ঢালিউডে এমন কিছু অভিনেতা ছিলেন বা আছেন যারা দীর্ঘ সময় খলনায়ক হিসেবে পর্দা কাঁপালেও সিনেমায় তাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল নায়ক হিসেবে। নায়ক থেকে খলনায়ক হয়ে দর্শক মাতানো সেসব অভিনেতার কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

খলনায়ক চরিত্রে অভিনেতা হিসেবে রাজীব ছিলেন অনন্য। ভরাট কণ্ঠ, দৈহিক গঠন এবং ভযংকর সব অঙ্গভঙ্গির কারণে যে কোনো নির্মাতার কাছে তিনি ছিলেন প্রথম পছন্দ। খলনায়ক হিসেবে পরিচিত এবং জনপ্রিয় হলেও সিনেমায় রাজীবের পথচলা নায়ক হিসেবে।

১৯৮১ সালে ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’ সিনেমায় প্রথম তিনি নায়ক হয়ে অভিনয় করলেও তারকাখ্যাতি পান ১৯৮২ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘খোকনসোনা’ সিনেমার মাধ্যমে। আর ১৯৮৪ সালে আমজাদ হোসেনের ‘ভাত দে’ ছবির মাধ্যমে সফল খলনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু তার। অভিনয়ের জন্য মোট চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এ অভিনেতা।

খলিল

প্রায় ৮০০ সিনেমায় অভিনয় করা খলিলের যাত্রা শুরু হয়েছিল নায়ক হিসেবে। ‘সোনার কাজল’ সিনেমায় তিনি প্রথম নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। এরপর ‘প্রীত না জানে রীত’, ‘সঙ্গম’, ‘জংলি ফুল’সহ আরও কয়েকটি সিনেমায় নায়ক হিসেবে দেখা গেছে তাকে। পরবর্তীতে এস এম পারভেজ পরিচালিত ‘বেগানা’ সিনেমার মাধ্যমে খলনায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন খলিল। এরপর প্রায় ৫০ বছরের অভিনয় জীবনে দর্শকনন্দিত খলনায়ক হিসেবেই অভিনয় করে গেছেন খলিল।

সাদেক বাচ্চু

১৯৮৫ সালে ‘রামের সুমতি’ সিনেমার মাধ্যমে ঢাকাই সিনেমায় নায়ক হিসেবে অভিষেক হয়েছিল সাদেক বাচ্চুর। খলনায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন ‘সুখের সন্ধানে’ সিনেমায়। প্রায় ৫০০ সিনেমায় অভিনয় করে গেছেন এ অভিনেতা।

২০১৮ সালে ‘একটি সিনেমার গল্প’ চলচ্চিত্রে খলচরিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন সাদেক বাচ্চু।

বাবর

বাবর। সত্তর দশকে সিনেমায় নায়ক হিসেবেই আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি। আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘বাংলার মুখ’ সিনেমায় তিনি প্রথম নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন। পরবর্তীতে নায়করাজ রাজ্জাক প্রযোজিত এবং জহিরুল হক পরিচালিত ‘রংবাজ’ সিনেমার মাধ্যমে খলনায়ক হিসেবে দর্শকদের সামনে উপস্থিত হন বাবর। ‘রংবাজ’ সিনেমার বিশাল সাফল্যের পর খলনায়ক হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হন এ অভিনেতা। বাবর প্রায় ৩০০ ছবিতে অভিনয় করেছেন।

মিশা সওদাগর

১৯৮৯ সালে ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘চেতনা’ সিনেমায় নায়ক হিসেবে অভিনয়ে অভিষেক ঘটেছিল মিশা সওদাগরের। এ ছাড়া ‘অমরসঙ্গী’ সিনেমায়ও নায়ক হিসেবে দেখা গেছে মিশাকে। পরবর্তীতে ‘আশা ভালোবাসা’ সিনেমায় খলনায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ বছরের ক্যারিয়ারে মিশা সওদাগর ৯০০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। তিনি অসম্ভব জনপ্রিয় একজন খলনায়ক।

ওমর সানী

১৯৯২ সালে নুর হোসেন বলাই পরিচালিত ‘এই নিয়ে সংসার’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে নাম লেখান এ অভিনেতা। কিন্তু তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা ‘চাঁদের আলো’ মুক্তি পায় ১৯৯৩ সালে।

এরপর ১৯৯৪ সালে দিলীপ বিশ্বাসের সুপারহিট ‘দোলা’ সিনেমায় প্রথমবারের মতো মৌসুমীর বিপরীতে অভিনয় করেন ওমর সানী।

২০০৫ সালে শাকিব খান অভিনীত ‘ওরা দালাল’ সিনেমায় প্রথমবারের মতো খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন। এরপর বেশ কয়েকটি সিনেমায় খলনায়ক হিসেবে বড় পর্দায় দেখা গেছে ওমর সানীকে।