বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

‘সাদা সাদা কালা কালা’ আমার পরম পাওয়া

‘সাদা সাদা কালা কালা’ আমার পরম পাওয়া

অভিনেতা ও গায়ক এরফান শিবলু মৃধা। মেজবাউর রহমান সুমনের ‘হাওয়া’ সিনেমায় ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গান গেয়ে যিনি রাতারাতি সুপরিচিতি পেয়েছেন। এর বছরখানেক পর ‘কথা কইও না’ গেয়েও পান দারুণ শ্রোতাপ্রিয়তা। যদিও দুটি গানের স্রষ্টাই হাশিম মাহমুদ। সম্প্রতি একটি নাটকের শুটিং সেটে তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ার ও গান নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

কোন নাটকের শুটিং করছেন?

নাম ‘ফ্যামিলী ম্যাটার’। এটি ১০৪ পর্বের সিরিয়াল, এসএটিভির জন্য নির্মিত। পরিচালনায় অপি আশরাফ এবং এস এম শাহীন। গল্প প্রিন্স আহমেদের আর চিত্রনাট্য করেছেন তাশদীক শাহরিয়ার ও অর্ণিমা বিন্তী টুপুর। প্রজেক্ট হেড হিসেবে রয়েছেন আল হুবায়ের উচ্ছ্বল।

 

গল্পটা কেমন? কারা রয়েছেন সিরিয়ালটিতে?

গল্পটা আমাদের চারপাশের মানুষের গল্প। দৈনন্দিন জীবন ও সমাজের চারপাশে যা ঘটছে- সবকিছু মিলিয়েই গল্পটা। এটিতে আমার চরিত্র হচ্ছে একজন অর্থ-বিত্তশালী মানুষ। এ মানুষটির অনেক টাকা আছে কিন্তু মানসিক প্রশান্তি নেই। এ নাটকে যারা কো-আর্টিস্ট রয়েছেন প্রত্যেকেই আমার পরিচিত। তাদের সঙ্গে আমি অনেক কাজ করেছি।

 

আগের সিরিয়ালগুলো এখনো জনপ্রিয়। কিন্তু এখন সিরিয়াল ১০০ পর্বের ওপরে গেলে দর্শক অনীহা...

কোথাও কেউ নেই, অয়োময়, সংসপ্তক, বহুব্রীহি কিংবা আজ রবিবারের মতো সিরিয়ালগুলোর গল্প ছিল ইউনিক। সেসময় টিভি চ্যানেলের সংখ্যাও ছিল হাতেগোনা। ওইদিক চিন্তা করলে এখন টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি মোবাইলেও কিন্তু দেখছে মানুষ। ওই সময়ে বিটিভি আর কিছু প্রাইভেট চ্যানেলে যেসব ধারাবাহিক চলত সেসবের গল্প ও যারা অভিনয় করতেন তারা ছিলেন দুর্দান্ত। এখন অনেক মাধ্যম আসায় লোকজন একটার পর একটা দেখছে। ফলে স্ক্রিপ করার চান্স খুব বেশি, অপশন অনেক। ভালো না লাগলে আরেকটা দেখছে। ওই জায়গা থেকে চিন্তা করতে গেলে এখন খুব পরিশ্রম করতে হয় ডিরেক্টরদের এবং আমরা যারা অভিনয় করি। তাই বলব, যতই দিন যাচ্ছে ততই স্ট্রাগল বাড়ছে।

 

অভিনয়ের ক্যারিয়ারে দীর্ঘদিন হলেও গান গেয়ে খ্যাতি পেলেন...

আগে থিয়েটার করতাম। থিয়েটারের পাশাপাশি আমার হঠাৎ করে ইচ্ছে হয় যে আমি ক্যামেরার সামনে কাজ করব। এরপর ক্যামেরার সামনে আসা। ক্যামেরার সামনে কাজ করতে এসে দেখলাম ক্যামেরার পেছনের মানুষের কষ্ট, স্ট্রাগল। তখন এসব দেখে আমিও অনিমেষ আইচের সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করি। দীর্ঘদিন ক্যামেরার পেছনে ও সামনে কাজ করেছি। এরপর মেজবাউর রহমান সুমনের সঙ্গে কাজ শুরু করি। সুমন ভাই তখন বিজ্ঞাপন বানায়, পাশাপাশি ওনার কিছু ফিকশনেও কাজ করি। ভাইয়া যখন সিনেমার কাজ শুরু করে তখন থেকেই ভাইয়া বলেছিল সিনেমায় কাজের কথা। বলেছিল ‘শিবলু, আমার সিনেমায় তোমাকে দিয়ে একটা গান করাব।’ আসলে গানের চর্চাটা যখন থেকে থিয়েটার করি তখন থেকেই। মানুষের সামনে হয়তো গান চর্চাটা করতাম না কিন্তু মনপ্রাণ দিয়ে গানটা করতাম। যেহেতু সুমন ভাই ও আমি একই অফিসে কাজ করি, তাই সুমন ভাই আমার গান শুনত। প্রায় সময়ই আমরা গানবাজনা করতাম। ওই জায়গা থেকেই সুমন ভাই বলেছিল আমাকে দিয়ে সিনেমায় গান করাবে। কিন্তু কার লেখা, কার সুর করা কখনো কিছুই তিনি বলেননি। যখন ‘হাওয়া’-এর শুটিংয়ে যাব, ঠিক তার কয়েক দিন আগে সুমন ভাই বলল, ‘হাশেম মাহমুদ ভাইকে একটু খুঁজে বের করো, উনার একটা গান আমাদের সিনেমায় ব্যবহার করতে চাই।’ তো হাশেম ভাইয়ের সঙ্গে আমার ও সুমন ভাইয়ের দীর্ঘদিনের গ্যাপ ছিল। তখন হাশেম ভাই কী অবস্থায় আছে জানতাম না। একসময় উনাকে খুঁজে বের করি, তার বাসায় যাই। আলাপ করি। এরপর উনাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হলো। দু-তিনবার হাশেম ভাইকে দিয়ে গান করার ট্রাই করা হয়। কিন্তু তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল ছিলেন। এরপর ভাইয়া আমাকে বললেন, ‘তুমি একবার ট্রাই করো।’ ওই জায়গা থেকে আমার প্রথম প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে আত্মপ্রকাশ। এটা আমার পরম পাওয়া। আমি এ জন্য আল্লাহর কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া আদায় করব।

 

এরপর তো কথা কইয়ো না দিয়ে মাত করলেন। সামনে কোনো সারপ্রাইজ আসবে কি?

আসবে একটা। কাজ চলছে। তবে এখন কিছুই বলা যাবে না। অপেক্ষায় থাকুন।

সর্বশেষ খবর