শীর্ষ অভিনেতা মোশাররফ করিম। দুই যুগ ধরেই শোবিজে কাজ করছেন সদর্পে। একসময় সরব ছিলেন মঞ্চে। বেশ কয়েক বছর হলো দুই বাংলায় ওটিটি ও চলচ্চিত্রে কিছু চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করে হইচই ফেলে দিয়েছেন এই ভার্সেটাইল অভিনেতা। এ তারকার সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে শোবিজ প্রতিবেদকের কথোপকথন-
বিশ্রামের জন্য ছুটি কবে হবে?
ঈদের জন্য টানা কাজ করেছি। এবার বিশ্রামের পালা। বড় একটা ছুটি নিচ্ছি। অনেক দিন কাজে থাকব না। আসলে নিজেকে সময় দেওয়াটা দরকার। এই ছুটির দিনগুলো পরিবারের সঙ্গেই থাকব।
ঈদে ২৫টির মতো নাটক করেছেন। আর কী কাজ করেছেন?
নুহাশ হুমায়ূনের সঙ্গে কাজ করেছি। কিছু ওটিটির কাজও করেছি। সিরিজ সামনে আরও কিছু করব। এই তো।
ভক্তকে ‘চক্কর’-এ ফেলবেন কবে?
এটা নির্মাতা-প্রযোজকের হাতে। তারাই সিদ্ধান্ত দেবেন।
আপনি চরিত্রের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেন না...
একদম ঠিক। অনেক গল্প আছে। একবার অরণ্য আনোয়ারের এক কাজে, অন্য আরেকটি কাজেও নদী সাঁতরে পার হয়েছিলাম কাজটি ভালো হওয়ার জন্য।
পূর্বে শিল্পের বিনিময় প্রথা ওপার বাংলায় তেমন করে ছিল না...
সেটা সত্যি। তেমন করে ছিল না। এটা হতে পারে যে আমাদের কাজ, অভিনয় সম্পর্কে ওখানকার মানুষের তেমন ধারণা ছিল না। সেটা না থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ ওখানে আমাদের কোনো চ্যানেলই চলত না। এখনো কিন্তু চলে না। কিন্তু এই ইউটিউব আসার পর এর মাধ্যমে প্রচুর দর্শক আমাদের কাজগুলো দেখল। এরপর ওটিটি, অ্যাপসেও দেখল। আমাদের কাজগুলো তাদের ভালো লাগল। সেখান থেকে প্রচুর আগ্রহ তৈরি হলো। মূল কথাটা হচ্ছে দর্শক। দর্শকের যখন আগ্রহ তৈরি হয় তখন নির্মাতাদেরও আগ্রহ তৈরি হতে থাকল। তারা ভাবল এখানকার শিল্পীদের নিয়েও ভালো কাজ করা যায়। তবে ব্রাত্যদার আমাকে নিয়ে আগ্রহ তৈরি হলো নূর ইমরান মিঠুর ‘কমলা রকেট’ দেখার পর। ভালো লাগল তার। এরপর তার সঙ্গে কাজ করাটা শুরু হলো।
‘গুকাকু’র কাজটি হবে?
হতে পারে। তবে কাজটি আটকে আছে। গল্পটি খুব দারুণ ছিল। অসাধারণ।
ওটিটি প্রসঙ্গে কী বলবেন?
আসলে যেই কাজগুলো আমরা করি সেটি ইউটিউব বা টেলিভিশন নাটকের জন্য তার চেয়েও ওটিটির যত্নটা আরেকটু বেশি। যত্নটা বেশি কারণ খরচটা আরেকটু বেশি নিতে পারছে। সময়টা একটু বেশি পাওয়া যাচ্ছে এবং আগে থেকেই একটা কনটেন্ট নিয়ে প্রচুর ভাবা হচ্ছে। পুরো গল্পটারই ডিটেইলস ধরা হচ্ছে। প্রত্যেকে প্রত্যেকের সেক্টর থেকে ভাবছেন। যে কারণে কাজগুলো ভালো হচ্ছে। তবে আমি চাই ওটিটিতে আরও অন্য ধরণের কাজ হোক। খুব চাই।
মহানগরের সিক্যুয়ালে ফের দেখা যাবে?
এটা আমি এখনো জানি না। আর এ বিষয়ে নিপুণ বিস্তারিত বলতে পারবে। তাকে জিজ্ঞেস করুন।
সবাই বলে আপনি অনেক ডিমান্ডেবল। কথাটি কতটা সত্য?
না, আমি তো উল্টোটা। আমি ডিমান্ড-টিমান্ডের মধ্যে নাই। থাকে না যে আমি সেটে গেলে এই লাগবে, সেই লাগবে, এটা-ওটা! আমার এটা একদমই নাই। হয়তো অনেক সময় জিজ্ঞেস করে, ভাই কী খাবেন? তখন মনে করতে পারি না কী খাব আমি! আমি আসলেই জানি না কী খাব! কখনো কিছু মনে করতে না পেরে বলে দিই, মুড়ি নিয়ে আসো, একটু গুড় পেলে দিও।
নাটক, সিনেমা, ওটিটি কনটেন্ট সবই কি সমানতালেই চলবে?
চলছে তো। খারাপ চলছে না। ভালোই লাগছে। একসময় তো আমি মঞ্চের মানুষও। আমি এভাবে চলতে পছন্দ করি। আমার কাছে মনে হয় না, এটা ওচ্ছুত, এটাকে বাদ দিতে হবে। বা এইটাই শুধু করে যেতে হবে। নাটকের বাজেট ওটিটির মতো না হলেও নাটকে কিন্তু এখনো মহৎ কিছু গল্প থাকে। একটা নীতির বা আদর্শের জায়গা থেকে গল্প বলা হয়। হয়তো এখানে অল্প টাকা। কিন্তু বলার চেষ্টা থাকে।
গায়ক হিসেবেও পরিচিত আপনি। সিনেমায় কোনো গান করেছেন?
একটি সিনেমায় গান করেছি। কিন্তু আমি যে খুবই সেটিসফাইড তা বলব না। কারণ আমি তো সিঙ্গার না। একদম ঠিকঠাক জায়গায় লাগে, সেটার দাবিও আমি করব না। কিন্তু ডিরেক্টর এই গাওয়াটাই চাইলেন। বললেন, এই গলাটাই আমার লাগবে। তখন বাধ্য হয়েই গাওয়া আর কি! আমারই লেখা।
নির্মাণে আসবেন?
আমি লক্ষ্য স্থির করে কোনো কাজ করি না।