বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

অনিয়ম নিয়ে কথা বলতে গেলেই বিপদ

অনিয়ম নিয়ে কথা বলতে গেলেই বিপদ

দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা তৌকীর আহমেদ। অভিনয় থেকে তিনি মঞ্চ, টিভি নাটক-চলচ্চিত্র রচনা ও নির্মাণে আসেন। পরিচালনার কাজ নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকলেও এখনো অভিনয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি।  তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

এবার জন্মদিনটা কাটালেন নিউইয়র্কের মাটিতেই। তো কেমন কাটছে বিদেশ জীবন?

হ্যাঁ। আসলে দেশে থাকি বা বিদেশে থাকি আমি একটু আড়ালে, নিভৃতে থাকতেই পছন্দ করি। এখন তো লেখালেখি ও পড়াশোনার মধ্য দিয়ে কাটে এখানে। আমার নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় গত বছর নিউইয়র্কে বাঙালিদের নিয়ে ‘তীর্থযাত্রী’ মঞ্চায়ন করেছি; ঢাকায়ও শো করেছি। এরই মধ্যে নতুন কিছু পা-ুলিপি করছি। দেখা যাক কী হয়।

 

দেশে আসবেন কবে নাগাদ?

এই তো দেড়-দুই মাস পর। সেটা হতে পারে রোজার ঈদের পর। তবে সুবিধাজনক সময়েই আসব।

 

নতুন কোনো সিনেমা নির্মাণ ভাবনা রয়েছে?

ইচ্ছা রয়েছে, দেখা যাক। আসলে একটি সিনেমা করতে অনেক টাকা প্রয়োজন। সেটা যতক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিত করতে না পারব, ততক্ষণ সিনেমার প্রজেক্ট ঘোষণা অর্থহীন।

 

অভিনেতার চরিত্র উপস্থাপনে কার ভূমিকা বেশি?

একটি চরিত্র কতখানি গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপনা করা যায় বা কীভাবে করলে দর্শকের কাছে আরও ভালো লাগবে- তা কিন্তু ডিরেক্টরের হাতে। এটা প্রত্যেক ডিরেক্টরের স্বাধীনতা যে, তিনি একটি চরিত্রকে কতটুকু স্পেস দেবেন। আমাকে তো অনেক ধরনের চরিত্রে দর্শক আগেও দেখেছেন। যেমন- জালালের গল্প কিংবা রাবেয়া, চিত্রা নদীর পাড়ে, নদীর নাম মধুমতী অথবা রূপকথা- সবকটিতেই ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছি। বিউটি সার্কাসেও আমার নবাব চরিত্রটি ছিল অন্যরকম। আসলে একসময় অভিনেতা দিয়েই পরিচিত ছিলাম। অভিনেতা হিসেবেই এসেছিলাম। এখন কেউ ভালো কাজে বললে করে ফেলি। ভালো লাগে এই কাজটির মধ্যে।

 

এ ইন্ডাস্ট্রিতে অনিয়ম, সিন্ডিকেশন, স্বজনপ্রীতি নিয়ে কী বলবেন?

বৈষম্য, প্রভাব, মেনুপুলেশন তো এখন সব সেক্টরেই হচ্ছে। যার প্রভাব বেশি, সে বেশি প্রভাব খাটাচ্ছে আর যে দুর্বল তাকে সয়ে যেতে হচ্ছে সব। সিন্ডিকেশন তো এখন সব মাধ্যমেই ভীষণ প্রকট। অনিয়ম নিয়ে কথা বলতে গেলেই বিপদ। অনিয়ম, সিন্ডিকেশন, স্বজনপ্রীতি থাকে, আছে। তবে ব্যক্তি প্রভাবে বা সুবিধায় একটা বড় অংশ কাজের উৎসাহ হারায়। পুরস্কার, অনুদান, সিনেমার হল পাওয়া, ছবি মুক্তি- সবই তো এভাবেই হচ্ছে। আসলে প্রভাব প্রকট হলে মিডিয়ার স্বাভাবিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সিনেমার এখন ভালো সময়। এমন নয় যে, সিনেমা কম হচ্ছে এখন। নানারকম প্রতিকূলতা কাটিয়ে দর্শকের সামনে অনেক কষ্ট করে নিয়ে আসেন নির্মাতারা। এমনিতেই এখন ভালো জিনিস সমাদৃত হয় না। তাই আমাদের এই কষ্টকে মূল্যায়ন করতে হবে। উৎসাহ দিতে হবে। দর্শককে দেখার সুযোগ দিতে হবে। ভালো হলে দর্শক গ্রহণ করবে, খারাপ হলে রিজেক্ট করবে।

 

এই সময়ে সিনেমার প্রচারণা সঠিক পদ্ধতিতে হচ্ছে?

সিনেমা প্রচারণায় অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। ভালোটাকে ভালো না বলে পেইড পাবলিসিটিতে ভালো বলার প্রচলন চালু হয়েছে। ইউটিউব, ফেসবুককেন্দ্রিক অনেক পেইড গ্রুপও রিভিউ দিচ্ছে খারাপটাকে ভালো বলে। এ থেকে উত্তরণ জরুরি। জহির রায়হান, আমজাদ হোসেন, তারেক মাসুদের সিনেমা ভালো বলেই এখনো টিকে আছে। বাণিজ্য দরকার, তবে গুণগত মান ঠিক রেখে।

 

এখন তো তারকাদের ব্যক্তিগত বিষয়, প্রেম, বিয়ে, সন্তান সামনে চলে আসে...

যাহা ভালো তাহা ভালো। আর যাহা সুন্দর তাহা সর্বদাই সুন্দর। তারকাদের সর্বপ্রথম ভালো মানুষ হওয়া জরুরি। সবার অনুকরণীয় হওয়া দরকার। ১০ জন যখন তাঁকে দেখবে, তাঁর কথা শুনবে, আচরণ দেখবে- যেন অনুকরণের মতো কিছু পায়। তারকাদেরও ব্যক্তিজীবনে অনেক টানাপোড়েন, সমস্যা থাকবেই।  সেটা সঠিকভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে। আইডল বলেই তারকাদের সব বিষয় খেয়াল করেন ভক্তরা। তারকাদের জীবন কঠিন, সাধারণ মানুষের মতো নয়।  রিস্ক যেমন বেশি তেমনি প্রাপ্তিও বেশি।

সর্বশেষ খবর