সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
জন্মদিনে জয়া আহসান

আমি তো আমার মতোই আছি

আমি তো আমার মতোই আছি

তিনি পদ্মাপাড়ের নায়িকা; আবার গঙ্গাপাড়েও ঝড় তোলেন। দুই বাংলার সিনেমা দুনিয়ার অন্যতম তারকা এই তিনি। এ দেবী তার সৌন্দর্যে ও অভিনয়ে অবিরত দ্যুতি ছড়াচ্ছেন। তিনি জয়া আহসান, যে নামটাই সম্পূর্ণ পরিচয়ের জন্য যথেষ্ট। যার অনবদ্য অভিনয়ের ইন্দ্রজালে বিমোহিত সিনেমাপ্রেমীরা। কী এক সম্মোহনী শক্তিতে দর্শককে পর্দায় টানেন এ অপ্সরা! আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা নিয়ে মর্ত্যে এসে সাফল্যের পালক মেলে উড়ে বেড়াচ্ছেন।  আর বয়স? এ রহস্যময়ীর বয়সটাও তো রহস্যময়! এবারের জন্মদিনে তার কাছে বিভিন্ন রহস্যের উত্তর খুঁজেছেন- পান্থ আফজাল

 

জয়া আহসানের চিরতরুণ থাকার রহস্য কী?

কোথায়! মানে তরুণ কীভাবে রয়েছি জানি না। আমি তো আমার মতোই আছি। আর সময়টাকে এনজয় করাই আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে বড় বিষয়। 

 

জন্মদিন যায়, আবার ফিরে আসে...

সবাই ফেসবুক, টুইটারে এত সুন্দর করে নানা কথা বলে, চোখে পানি এসে যায়। চেনা-জানার বাইরে অচেনা-অপরিচিতরা এত মায়া নিয়ে লিখে, সত্যিই কান্না পায়। এসব মায়া-মমতার কারণে আরও কিছুদিন পৃথিবীতে বাঁচতে ইচ্ছা করে।

 

দিনটায় কেক কাটেন না, কেন?

২০১৭ সালের এই দিনে হোলি আর্টিজানের ঘটনার পর থেকে জন্মদিনে কোনো কেক কাটা হয় না। জঘন্যতম এ ঘটনা জীবনে কালিমা লেপে দিয়েছে। জানি না কবে এ ঘটনার ট্রমা থেকে বের হতে পারব। আমি সেদিনের ঘটনার কথা মনে করতে চাই না। তবুও জন্মদিন এলে শুধু মনে পড়ে যায়। একটা কালো অধ্যায় সামনে এসে পড়ে। তবে সাধারণত জন্মদিনে অনেক বছর ধরে রাস্তার কুকুরদের খাওয়াই। কারণ, এটা শুধু আমার একার জন্মদিন নয়, বাড়ির যে কারও জন্মদিনেই তাই করি। যত দূর মনে পড়ে জন্মদিনটা কখনোই সেভাবে ঘটা করে উদযাপন করা হয়নি। আর নায়িকারা জন্মদিনের কেক কাটে, এটা ভালো লাগে না, হাস্যকর লাগে।

 

জীবন থেকে তো অনেক বসন্ত চলে যাচ্ছে...

বসন্ত চলে যায়, বসন্ত তো আবার জীবনে আসে।

 

নায়িকাদের বয়স বাড়লে জনপ্রিয়তা কমে; কিন্তু জয়ার বেলায় উল্টোরহস্যটা কী?

যত বয়স হবে অভিজ্ঞতা আসবে, কপালে ভাঁজ পড়বে, সেই আঁকিবুকি, অভিজ্ঞতা নিয়েই কিন্তু সৌন্দর্যটা। আমার কাছে এটা আরও বেশি সুন্দর। কতদিন থাকতে পারি! এমন নয় যে, অনেকদিন জোর করে থাকব, দর্শক যদি অপছন্দ করে, বিরক্ত হয়ে যায় তখন আর কাজ করব না।

 

সবাই জয়ার প্রেমে পড়ে...

