শিরোনাম
রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

আমার অর্ধেক পরিবার বাংলাদেশে

আমার অর্ধেক পরিবার বাংলাদেশে

কলকাতার অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। নির্মাতা ও গায়ক হিসেবেও রয়েছে তার সমান সুখ্যাতি। দুই বাংলায়ই তিনি ভীষণ জনপ্রিয়। দেশের পর্দায় আসছে পরমব্রতের নতুন সিনেমা ‘আজব কারখানা’। এ ছবিটি সারা দেশে মুক্তি পাবে আগামী ১২ জুলাই। শবনম ফেরদৌসী পরিচালিত এ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি, যেখানে তাকে রকস্টাররূপে দেখা যাবে। এ সিনেমা মুক্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কলকাতা থেকে ঢাকায় উড়ে এসেছিলেন তিনি। সেসময় তার একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- পান্থ আফজাল

 

বাংলাদেশে বহুবার এসেছেন। তবে এবারের জন্মদিনে আজব কারখানার সৌজন্যে ঢাকায় আসাটা কতখানি আলাদা মনে হচ্ছে?

‘বাংলাদেশে তো অনেকবার এসেছি’- কথাটা শুনলে একেবারে অতিথির মতো এসেছি বলে মনে হয়। ব্যাপারটা কিন্তু তা না! বাংলাদেশে এসেছি অর্থাৎ যাতায়াতটা খেয়াল থাকে না। এতটাই বেশি আসা হয়েছে বলে। আলাদা করে কোথাও গেছি এমনটা তো নয় জিনিসটা। তবে হ্যাঁ, যেরকম বিচরণ করি সব জায়গায়, সেরকমই আর কি! আর এবারের এ ‘আজব কারখানা’ নিয়ে ঢাকায় আসাটা খুবই ইন্টারেস্টিং; কারণ ‘আজব কারখানা’ একটা ছবি যেটা আমরা প্রায় চার বছর আগে শুট করেছি। অতিমারির কারণে ছবিটি মুক্তি ও অন্যান্য কাজ কিছু সময়ের জন্য স্থগিত ছিল। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, ছবিটি এ সময়ে আবার মুক্তি পেতে চলেছে জুলাই মাসে। সেটার প্রচারের কারণেই এবার আসা আমার এখানে। আমার শিডিউল এমন দাঁড়িয়েছিল যে, আমার জন্মদিনের দিন ঢাকায় ট্র্যাভেল করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। সেটা অবশ্য ভালোই হয়েছে। কলকাতা ছাড়া জন্মদিনে আর কোথাও থাকতে চাই যদি আমি প্রেফার করি সেটা অবশ্যই ঢাকা।

 

এ পর্যন্ত যারাই এসেছেন তারা জানিয়েছেন তাদের আত্তিক সম্পর্ক আছে এদেশের সঙ্গে। আপনারও কি এমন সম্পর্ক আছে?

আমার অর্ধেক পরিবারই এখানে, বাংলাদেশে! আমার মাসি থাকেন এই মগবাজারে। বন্ধুবান্ধব তো ছেড়েই দিলাম...হা হা হা। সরাসরি হয়তো রক্তের সম্পর্ক নয় কিন্তু কিছু কম নয়, সেই রক্তের সম্পর্ক থেকে এরকম অগণিত মানুষ আছেন। আবার সরাসরি রক্তের সম্পর্কও আছে। সেটা তো বলাই বাহুল্য তবুও বলছি তো। ওই যে আপনি বললেন, অনেকবার ঢাকায় এসেছি, এটা এ সম্পর্কের জন্যই বারবার আসা।

 

‘তুফান’ একদম সুপারহিট! যারা তুফান বানিয়েছেন তারা সবাই আমার খুবই ইয়ার বন্ধু, অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ...

 

দীর্ঘ ৪ বছর পর আজব কারখানা মুক্তি পাচ্ছে। এ সময়ে রিলিজ দেওয়ার সিদ্ধান্তটা ঠিক বলে মনে হচ্ছে?

এটা সত্যিই বলা খুবই মুশকিল। কারণ বড় পর্দায় গিয়ে দেখুন কভিডের পর থেকে মানুষ এক ধরনের ছবি দেখতে চাইছে। সেটা আমরা সব ভাষার ছবির ক্ষেত্রেই দেখছি। এখন এটা বলা খুব মুশকিল যে এ বিশেষ ছবিটি সেটা এক ধরনের ছবি, বড় পর্দায় গিয়ে মানুষ দেখবেন কি না-ই ভবিষ্যৎ বাণীটি করা একেবারেই অসম্ভব। আমি একটা উদাহরণ দিয়ে বলছি, এই তো দেড় মাস আগে পশ্চিম বাংলায় একটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। এটা আমাদের গল্প বলে। পরিচালকের প্রথমবার এবং খুব বেশি ব্যয়ে নির্মিতও নয়। খুব বেশি জাঁকজমক আছে ছবিতে, সেটা একেবারেই না। খুব সাদামাটা, ছোট-খাটোভাবে মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। সেই ছবিটি হঠাৎ সবাইকে চমকে দিয়ে মারাত্মক ভালো ব্যবসা করে। তাই এটা বলা খুবই মুশকিল। আমাদের কাজ হলো যদি কোনো জার্নিটা আমরা বিশ্বাস করি সেটা যথোপযুক্তভাবে পেশ করা। সেই নির্মাণ, সেই অভিনয় এবং সর্বোপরি সেই ন্যারেটিভটা অর্থাৎ সেই গল্পটাকে যদি মানুষ আইডেন্টিফাই করতে পারে, কোথাও যদি সংযোগ খুঁজে পান তাহলে তারা মনে হয় দেখতে যাবেন। আশা তো করব সেটা এ ছবির ক্ষেত্রেও হবে।

