মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
টাইমস অব ইন্ডিয়ার চোখে

শাহরুখ কেন এত জনপ্রিয়

শোবিজ ডেস্ক

শাহরুখ কেন এত জনপ্রিয়

অভিনয় ও অসামান্য ব্যক্তিত্বের জোরে নিজের মুকুট সগৌরবে ধরে রেখেছেন শাহরুখ। এমনটাই দাবি ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র। এই পত্রিকার প্রতিবেদনে শাহরুখ সম্পর্কে বলা হয়, ১৫ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন, ২৬ বছর বয়সে হারান মাকেও। একমাত্র বোন এই শোক সইতে পারেননি, অবসন্নতাসহ মানসিক অসুখের শিকার হন তিনি। সেই দুঃসময়ে পাশে কেউ ছিল না। অথচ এখন তার বাড়ির সামনে ভিড় করে লাখো মানুষ। গোটা বিশ্বে এক নামে পরিচিত তিনি। তিনিই বলিউড বাদশাহ, ‘লাস্ট অব দ্য স্টারস’ শাহরুখ খান। বর্তমান এই গ্ল্যামারের পেছনে শাহরুখের জীবনের একাকিত্বের করুণ ছায়া, অসহায়ত্ব ও অবসাদও রয়েছে। মাত্র ১৫০০ রুপি নিয়ে মুম্বাই এসেছিলেন শাহরুখ। দিল্লির মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান শাহরুখ খানের বাবা এসেছেন পাকিস্তানের পেশোয়ার শহরের কিসসা খোয়ানি বাজার থেকে।

অ্যাথলেট হতে চেয়েছিলেন : ছোটবেলায় শাহরুখ হতে চেয়েছিলেন একজন অ্যাথলেট। সেন্ট কলম্বাসে পড়ার সময় হকি ও ফুটবলে অসাধারণ পারফরমান্সের জন্য তিনি পেয়েছিলেন সোয়ার্ড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার। দিল্লির হানস রাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন ও জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া থেকে গণযোগাযোগ বিভাগে স্নাতকোত্তর পড়াকালে অভিনয় শেখার জন্য থিয়েটার অ্যাকশন গ্রুপে ভর্তি হন তিনি। টেলিভিশনে অভিনয় দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন শাহরুখ। তার প্রথম অভিনীত ধারাবাহিক ফৌজি মুক্তি পায় ১৯৮৯ সালে। ১৯৯১ সালের এপ্রিলে মাকে হারানোর পর দিল্লি ছেড়ে স্বপ্নের নগরী মুম্বাইতে আসেন তিনি। পকেটে তখন মাত্র দেড় হাজার রুপি। মুম্বাইতে এসেই চারটি সিনেমায় নাম লেখান শাহরুখ। প্রথমটি অভিনেত্রী হেমা মালিনীর নির্দেশিত সিনেমা ‘দিল আশনা হে’। যদিও শাহরুখ খানের প্রথম মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘দিওয়ানা’। এই সিনেমায় ঋষি কাপুর ও দিব্য ভারতীর সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি।

শাহরুখ কেন এত জনপ্রিয় : বলিউডে শাহরুখ সবার নজর কাড়েন দিওয়ানা, আঞ্জাম, ডর ও বাজিগরের মতো সিনেমায় খল চরিত্রে অভিনয় করে। কিন্তু খল চরিত্রে অভিনয় থেকে সরে আসতে চেয়েছিলেন শাহরুখ। এই যাত্রায় তার সঙ্গী হন আদিত্য চোপড়া ও বিখ্যাত প্রযোজনা সংস্থা যশরাজ ফিল্মস। মুক্তি পায় বলিউডের অমর প্রেমাখ্যান ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’। সিনেমাটি এতটাই দর্শকপ্রিয় যে এখনো প্রতি শুক্রবার মুম্বাইয়ের মারাঠা মন্দির সিনেমা হলে এটি প্রদর্শিত হয়। এরপর শাহরুখ ক্রমাগত রোমান্টিক সিনেমাতেই অভিনয় করে যান। ‘দিল তো পাগাল হে’, ‘খুছ কুছ হোতা হে, কাভি খুশি কাভি গাম, ভির জারা- এ রকম অসংখ্য রোমান্টিক সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। শাহরুখ খানের সিনেমা ও চরিত্র বাছাই তাকে তার সমসাময়িক অন্যান্য অভিনেতাদের থেকে আলাদা করে। আশির দশকের শেষে ও নব্বইয়ের দশকের শুরুতে হিন্দি সিনেমায় যারা দাপিয়ে বেড়ান, অতিপুরুষালি আচরণে ভরপুর সেসব সিনেমায় নায়িকাকে চড় মারতেও দ্বিধা করেনি সেই চরিত্রগুলো। ঠিক এ সময়ই শাহরুখ এমন সব চরিত্রে অভিনয় করেছেন যেখানে তাকে মায়েদের সঙ্গে ঘরের কাজ করতে দেখা যায়। নায়িকাদের যত্ন নিতে দেখা যায়। মায়ের সব থেকে আদরের সন্তান, শিশুদেরও পছন্দের। পর্দায় একই সঙ্গে রোমান্স, অ্যাকশন, কমেডি আবার ন্যায়পরায়ণ, নিষ্ঠাবান সবকিছুই সফলভাবে ফুটিয়েছেন তিনি। সাধারণ মানুষ মাত্রই যে হিরো হতে পারে এবং একজন হিরো বা নায়ক যে সাধারণ মানুষ ছাড়া ভিন্ন কিছু নয়, তা প্রমাণ করেছেন চলচ্চিত্র জগতে পা রেখেই। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন কিং অব রোমান্স। পর্দার বাইরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপের সময়, কিংবা ভক্তদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের সময়ও তার মার্জিত আচরণ, রসবোধ ও অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ শাহরুখকে নিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায়।

 

সর্বশেষ খবর