ওটা চরিত্রের প্রেমে পড়ে, আমার না। ব্যক্তি জয়াকে দেখলে কেউ প্রেমে পড়বে না। কারও ভালোও লাগবে না। ভক্তরা যেটা দেখেন সেটা জয়া আহসানের ইমেজ। ওটা জয়া আহসান না। জয়া খুব সাধারণ, কোনো রহস্য নেই। চরিত্রের জয়াকে দেখে সবাই ভাবে জয়া রহস্যময়ী।

 

সবচেয়ে ইউনিক গুণ কোনটি যার কারণে সবাই ভালোবাসে?

সেটা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আপনারাই বলবেন যদি কোনো গুণ থেকে থাকে। তবে আমি খুব বেশি কিছু ভাবি না যে, আমি এক্সট্রা অর্ডিনারি কোনো কিছু বা কোনো গুণ আছে আমার ভিতরে। তবে ভালো গুণ যদি থাকে সেটা ধীরস্থির থাকা। আর কোনো গুণকে আমি বিশেষ নম্বর দিতে পারছি না।

 

ব্যক্তি জয়া এবং অভিনেত্রী জয়ার পার্থক্য?

ব্যক্তি জয়া অনেক সহজ, সাধারণ। ব্যক্তিগতভাবে সেলিব্রেটিশিপটাকে পছন্দ করি না। আমি আজকে যে এখানে ক্যামেরার সামনে রংচং মেখে স্পটলাইটে আছি, এটাই জয়ার ইমেজ!

 

শিল্পীজীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া?

শিল্পী এক জীবনে নানারকম চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান। একই মানুষ কতরকম মানুষের চরিত্রে! এক জীবনে অনেক জীবন পান। অভিনয়শিল্পী না হলে এটা কি সম্ভব হতো?

 

জীবনের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য আছে?

আমি গন্তব্যে পৌঁছতে চাই না। গন্তব্যে পৌঁছে গেলেই শেষ। আমি জার্নিতেই থাকতে চাই।

 

ডিয়ার মা’-এর কাজ শেষ? আর ওয়েব সিরিজের কাজটি?

হুমম। অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর কাজটির শুটিং অনেক উপভোগ করেছি। আর একটি ওয়েব সিরিজ করেছি। যেটি বাংলাদেশে আমার প্রথম ওয়েব সিরিজ।

 

বলিউডে একটি কাজের পর অন্য কোনো কাজের কথা হচ্ছে?

সামনে হবে হয়তো। দুই-তিনটা কাজ হাতে রয়েছে সেগুলো আগে শেষ করব।

 

একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেনপূর্ণাঙ্গ প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে পাব?

সেভাবে ভেবে দেখিনি। প্রয়োজন হলে অবশ্যই করব, কাজের জন্য হলে গাইব।

 

দেশীয় ছবি নিয়ে আপনার অভিমত কি?

এখানে প্রফেশনাল আচরণের একটু অভাব আছে। তবুও প্রেমটা কিন্তু বেশি আমাদের ছবিতে পাওয়া যায়। হ্যাঁ, অনেক সময় দিন শেষে ছবিটা হয়তো ছবি হয়ে ওঠে না। এটাও ঠিক যে, এ দেশে প্যাকেজিংটা ভালো নয়।

 

সি-তে সিনেমা’ থেকে ‘রইদ’ করার কথা ছিলঅনুদানের টাকা ফিরিয়ে দিয়ে সিনেমা থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ কি?

ডিরেক্টর কাজটি শুরু করতে লম্বা সময় নিচ্ছিলেন। সরকারি অনুদানের তো কিছু নিয়মনীতি রয়েছে। সরকার এ ছবির জন্য যে ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছিল সেটা তো শুধু সরকারের টাকা না, আমার টাকাও না, এটি জনগণের টাকা। এটি আমার কাছে একটা বড় দায়। যেহেতু সময় লাগছে তাই মনে করলাম এটি ফেরত দিয়ে দেওয়া যায়। হেলাফেলা করতে চাইনি। কারণ এটার সঙ্গে আমার নামের সম্মান রয়েছে, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সম্মান রয়েছে, ডিরেক্টরের সম্মান রয়েছে। হয়তো অন্য কখনো সিনেমাটির কথা ভাবা হবে।

 

জয়া বিয়ের দাওয়াত কবে খাওয়াবে?

অনেক ভালো আছি। কেন আমার পায়ের মধ্যে বেড়ি পরাতে চাইছেন? আমার তো কোনো ইচ্ছা নেই। তবে কিছুই বলা যায় না কখন কি হয়!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর