর্শক এখনো আমার কাছে জানতে চায় ‘বিজলী টু’ কখন আসবে। দর্শকের এ ভালোবাসার যেন কোনো শেষ নেই। আমি মরে গেলেও যেন মানুষের মনে কাজ দিয়ে ভালোবাসার স্থান ধরে রাখতে পারি, এই আমার পরম চাওয়া।

সর্বশেষ খবর