বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

যত আলোচনায় তারা

যত আলোচনায় তারা

সিনেমার মানুষের জীবন যে শুধু সিনেমার আলোচনায় সীমাবদ্ধ থাকে তা কিন্তু নয়, এর বাইরেও তারা নানা আলোচনা-সমালোচনায় মুখর থাকেন। আর তাদের ব্যক্তিগত এসব আলোচনা সাধারণ মানুষ বেশ রসিয়ে কষিয়ে উপভোগ করেন। চার নায়িকার এমন কিছু আলোচনার কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

থেমে থেমে অপু-বুবলীর ঝগড়া...

চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর দ্বন্দ্ব বলতে গেলে দুই দিন পরপরই প্রকাশ্যে আসছে। একে অপরকে নিয়ে আপত্তিকর ও অসম্মানজনক মন্তব্য করার মধ্যেই যেন মেতে আছেন তারা। ‘কোনোভাবেই ‘আমাকে’ হারলে চলবে না।’ এমন নীতিতে যেন চলছেন দুজনে। তেমনটাই দেখা যাচ্ছে কয়েক দিন ধরে। অপু ও বুবলী দুজনেরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যথারীতি শাকিব খান। দুজনেরই শাকিব ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে, এমনটা জাহির করতেই এ ধরনের কথাবার্তা বলছেন, চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তা-ই বলছেন। গত ঈদে ‘রিভেঞ্জ’ মুক্তির কয়েক দিন পর মোহাম্মদ ইকবাল গণমাধ্যমে দাবি করেন, স্ত্রী হিসেবে শাকিবের ‘তুফান’ ছবিকে পরোক্ষভাবে সাপোর্ট করতে প্রচারণায় যাননি বুবলী। ইকবালের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুবলীর কথা ছিল, ‘আমার পরিবার বলেন, সহশিল্পী বলেন, স্বামী বলেন এবং সব সম্পর্কের ঊর্ধ্বে আমার সন্তানের বাবা শাকিব খান, তাঁকে নিয়ে যদি কোনো ব্যক্তি অসম্মানজনক কোনো মন্তব্য করেন, আমি অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলব। যেদিন থেকে দেখেছি, শাকিব খানকে নিয়ে ইকবাল ভাই আপত্তিকর মন্তব্য শুরু করলেন, তখন থেকেই আমি তাঁকে এড়িয়ে চলি।’ শাকিবকে নিয়ে বুবলীর এমন মন্তব্য স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি অপু বিশ্বাস, গণমাধ্যমে দেওয়া অপুর সাক্ষাৎকারে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। বুবলীর এমন মন্তব্যকে হাস্যকর আখ্যা দেন অপু বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘নিজে ছবি থেকে বাদ পড়ে শাকিবকে দেয়াল হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন তিনি। ‘দুর্বল গেম প্ল্যান’। ছবি থেকে বাদ না পড়লে শাকিবের প্রতি দরদ দেখানো এমন কোনো বাক্য ব্যবহার করতেন না। আসলে সবখানে শাকিব খানের নাম মুখে নিয়ে উনি ক্লান্ত হয়ে গেছেন।’ অপু বলেন, ‘উনি শাকিব খানের সম্মান নিয়ে কথা বলেন? যখন ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার প্রচারে গিয়ে শাকিব খানকে নিয়ে অভিনেতা আফরান নিশো নেতিবাচক কথা বললেন, তখন উনার (বুবলী) মুখে শোনা গেল সেই নিশোর প্রশংসা। ওই সময় কীভাবে শাকিবকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করা একজন মানুষের পক্ষে সাফাই গাইলেন তিনি!’ অপুর এমন কথার প্রেক্ষিতে বুবলী গণমাধ্যমে বলেন, ‘শাকিব খান আমার পরিবার। তাঁর নাম আমি সব সময় নিয়েছি এবং সারা জীবন নেব। পরিবারের মানুষের নাম নিতে কেউ কখনো ক্লান্ত হয় না। যাদের স্বার্থ থাকে, তারা ক্লান্ত হয়।’ বুবলী আরও বলেন, ‘যে মহিলা এসব বলছে, সে কে? যিনি ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো সব সময় আমাদের মাঝখানে তিড়িংবিড়িং করেন। নিজের মতো বানানো নানা মিথ্যা রচনা বলেন সারাক্ষণ। সবচেয়ে হাস্যকর কথা হলো, উনি তাঁর নিঃশ্বাসের থেকেও বুবলী নামটা বেশি নেন। তাঁর সব জায়গায় শুধু বুবলী বুবলী। তিনি ভাইরাল হওয়ার জন্য এমন কিছু নেই, যা করছেন না। বুবলী নাম নিতে নিতে এমনই মানসিক রোগী হয়ে গিয়েছেন। সেটা আড্ডা, সহকর্মী, টেলিভিশন, ইউটিউব, যেখানেই হোক, তাঁর মুখে শুধু বুবলী আর বুবলী। কোথাও গেলে তাঁদের শিখিয়ে দেন আমার নাম নিয়ে প্রশ্ন করতে, যেন উনি একটু ভাইরাল হন। আমি আর আমার ছেলে এখন তাঁর একমাত্র ক্যারিয়ার আলোচনায় থাকার। এমনকি জাতীয় টেলিভিশন পর্দায় কী সব উদাহরণ দিচ্ছেন, যার কোনো মানেই নেই। তাঁর সঙ্গে কী কী নোংরা আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করছে, যেটা খুব লজ্জাজনক। সব সময় তাঁর মুখে দুর্গন্ধজনক শব্দগুলো থাকে, তাঁর কারণ তাঁর ভিতরটাও এ রকম।’