 

যে সময় শাকিব খানের তুফান চলছে, সে সময়ে আজব কারখানা কতখানি দর্শক টানবে?

‘তুফান’ একদম সুপার হিট! প্রথমত আমি তুফানের নির্মাতাদের অভিনন্দন জানাতে চাই। কারণ যারা তুফান বানিয়েছেন তারা সবাই আমার খুবই ইয়ার বন্ধু, অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। ওই বাংলার এসভিএফ আছে, যাদের সঙ্গে আমি নিয়মিত কাজ করি, ইনফ্যাক্ট এইতো কিছুদিন আগে যে সিনেমাটির শুটিং করেছি সেটা ওদেরই ছবি।

বাংলাদেশে রেদোয়ান রনির চরকি আছে, যাদের সঙ্গে আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। আর আলফা আই আছে, যারা আমার বহু পুরনো দিনের পরিচিত। অনেকদিনের পরিচিত শাহরিয়ার শাকিল। তারপর মিমি আমার বন্ধু বলি বা সহকর্মী বলি, চঞ্চল ভাই আছেন, নাবিলা আছেন-যাদের আমি চিনি। আর শাকিবকে আমি চিনি বাট অতটা চিনি না। আমাদের দুই-তিনবার আলাপ হয়েছে, কথা হয়েছে ওইটুকুই আর কি! কিন্তু প্রথমত হচ্ছে যে, পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক বাংলা ছবি না চললে কিন্তু আমরা যে ধরনের ছবি বানানোর চেষ্টা করি সেটা সফল হবে না। কারণ বাণিজ্যিক বাংলা ছবি হচ্ছে একটা দেশের ইকোনমিটাকে ধরে রাখে। তাই আমার থেকে খুশি কেউ নয় তুফান এরকম চলার ফলে।

 

বাংলাদেশে নতুন কোনো কাজের প্ল্যান করেছেন কি না?

প্ল্যান তো অনেক কিছুই আছে। সেই প্ল্যানের সবটা আমি বলতেও পারব না এখন। তবে নিশ্চয়ই ভাবনা-চিন্তা তো আছেই কিছু।

 

এ সময়ে যেসব কাজ নিয়ে ব্যস্ততা রয়েছে সেগুলো বলা যাবে কি?

নিশ্চয়ই। আমার পরিচালিত তিনটি ছবি আমি শেষ করেছি একসঙ্গে। এসভিএফ-এর সঙ্গে আমার একটি ছবি ‘এই রাত তোমার-আমার বলে’। অনেক দিন পর অপর্ণা সেন-অঞ্জন দত্তকে আমি একসঙ্গে আনতে পেরেছি সহঅভিনেতা-অভিনেত্রী হিসেবে। এবং অঞ্জন দত্তের হাত ধরেই আমার অভিনয়জীবন শুরু। গুরু বলা যেতে পারে আমার। অপর্ণা সেনও তাই। তাদেরকে পরিচালনা করতে পেরেছি, সেই ছবিটি মুক্তি পাবে শিগগিরই। তারপর আমারই একটি খুব পুরনো জনপ্রিয় ছবি ‘হাওয়া বদল’-এর দ্বিতীয় ভাগ শুট করেছি, সেটি আসবে শীতকালে। ‘এখানে অন্ধকার’ বলে আমি ও ঋত্বিক করেছি, সেটা আসবে। আর হিন্দিতে আমি একটি ছবিতে আমি মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছি। সেটা মুক্তির অপেক্ষায়। ‘গোলাবি’ বলে একটি ছবির শুট করছি এখন। হুমা কুরেশী এবং আমি রয়েছি। সেটি মুক্তি পাবে আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে। এবং পশ্চিম বাংলাতে আমি জাস্ট শেষ করলাম সৃজিত মুখার্জির সাম্প্রতিক ছবিটি ‘সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই’। আর ‘শেষের কবিতা’ অন্য ধরনের একটি কাজ। এ নিয়ে যখন দেখা হবে তখন বলব, ঠিক আছে?

সর্বশেষ খবর