শনিবার, ১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

শুদ্ধ গানের সঙ্গে থাকতে চাই

শুদ্ধ গানের সঙ্গে থাকতে চাই

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রবি চৌধুরী। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের এ মানুষটি ৩৫ বছর ধরে গানের সঙ্গে নিজের প্রাণ জড়িয়ে রেখেছেন। শুধু তাই নয়, আপন দরদি কণ্ঠের ঝংকারে ঢেউ তুলেছেন শ্রোতাদের হৃদয়ে। বর্তমানে এই শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পীর গান নিয়ে কেমন চলছে পথচলা- তা জানতে তার মুখোমুখি হয়েছেন -আলাউদ্দীন মাজিদ

 

কেমন আছেন?

এই তো বেশ ভালো আছি। পরিবার নিয়ে কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে এসেছি। সমুদ্রের বিশালতা বুকে ধারণ করে মহা কিছু সৃষ্টির কথাই ভাবছি।

 

কিন্তু গান থেকে তো অনেক দিন ধরেই দূরে আছেন, কেন?

হ্যাঁ, দুই বছর ধরে গান থেকে একটু দূরে আছি ঠিক, তবে খুব যে দূরে তা কিন্তু নয়। হয়তো নিজের কোনো অ্যালবাম প্রকাশ করছি না। কিন্তু দেশ-বিদেশে কনসার্ট আর স্টেজ শো নিয়ে খুব ব্যস্ত আছি।

 

অ্যালবাম নিয়ে কখন ফিরছেন?

শিগগিরই ফিরব। আমার স্টুডিওটি নতুন করে সাজাচ্ছি, নচিকেতাসহ অনেকের সঙ্গে আমার বেশকিছু আনরিলিজড গান জমা রয়েছে। সেগুলো রিলিজ করব। উর্দুতে আমার একটি মৌলিক গজলের অ্যালবামও প্রকাশ করব।

 

সর্বশেষ কোন গানটি প্রকাশ করেছিলেন?

তা দুই বছর আগে ‘জাতীয় বেয়াদব’ শিরোনামে নিজের একটি গান প্রকাশ করেছিলাম। গানটি ছিল খুবই শিক্ষণীয়। কারণ এতে যারা গুরুর সঙ্গে বেয়াদবি করে তাদের জন্য সতর্কতামূলক মেসেজ ছিল। গানটির শিরোনাম ছিল- ‘কেউ কি আছেন ভাই, আমি গুরুর কাছে গান শিখতে চাই।’ গানটি বেশ সাড়া জাগিয়েছিল এবং প্রচুর ভিউ হয়েছিল।

 

গানের সার্বিক অবস্থা এখন কেমন?

ভালো-মন্দ মিলিয়েই চলছে, গান ভালো হলে শ্রোতারা তা গ্রহণ করছে, মন্দ হলে ছুড়ে ফেলছে, এই তো।

 

শিল্পীরা গানের সম্মানি কি যথাযথভাবে পাচ্ছেন?

না, সব শিল্পী গানের সম্মানি সঠিকভাবে পাচ্ছেন না। আমি নিজেই পাচ্ছি না। অথচ আইন করা হয়েছে শিল্পী, গীতিকার, সুরকার, কোম্পানি সবাই যেন ন্যায্য সম্মানি পান। এই না পাওয়াটা সবাইকে গানের প্রতি নিরুৎসাহিত করছে, যা সত্যি দুঃখজনক।

 

নতুন যারা গানে আসছেন তারা কেমন করছেন?

যারা নতুন আসছেন তারা ভালোই করছেন। কিন্তু তাদের স্থায়িত্ব কম। কারণ নতুনদের বেশির ভাগই ভিউ বাণিজ্যের পেছনে ছুটছেন। ভিউ কিন্তু গানের প্রকৃত মানদণ্ড নির্ধারণ করে না। দেখা গেছে, একটি ভালো গানের ভিউ ১ হাজার আর একটি বাজে গানের ভিউ হয়ে গেল ১ কোটি। এ অবস্থায় গানের মানদণ্ড কীভাবে নির্ণয় হবে।

 

আগের গান কীভাবে স্থায়িত্ব পেত?

গুরুর শিক্ষা এবং যথাযথ চর্চা, এ দুই-ই একটি ভালো গান সৃষ্টির নেপথ্যে কাজ করে।

এ কারণেই আমার নিজের অনেক গান এখনো দর্শকের মুখে মুখে ফিরে। একটি গানের কথাই বলি, গানটি শুধু দেশে নয়, বিদেশেও আলোড়ন তুলেছিল। ১৯৯৯ সালে কাতারে স্টেজ শো করতে গিয়েছিলাম। তখন সেখানকার এক অ্যারাবিয়ান দর্শক দেখলাম বাংলায় আমার গানটি গাইছে। তা দেখে তাকে নিয়েই দুজনে স্টেজে গানটি গাইলাম। গানের কথা ছিল- ‘তোমরা পাগল দেখলে পাগল বল, আসল পাগল চিনলে না, লম্বা চুল রাখিলে ও মন পাগল বলে না।’

 

গান নিয়ে আপনার আগামী স্বপ্ন কী?

আমি শুদ্ধ গানের সঙ্গে থাকতে চাই। মেলোডি গান করে যেতে চাই। আমি মনে করি গানের কোনো ভাষা নেই। গান হলো সর্বজনীন। তাই আমাদের দেশের কৃষ্টি কালচার-সংবলিত গানকে দেশ-বিদেশের মাটিতে মৌলিকত্ব দিয়ে কালজয়ী করে রাখতে চাই।

সর্বশেষ খবর