 

থাপ্পড়-হত্যাচেষ্টা-চুরিকাণ্ডে ববি

গত ২৩ জুন গুলশান থানায় চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববির বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও চুরির মামলা হয়েছে। রেস্টুরেন্ট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ভবনমালিক ও রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ দ্বন্দ্ব হয়। এ ঘটনায় ববির পক্ষ থেকে পাল্টা মামলার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনা নিয়ে গত সোমবার সংবাদ সম্মেলন করেন ববি। সেখানে হত্যাচেষ্টা ও চুরির ঘটনা ছাপিয়ে আলোচনায় জায়গা করে নেয় ববির বিয়ে ও সম্প্রতি তাঁর অভিনীত ‘ময়ূরাক্ষী’ সিনেমার পরিচালক রাশিদ পলাশকে মারধর করার মতো প্রসঙ্গগুলো। সংবাদ সম্মেলনে ববি বলেন, ‘আমার রেস্টুরেন্ট ভেঙেছে, আমার লোকদের মেরেছে। হাসপাতালের ভর্তি থাকতে হয়েছে আমার লোকদের। সবদিক দিয়ে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। আমার নামে কখনো কোনো জিডি হয়নি। মামলা কখনোই হয়নি। করিওনি কোনো দিন; অথচ তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যাচেষ্টা ও চুরির মামলা করেছে। আমি তাদের কাছে ভবনের বৈধ কাগজপত্র চেয়েছি। তা না দিয়ে দিনের পর দিন ঘুরিয়ে পরে তারা সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের লোকদের মেরেছে। সেগুলো ধামাচাপা দিতেই মামলা করেছে। সংবাদ সম্মেলনে হঠাৎ ববির বিয়ের প্রসঙ্গ সামনে আসে। কেউ কেউ জানতে চান, ববি একজন ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেছেন। এ ঘটনার মধ্যে হঠাৎ কীভাবে বিয়ের প্রসঙ্গ এলো, তা ভেবে অবাক হন ববি। তিনি বলেন, ‘আমি বিয়ে করেছি, আমিই জানি না। কে, কোন ব্যবসায়ী, তা তো আরও চিনি না। এ জন্যই বলছি, আমি যেহেতু চিত্রনায়িকা, আমার বিরুদ্ধে উল্টাপাল্টা লিখে মানুষের কাছে এন্টারটেইনিং বিষয়ে রূপ দেওয়া সহজ। এটাই তারা হাতিয়ার করেছে। ভেবেছে, আমাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা নিউজ করে দেবে, আমি সামনে আসব না।’ এরপর সাংবাদিকেরা তার কাছে জানতে চান, পরিচালক রাশিদ পলাশকে থাপ্পড় মেরেছিলেন কি না? তার সঙ্গে কী ঘটেছিল? এতে কিছুটা বিব্রত হন ববি। তিনি বলেন, ‘এটা প্রযোজক ভালো বলতে পারবেন। রাশিদ পলাশ যেভাবে কথা দিয়েছেন, সেভাবে কাজ করতে পারেননি। তা ছাড়া আমার নাম ভাঙিয়ে তিনি অনেকবার তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, যেখানে আমি নিজের পেমেন্টই পুরোটা পাইনি। টাকা নিয়ে পলাশের সঙ্গে অনেকবার ঝামেলা হয়েছে। শেষের দিকে ডিস্ট্রিবিউশন নিয়েও ঝামেলা করেছে। শুটও ঠিকমতো করেননি।’ সাংবাদিকেরা বারবার জানতে চান, পরিচালকের গায়ে হাত তুলেছেন কি না? এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ববি। সাংবাদিকেরা কেউ কেউ বলেন, একটি গণমাধ্যমের কাছে থাপ্পড় মারার ভিডিও রয়েছে। তখন ববি বলেন, ‘আমি এমন কোনো ভিডিও দেখিওনি, পাইওনি।’ কিন্তু থাপ্পড় আসলেই মেরেছিলেন কি না, তা নিয়ে কোনো উত্তর দেননি ববি।

