বুধবার, ১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বলিউডের যত খান

বলিউডের যত খান

কমপক্ষে আশির দশক থেকেই খানদের দখলে চলে যায় ভারতের সিনেমারাজ্য বলিউড। বলিউডের প্রধান চার খান হচ্ছেন- শাহরুখ খান, আমির খান, সালমান খান এবং সাইফ আলী খান। তাদের মধ্যে আত্মীয়তার কোনো সম্পর্ক নেই।  শুধু ‘খান’ উপাধিটাই এক। কাকতালীয়ভাবে প্রথম তিনজনের জন্মবছরও এক, ১৯৬৫ সালে। তবে ভিন্ন ভিন্ন মাসে। খানদের বলিউড নিয়ে লিখেছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ

 

শাহরুখ খান

শাহরুখ খান জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর। এসআরকে নামেই তিনি বেশ জনপ্রিয়। তার অন্য দুটি উপাধি হলো- ‘বলিউড বাদশাহ’ ও  ‘কিং খান’। শাহরুখ বলিউডের সবচেয়ে সফল অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি ডর, দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে, দিলতো পাগল হ্যায়, কুছ কুছ হোতা হ্যায়, মে হু না, বীর জারারসহ বেশ কয়েকটি সফল রোমান্টিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ১৯৮০ দশকের শেষদিকে শহরুখ খান বেশ কয়েকটি টেলিভিশন ধারাবাহিকে কাজ করে তার অভিনয়জীবন শুরু করেন। ১৯৯২ সালে দিওয়ানা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি বলিউডে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে ডর (১৯৯৩), বাজিগর (১৯৯৩) এবং আনজাম (১৯৯৪) চলচ্চিত্রে খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। এরপর তিনি রোমান্টিক ধাঁচের চলচ্চিত্রে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে বক্স অফিসে সফলতা লাভের পাশাপাশি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে (১৯৯৫), দিল তো পাগল হ্যায় (১৯৯৭), কুছ কুছ হোতা হ্যায় (১৯৯৮), কাভি খুশি কাভি গাম (২০০১) প্রভৃতি। শুধু দর্শকপ্রিয়তাই নয়, জাতীয়, আন্তর্জাতিক এবং ফিল্মফেয়ার, স্টারডাস্টসহ অজস্র সম্মাননায় একাধিকবার ভূষিত হন তিনি।

 

আমির খান

আমির খানের প্রকৃত নাম মোহাম্মদ আমির হোসেন খান। তার জন্ম ১৪ মার্চ ১৯৬৫ সাল। বেছে বেছে অল্প সংখ্যক চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্য তার খ্যাতি রয়েছে। বলিউডে সফল কর্মজীবনের মাধ্যমে তিনি নিজেকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে  জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি বিদেশেও অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন অভিনেতা হিসেবে সুপরিচিত। বিশেষ করে চীনে তার অসংখ্য ভক্ত ও অনুরাগী রয়েছে, যার কারণে ব্যবসায়িক দিক দিয়ে ভারতের পরে তার দ্বিতীয় বৃহত্তম চলচ্চিত্র বাজার হিসেবে চীন উল্লেখযোগ্য। তিনি চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং  সাতবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার এবং একাডেমি পুরস্কার মনোনয়নসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি ভারতের সর্বোচ্চ সম্মানীয় পুরস্কার পদ্মশ্রী (২০০৩) এবং পদ্মভূষণ (২০১০) লাভ করেন। আমির খান তার চাচা নাসির হোসেনের চলচ্চিত্র ইয়াদোঁ কি বারাত (১৯৭৩)-এ শিশুশিল্পী হিসেবে বড় পর্দায় প্রথম হাজির হন। ১৯৮৮ সালে তিনি ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় সফল যাত্রা শুরু করেন। চিত্র প্রযোজক হিসেবেও সফলতা দেখান আমির খান। আমির খানকে বলা হয় বলিউডের মি. পারফেকশনিস্ট।

 

সালমান খান

সালমান খানের জন্ম ১৯৬৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর। ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে তার জন্ম। সালমানের পুরো নাম আবদুল রশিদ সেলিম সালমান খান। বলিউডে সালমান খানকে অনেকে ‘সাল্লু’ ও ‘ভাইজান’ নামে ডাকেন। অভিনয় ছাড়াও সালমান খান চলচ্চিত্র প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত আছেন। এ ছাড়াও তিনি ভারতের জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘বিগ বস’-এর সঞ্চালনা করেন। সালমান খান চিত্রনাট্যকার সেলিম খানের বড় ছেলে। তার মায়ের নাম সালমা খান। সালমানের ছোট দুই ভাই আরবাজ খান ও সোহেল খান। আর আলভিরা খান অগ্নিহোত্রি ও অর্পিতা খান শর্মা সালমানের ছোট দুই বোন।

১৯৮৮ সালে ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয় সালমানের। এ ছবিতে সালমান খান পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। নায়ক হিসেবে সালমানকে দর্শক প্রথম দেখতে পান ১৯৮৯ সালে সুরজ বারজাতিয়ার ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ ছবিতে। তিন দশকের ক্যারিয়ারে অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন সালমান খান। ১৯৯০ সালে সেরা অভিনেতা ও ১৯৯৯ সালে সেরা পার্শ্ব  অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জেতেন সালমান খান। এ ছাড়া তিনি একাধিকবার স্টার স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড, আইফা অ্যাওয়ার্ড, জি সিনে অ্যাওয়ার্ড, স্টারডাস্ট সহ অনেক পুরস্কার ও স্বীকৃতি পেয়েছেন।

‘বিং হিউম্যান’ নামে সালমানের একটি দাতব্য সংস্থা আছে। টি-শার্টসহ বেশকিছু পণ্য তৈরি করে ‘বিং হিউম্যান’ ব্র্যান্ডের অধীনে বিক্রি করা হয়। এবং বিক্রি হওয়া পণ্য থেকে যে আয় হয় তার একটি অংশ সালমান খান সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে খরচ করেন।

 

সাইফ আলী খান

অভিনেতা সাইফ আলী খানকে কখনো কখনো বলিউডের ‘চতুর্থ খান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তার মা অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর, বাবা ক্রিকেটার মনসুর আলী খান পতৌদি। তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে যশ চোপড়ার পরম্পরা (১৯৯৩) চলচ্চিত্র দিয়ে। তিনি ১৯৯৪ সালে ‘ইয়ে দিল্লাগি’ ও  ‘ম্যাঁয় খিলাড়ি তু আনাড়ি’ চলচ্চিত্র দিয়ে সফলতা অর্জন করেন। ২০০৪ সালে তিনি ‘হাম তুম’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।  এরপর ২০০৫ সালে পরিণীতা ও সালাম নমস্তে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নিজেকে বলিউডের অন্যতম প্রধান অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

আরও যত খান

ইউসুফ খান (দিলীপ কুমার), সঞ্জয় খান, ফিরোজ খান, আকবর খান, ইরফান খান, কাদের খান, আমজাদ খান, আরবাজ খান, সোহেল খান, জায়েদ খান, আইয়ুব খান, ফারদিন খান, ফয়সল খান, ইমরান খান, মাজহার খান, নাসির খান, সেলিম খান, শাহবাজ খান, মেহবুব খান প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর