২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। এই নির্বাচন ঘিরে চলছে নানা ধোঁয়াশা। এ বিষয়ে একাধিক ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ
কেউ সভাপতি হতে রাজি হচ্ছিলেন না নিপুণের প্যানেলে
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন কেন্দ্র করে এবার ভীষণ একা হয়ে পড়েছিলেন সমিতির বিতর্কিত সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার। নির্বাচন ঘিরে নিপুণ একই পদে নির্বাচন করতে গিয়ে নিজ প্যানেলে সভাপতি পদে কাউকে আনতে পারছিলেন না। বর্তমান কমিটির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বিগত নির্বাচনে নিপুণের প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়ে এলেও এবার তিনি নির্বাচন করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এতে নিপুণও বসে থাকেননি। একে একে অনেককে তার প্যানেলের হয়ে সভাপতি পদে প্রার্থিতার প্রস্তাব দিলেও তারা কেউ রাজি হননি। জানা গেছে নিপুণ ধাপে ধাপে ইলিয়াস কাঞ্চন, শাকিব, ফেরদৌস, অনন্ত জলিলের দ্বারস্থ হলেও তারা তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। সর্বশেষ চলচ্চিত্র প্রযোজক আরশাদকেও তিনি প্রস্তাব দেন। তাতেও সাড়া মেলেনি। ফলে সামনের নির্বাচন ঘিরে একাই হয়ে পড়েছিলেন নিপুণ।
মিশা-ডিপজল প্যানেল প্রস্তুত
ঢাকাই চলচ্চিত্রের দাপুটে দুই খল অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও মিশা সওদাগর। আসন্ন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে মিশা ও সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজল জোট বেঁধেছেন। এরই মধ্যে তাদের প্যানেল প্রায় প্রস্তুত। এই প্যানেলে নায়ক রুবেলও থাকবেন বলে জানান মিশা সওদাগর। এদিকে এই প্যানেলকে ঘিরে এফডিসিতে এখন সাজ সাজ রব চলছে। নির্বাচন ঘিরে তারা এফডিসিতে রমজানজুড়ে আয়োজন করেছেন ইফতার মাহফিল।
অবশেষে নিপুণ পেলেন কলিকে
অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে সদস্যদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও যখন নিপুণ তার প্যানেলে সভাপতি পদে নির্বাচন করতে কাউকে রাজি করাতে পারছিলেন না তখন এগিয়ে এলেন সত্তর-আশির দশকের নায়ক মাহমুদ কলি। এই নায়ককে এ প্রজন্মের তেমন কেউ চেনেন না কারণ বেশ বড় একটা সময় তিনি চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে ছিলেন।
আলোচনায় আহমেদ শরীফ
আহমেদ শরীফ পরিবারসহ থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। সম্প্র্রতি ঢাকা এসেছেন। আসন্ন নির্বাচনে দেখা যাবে কি না? এমন প্রশ্নে এ অভিনেতা বলেন, নির্বাচন করছি তবে কোন প্যানেলে এবং কোন পদে করব- সেটি পরে জানাব। সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও তিনবার সাধারণ সম্পাদক ও চারবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এ অভিনেতা।
যে কারণে নির্বাচন করবেন না ইলিয়াস কাঞ্চন
আগামী নির্বাচনে আর অংশ নেবেন না ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, অনেক দুঃখ, অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে শিল্পী সমিতি থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে তাকে। কারণ বর্তমান কমিটির কার্যক্রম ও সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তিনি জানান, কমিটির নির্বাচিত সদস্যদের অসহযোগিতার কারণে এমনটা হয়েছে।
নির্বাচন করবেন না শাকিবও
সর্বশেষ গুঞ্জন রটে চিত্রনায়ক শাকিব খানকে সভাপতি পদে চাচ্ছেন নিপুণ। কিন্তু এ নায়িকার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনিও। ঢালিউডের এই সুপারস্টারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমানে নির্বাচন নয়, সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চান শাকিব। এর আগে অবশ্য দুই মেয়াদে চার বছর এই সমিতির সভাপতি ছিলেন তিনি।
আদনানের কেন ‘না’
নির্বাচন ঘিরে নতুন করে আলোচনায় আসেন আরশাদ আদনান। নিপুণের প্যানেলে তার থাকার গুঞ্জনও শোনা যায়। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন এই প্রযোজক। তিনি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। তিনি বলেন, আমি নির্বাচন করব না। যাদের কোনো কাজ নেই, তারা সমিতিতে থাকে। কাজ করার মানুষ সমিতিতে বসে আড্ডা মারে না।
কেন নির্বাচন করবেন না জায়েদ
জায়েদ খান বলেন, ‘আমি এখন পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। আমার বোন অসুস্থ। তাকে সময় দিচ্ছি। এ ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নিলেও শিল্পীদের সেবা করা যায়। সেটাই করার চেষ্টা করব।’ এদিকে এবারের নির্বাচনে ডিপজল ও মিশা সওদাগর প্যানেলকে সমর্থন করছেন জায়েদ খান। অন্যদিকে এর আগে কাঞ্চন-নিপুণের কমিটি জায়েদ খানকে সমিতি থেকে বহিষ্কার করে।
মিশার প্রস্তাব নিয়ে ভাবছেন মাহি
জাতীয় নির্বাচনের পর এবার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন মাহিয়া মাহি। এমন গুঞ্জনই চলছে। যদিও মাহির মন্তব্য, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারটি এখনই চূড়ান্ত নয়। মাহি বলেন, ‘মিশা ভাই আমাকে তাদের প্যানেল থেকে নির্বাচন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। আমি এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। ‘হ্যাঁ’, ‘না’ কিছুই বলিনি। মিশা ভাইকে বলেছি, আমাকে ভাবার সময় দেন।’
সরে দাঁড়ালেন নানা শাহ, তায়েব, শাহনূর
নিপুণের প্যানেল থেকে গতবার নির্বাচিত তিন সদস্য নানা শাহ, ডি এ তায়েব ও শাহনূর এবার নিপুণের সঙ্গে নির্বাচন করবেন না। নিপুণের প্যানেল থেকে নির্বাচন না করার কারণ জানিয়ে তারা বলেন, ‘যে আশা ও স্বপ্ন দেখিয়ে নিপুণ নির্বাচন করিয়েছিলেন, তার কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। শিল্পীদের বেশির ভাগই বেকার। তাদের উন্নয়নে কিছুই করেননি নিপুণ।’