শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
আজ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন

মুখোমুখি কলি-নিপুণ-ডিপজল-মিশা

ফের এফডিসিতে উৎসবের আমেজ। দুই বছর পর আজ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। একটি কলি-নিপুণ পরিষদ, অন্যটি মিশা-ডিপজল পরিষদ। এ নির্বাচনকে ঘিরে সাতসতেরো তুলে ধরেছেন- পান্থ আফজাল

মুখোমুখি কলি-নিপুণ-ডিপজল-মিশা

৯টায় ভোট গ্রহণ, ভোটার ৫৭০

এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু। আজ সকাল ৯টায় শুরু হয়ে ভোট গ্রহণ চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি থাকবে মধ্যাহ্নভোজের জন্য। ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। গণনা শেষে ওই দিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এবার মোট ভোটার ৫৭০ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটার হয়েছেন ৫০ জন। জায়েদ-মিশা প্যানেল ক্ষমতায় থাকাকালে অনেকের ভোটাধিকার বাতিল হয়েছিল। এরপর কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল বিজয়ী হয়ে উচ্চ আদালত থেকে ১০৩ জন ভোটাধিকার ফিরে পান। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন ও ফিরে পাওয়া মিলে মোট ১৫৩ জনের ভোট এবারের নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।

 

দুই প্যানেলে ৪৮ প্রার্থী

২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্যানেল দুটি হলো মিশা-ডিপজল ও মাহমুদ কলি-নিপুণ।

 

কে কোন পদে লড়ছেন

এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। একটি কলি-নিপুণ পরিষদ, অন্যটি মিশা-ডিপজল পরিষদ। এর মধ্যে সভাপতি পদে লড়ছেন মাহমুদ কলি ও মিশা সওদাগর। আর সাধারণ সম্পাদক পদে গেল আসরের মতো এবারও প্রার্থী হয়েছেন নিপুণ আক্তার। তার বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন ডিপজল।

 

কলি-নিপুণ পরিষদ

সহসভাপতি পদে আছেন ড্যানি সিডাক ও অমিত হাসান। সহসাধারণ সম্পাদক পদে বাপ্পি সাহা। সাংগঠনিক সম্পাদক অঞ্জনা রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মারুফ আকিব, দফতর ও প্রচার সম্পাদক কাবিলা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন ও কোষাধ্যক্ষ পদে প্রার্থী হয়েছেন আজাদ খান। এই প্যানেলের কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদের জন্য লড়ছেন সুজাতা আজিম, নাদের চৌধুরী, পীরজাদা হারুন, পলি, জেসমিন আক্তার, তানভীর তনু, মো. সাইফুল, সাদিয়া মির্জা, সনি রহমান, হেলেনা জাহাঙ্গীর ও সাইফ খান।

 

মিশা-ডিপজল পরিষদ

সহসভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব। সহসাধারণ সম্পাদক আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো, দফতর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক ডন এবং কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী কমল। এই প্যানেলে কার্যকরী পরিষদের সদস্য হতে চান অভিনেত্রী সুচরিতা, রোজিনা, আলীরাজ, সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন, শাহনূর, নানা শাহ, রত্না কবির, চুন্নু, সাঞ্জু জন ও ফিরোজ মিয়া।

 

জয়ী হলে কে কী করবেন...

সভাপতি প্রার্থী মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে আছে শিল্পীদের সর্বোচ্চ স্বার্থ সংরক্ষণ করব। কমার্শিয়াল চলচ্চিত্রকে ৭৫% অনুদান দেওয়ার অনুরোধ করব, যে দেশের কমার্শিয়াল সিনেমা যত চলবে সে দেশের ইন্ড্রাস্ট্রি তত ঘুরে দাঁড়াবে।’ এদিকে নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তার। হারলে মেনেও নেবেন। তিনি চান এফডিসির উন্নয়নমূলক কিছু কাজ করতে। সেই হিসেবে হল মালিকদের একাত্মতায় হলগুলোকে সংস্কার করতে চান নিপুণ। এফডিসির সামনের ভবনটা যেন দ্রুত উদ্বোধন হয় সেটার দিকেও বাড়তি নজর দিতে চান নিপুণ। শিল্পীদের সর্বোচ্চ স্বার্থ যেন সংরক্ষণ হয় আর চান প্রযোজক সমিতির হাত যেন শক্ত হয়।

 

সাদামাটা নির্বাচন

এর আগে এফডিসির নির্বাচনকে ঘিরে শিল্পীদের ভক্ত, সমর্থক ও উৎসুক সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এবারের নির্বাচনের চিত্র ভিন্ন। সাধারণ মানুষের খুব একটা আগ্রহ নেই এবার। যদিও এফডিসির মূল ফটক থেকে শুরু করে পুরো আঙিনা তারকা প্রার্থীদের রঙিন পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে। বিএফডিসির প্রধান ফটকের সামনেই রয়েছে দুই পরিষদের শিল্পীদের নির্বাচনি প্রচারের বড় বড় ব্যানার। এদিকে সাদামাটা নির্বাচন প্রসঙ্গে কমিশনার জানান, ‘এবারের নির্বাচন আগের বছরগুলোর মতো না জমার কারণ অনেকে এখনো ঢাকাতেই ফেরেননি। এ কারণে এবার ভোট পড়ার সংখ্যাও কম হতে পারে।’

 

ভোট গ্রহণ কেন ১৯ এপ্রিলে! 

নির্বাচন কমিশনের তফসিলে প্রথমে ১৯ এপ্রিল ভোটের দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু ঈদুল ফিতরের ছুটির ফাঁদে তা পিছিয়ে ২৭ এপ্রিল করার দাবি তোলেন অনেকে। নির্বাচন কমিশন তাতে রাজিও হয়। কারণ, ১৯ এপ্রিল ভোট হলে ছুটির পরে এসে প্রার্থীরা প্রচার চালানোর সময় পাবেন না। তা ছাড়া ছুটি কাটাতে যাওয়া অনেক ভোটার এত দ্রুত ঢাকায় ফিরে এসে ভোটও দিতে পারবেন না। কিন্তু মিশা-ডিপজল প্যানেলের দাবির মুখে নির্বাচন কমিশন ভোট পিছিয়ে দেওয়া থেকে সরে আসে।

 

 

সর্বশেষ খবর