দেশের টেলিভিশন ভুবনের নন্দিত মুখ আজিজুল হাকিম। তাকে বলা হয়ে থাকে শোবিজ অঙ্গনের অন্যতম ক্লিন ইমেজের মানুষ। মঞ্চে অভিনয় দিয়ে শুরু করলেও টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে তিনি অনবদ্য। বহু বছর ধরে তিনি পর্দায় কাজ করছেন। এ করপোরেট মানুষ এখনো সময়-সুযোগ হলে অভিনয় করছেন নাটক, ওটিটি ও চলচ্চিত্রে। তার সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
সেন্সর বোর্ডে জায়গা করে নিয়েছেন। কেমন বোধ হচ্ছে?
এত বছরের ক্যারিয়ারে বড় প্রাপ্তি ও গর্বের। এখন সেই সেন্সর বোর্ডের সদস্য হয়ে আমি বিভিন্ন ধরনের সিনেমা উপভোগ করতে পারব। এতে সম্মানিতবোধ করছি।
অভিনয়ের পাশাপাশি একটি নামি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন...
এর আগেও অনেক প্রতিষ্ঠানেই কাজ করার প্রস্তাব ছিল। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, এ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভেবেছে, তাই তাদের সঙ্গেই কাজ শুরু করেছি। আর সকাল ৯টা বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস করতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই, তবে রেগুলার অফিস করতেই হয়। চাকরিকে গুরুত্ব দিয়ে তারপর যে সময়টুকু পাই তা অভিনয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। আসলে চাকরির পাশাপাশি সময় পেলে এবং শরীর ভালো থাকলে অভিনয় করছি।
‘দেয়ালের দেশ’-এ কাজ করেছেন। যেটা মুক্তির পর প্রশংসিতও হয়েছে। পুরো জার্নির অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
এক কথায় চমৎকার! আর এ ছবির গল্পটা অসাধারণ ছিল। এ ধরনের গল্প নিয়ে চলচ্চিত্রে কাজ করাটা আমরা সাধারণত কম দেখি। এ ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করাটা কিন্তু অন্য ধরনের চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জটি ডিরেক্টর মিশুক মুনি গ্রহণ করে বানিয়েছেন। এটি ছিল বাংলাদেশ সরকারের অনুদানের একটি ছবি। এদিক থেকেও বিবেচনা করলে মনে হয় যে গল্পের যে বৈচিত্র্য ও নির্মাণশৈলী আর প্রত্যেকের অসাধারণ অভিনয় ছিল ছবিটির প্লাস পয়েন্ট।
বাইরে যেমন দেখা যায় বুড়ো বয়সেও নায়কের চরিত্রে অভিনয় করছেন অনেকে। এ দেশের নির্মাতারা এ ধরনের চ্যালেঞ্জ কেন নিতে চান না?
আমি একজন অভিনেতা। এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারব না। তবে আমি যেটা মনে করি, নায়ক মানে হচ্ছে ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র। যিনি মূল চরিত্রে অভিনয় করেন বা কেন্দ্রীয় চরিত্রে যে নারী অভিনয় করেন তিনি হচ্ছেন নায়িকা। তার আসলে কোনো বয়সের বাঁধাধরা বা ব্যারিয়ার থাকা উচিত নয়। আমরা তা হলিউডের ছবিতে দেখেছি, বলিউডেও দেখি। তবে গল্পটা হচ্ছে মূল। এ গল্পটা যদি পরিপূর্ণভাবে আমি দর্শকের সামনে উপস্থাপন করতে পারি বা করতে চাই, তাহলে সেই গল্পের প্রয়োজনে যে চরিত্র, সেটির বয়স কী সেটা কোনো ম্যাটার করে না। চরিত্রটি যদি প্রধান হয় এবং সেই চরিত্রটির বয়স যদি ৭০ বছর হয় তাহলে ৭০ বছরের একজন অভিনয়শিল্পী অভিনয় করবেন। সেটি হচ্ছে কেন্দ্রীয় চরিত্র, সেটি গল্পের নায়ক। তো ওই ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করার ট্রেন্ডটা আমাদের দেশে এখনো চালু হয়নি। আমি জানি না, কেন তারা চ্যালেঞ্জ নিতে চাচ্ছে না! আমাদের দেশে কিন্তু অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী রয়েছেন যাদের ওপর ডিপেন্ড করা যায়।
ওটিটিতে কাজ করছেন বেশি ভিকি জাহেদের সঙ্গে...
ভিকি সম্পর্কে বলতে চাই, সে এমন একজন ডিরেক্টর যে গল্পটাকে খুব চমৎকারভাবে উপস্থাপন করতে পারে। গল্পের টুইস্টটা কী তা সে গল্পের মধ্যে দিতে পারে। ওর প্রথম যে কাজটি করেছি তা সিরিজ ‘দ্য সাইলেন্স’। এটির মধ্যেও আমি দেখেছি যে প্রত্যেকটা এপিসোডের মধ্যে পরবর্তী এপিসোডের যে আকর্ষণ তা তুলে ধরতে সক্ষম সে। এটা আমার কাছে ভালো লাগে। আর গল্প বলার যে মুনশিয়ানা তা তার মধ্যে আছে। আমি ভিকির প্রশংসা করছি এ কারণে যেহেতু তার সঙ্গে আমার কাজ হয়েছে বেশি। আমি ভিকির সঙ্গে কাজ করেছি একটি ওয়েব ফিল্মে। তারপর দুটি সিরিয়াল। ‘আরারাত’-এর যখন প্রথম স্ক্রিপ্ট পড়ি তখনই আমি ফোন করে বলি এটি অসাধারণ এবং এ গল্পে কাজ করার যে আগ্রহ, কাজ করতে গিয়ে নিজেকে ডেডিকেটেড করা তা একজন অভিনেতা হিসেবেই করেছি।
সামনে ঈদ। কেমন যাবে এ উৎসবটা?
ঈদ কেমন যাবে তা তো এ মুহূর্তে বলা মুশকিল। তবে ঈদের দিন এলে একটা প্ল্যান থাকে বা পূর্বপ্রস্তুতি থাকে। সবাইকে নিয়ে একটা আনন্দের মধ্যে সময় কাটে। তা সামনের উৎসবেও কাটবে আশা করছি।