জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও একুশে পদকজয়ী অভিনেত্রী দিলারা জামান। এই ৮৩ বছর বয়সী তরুণীর দুর্দান্ত অভিনয় এখনো দর্শককে মুগ্ধ করে। সাম্প্রতিক অভিনীত সিনেমা, নাটকসহ নানা বিষয়ক ব্যস্ততা নিয়ে এই গুণী অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন-পান্থ আফজাল
কেমন আছেন? এর আগে শরীরে আঘাত পেয়েছিলেন। এই অবস্থায় নিয়মিত কাজ করতে পারছেন?
জি, এখন একটু ভালো আছি। এমনিতেই শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা সমস্যা। অন্যদিকে গত বছর বাসায় পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছিলাম। সেই কারণে এখনো কোমরে ব্যথা হয়। কাজ করতে একটু কষ্ট হয়। তারপরও শুকরিয়া যে ভালো আছি। নিয়মিত শুটিং করছি। অভিনয়ই আমার পেশা ও নেশা। অভিনয় আমার কাছে অক্সিজেনের মতো। এই একটি কাজ করেই শান্তি পাই। তাই যতদিন বাঁচি অভিনয় করে যেতে চাই।
‘রাজকুমার’-এ শাকিব খানের দাদির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
খুব ভালো ছিল। আনন্দ নিয়ে কাজ করেছি। সবাই আমাকে সম্মান করেছেন। এটাই ভালো লাগার।
সম্প্রতি সিয়াম-বুবলীর ‘জংলি’তে বুবলীর দাদির চরিত্রে অভিনয় করলেন...
‘জংলি’র গল্পটি খুবই ভালো। আমার চরিত্রটিও সুন্দর। তাই করতে রাজি হয়েছি। আর প্রসূণ রহমানের ‘শিকড়’-এ যুক্ত হয়েছি। আশা করছি ভালো হবে কাজটি।
এই বয়সেও প্রচুর কাজে ব্যস্ত। যেভাবে অভিনয় করছেন, তা সবার কাছে ঈর্ষণীয়। এত এনার্জির উৎস কী?
হা হা হা...কাজ না করলে কি হবে! ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি। তাই অভিনয়ই আমার কাজ, ভালোবাসা। সৎভাবে ইনকাম করি। সবাই তো আমাকে আর আমার অভিনয়কে ভালোবাসে।
প্রচ্ছদকন্যা হয়ে আবার কি দেখতে পাব?
এবার আর না! অনেক হয়েছে। অনেকেই মজা করে বলছে, কেন তুমি আমাদের বাজার নষ্ট করছ! (মৃদু হাসি)।
মা ডাক শুনতে কেমন লাগে?
ভীষণ ভালো লাগে! আমি সবার মা হয়ে আজীবন বেঁচে থাকতে চাই।
এ সময়ের নাটক নিয়ে অভিমত কী?
তিন-চারজনকে নিয়ে নাটক বানাচ্ছেন নির্মাতারা। বাজেট স্বল্পতা দেখিয়ে নির্মাতারা দিন দিন চরিত্র কাটছাঁট করছেন। সেই পারিবারিক আবহ আর নাটকে নেই।
শিল্পীদের শৃঙ্খলাবোধ সম্পর্কে মন্তব্য কী?
শৃঙ্খলাবোধ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা উচিত। অভিনয়, শুটিং সময়জ্ঞান মেনে চলা দরকার।
সম্মানী নিয়ে কী বিড়ম্বনায় পড়তে হয়?
কাজ শেষ হওয়ার পরও সম্মানী দেওয়ার বেলায় খবর থাকে না কিছু নির্মাতার। আবার যদিও পেমেন্ট দেন, ডেট নেওয়ার জন্য। এই বিষয়ে আর কী বলব! তবে এসব নিয়ে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। আমি এক জীবনে অনেকের ভালোবাসা পেয়েছি। রাষ্ট্রের কাছে, এ দেশের মানুষের কাছে আমি সব সময় সম্মান পেয়েছি। এসবই অমূল্য পারিশ্রমিক আমার কাছে। এ অনুভূতি নিয়েই আমি বেঁচে থাকতে চাই।
অভিনয়জীবনে সেরা প্রাপ্তি?
দর্শক ও সহকর্মীদের ভালোবাসা। তাঁরা আমাকে ভালোবাসেন বলেই হয়তো বিদেশে স্থায়ী হইনি। আমি শুধু অভিনয়টাই করে যেতে চাই।