 

পুলিশ ও রাজকে ঘিরে পরী...

নায়িকা পরীমণি। সম্প্রতি নতুন করে আবারও আলোচনায়। এবার পরীমণির সঙ্গে সম্পর্কের জের ধরে বাধ্যতামূলক অবসরে গেলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার ও বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. গোলাম সাকলায়েন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে পরীর বক্তব্য হলো, ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরেই সাকলায়েনের সঙ্গে এমনটা হয়েছে। এমন কাণ্ড ঘটে যাওয়ার পরও সামাজিক মাধ্যমে ফুরফুরে মেজাজে আছেন পরী। ফেসবুকে পরী লিখেছিলেন, ‘বাই বাই রাসেলস ভাইপার, ওয়েলকাম পরীমণি’। এ স্ট্যাটাস নিয়েও নেটপাড়ায় আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে ওঠে। এরপরই বরিশাল বিমানবন্দর থেকে ছেলে পুণ্যকে নিয়ে একটি ছবি পোস্ট করেন অভিনেত্রী। তিনি লেখেন, ‘হ্যালো বরিশাল’। মামলা-মোকদ্দমা, তার বাসায় রাজের যাওয়া, সাকলায়েন কাণ্ড, সমালোচনা সবকিছুকে পেছনে ফেলে ছেলে পুণ্যকে নিয়ে বরিশালের সবুজে হারিয়ে যান পরী। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘পরীর ডানা’। এদিকে, গত মাসে পরীর বাসায় গিয়েছিলেন রাজ। এমন খবর চাউর হলে বিষয়টি গণমাধ্যমে স্বীকার করেন চিত্রনায়িকা। সেখানে একসঙ্গে খাবার খেয়েছেন তারা। তবে রাজকে নায়িকা নিজ হাতে রান্না করে খাইয়েছেন কি না, সে বিষয়ে কিছু জানাননি। শুধু বলেছিলেন, বাসায় রান্না হয়েছিল, সবাই একসঙ্গে খেয়েছিলেন। কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে নায়িকার বাসায় গিয়েছিলেন অভিনেতা, এমনটাই জানিয়েছেন পরী। আবার এর পরপরই পরী ফেসবুকে এমন একটি পোস্ট দিয়েছেন যা দেখে নেটিজেনরা ভাবছেন, রাজকে রান্না করে খাওয়ানো তো দূরের কথা, অভিনেতাকে বাড়িতে ঢুকতেই দেবেন না পরীর দারোয়ান। পোস্টে রাজের নাম উল্লেখ না করে পরী লিখেছেন, যাকে আমার বাসার দারোয়ানই গেটে অ্যালাউ করবে না, সে স্বপ্নে আমার রান্না খায়। ভক্তদের ধারণা রাজকে ইঙ্গিত করেই পোস্টটি লিখেছেন নায়িকা। এত রাজ কি পরীর বাসায় গিয়েছিলেন? না কি যাননি- এ নিয়েই তৈরি হয় ধোঁয়াশা। পরীর স্ট্যাটাসে দ্বিধায় পড়েন ভক্তরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর