বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

ছোটবেলায় বলতাম, আর্মি অফিসার হব

ছোটবেলায় বলতাম, আর্মি অফিসার হব

বাবা আশির দশকের সাড়া জাগানো গায়ক প্রয়াত খালিদ হাসান মিলু। কিন্তু বাবার পরিচয়ে নয়, প্রীতম হাসান নিজ প্রতিভার গুণেই এখন দেশের সংগীত জগতের সুপরিচিত নাম। পাশাপাশি অভিনয়েও পেয়েছেন সুখ্যাতি।  সম্প্রতি ‘মা লো মা’ আর ‘লাগে উরাধুরা’ গেয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য লেভেলে। তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপনে - পান্থ আফজাল

 

ইউটিউবে বিশ্বব্যাপী সেরা ১০০ গানের তালিকার প্রথম ৪-এ ‘লাগে উরাধুরা’। কেমন লাগছে বিষয়টি?

মাত্র দুই মাসে এমন সাফল্য সত্যিই অভূতপূর্ব। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই গানটি ভাইরাল হয়ে যায়। এবারই প্রথম কোনো বাংলা সিনেমার গান ইউটিউবের গ্লোবাল তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে উঠেছে। এ ছাড়া ইউটিউব শর্টস, ফেসবুক রিলস, টিকটকসহ নানা মাধ্যমে গানটি ছড়িয়ে পড়েছে।

 

‘মা লো মা’ গানটিও দর্শক লুফে নিল...

হুম, প্রকাশের পর থেকে প্রচুর মানুষ দেখেছেন গানটি। এটি একটি ফোকগান। গ্রাম বাংলার বহু বছরের প্রচলিত গান এটি, যে গানে মাটির গন্ধ আছে। তাই দ্রুত সাড়া মিলেছে। ধন্যবাদ গানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে।

 

অভিনয়ে নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছা আছে?

আমি তো অভিনেতা নই। তবে কয়েক বছর ধরে টুকটাক অভিনয় করছি। মজা করেই অভিনয়টা করছি এখন। কারণ, অভিনয় এখন উপভোগ করছি। ভালো গল্প, চরিত্র ও নির্মাতা হলে অভিনয় করব।

 

অনলাইননির্ভর সংগীতাঙ্গনের যুগকে কীভাবে দেখছেন?

অনলাইন আমাদের ভবিষ্যৎ প্ল্যাটফরম। এটির রয়েছে অনেক সম্ভাবনা যদি ঠিকঠাকমতো কাজে লাগানো যায়। তবে ভালো মানের কাজ দিয়েই মানুষের মনে জায়গা করে নিতে হবে।

 

বাবার দেখানো পথ ধরেই কি হাঁটতে চেয়েছিলেন?

মিউজিকের প্রতি কোনো আগ্রহই ছিল না আমার। ছোটবেলায় বলতাম, আর্মি অফিসার হব। ঘর ভর্তি ছিল খেলনা রাইফেল, পিস্তল, বন্দুক, গুলি এসব। ভীষণ দুষ্টু ছিলাম। প্রতীক ভাইয়া প্রায়ই অনুশীলন করাতেন। ভাইয়া এ ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস থাকলেও আমার মনোযোগ ছিল কম্পিউটার গেমসে। আব্বু মারা যাওয়ার পর গেমস নিয়েই পড়ে থাকতাম। তারপর একটা সময় ভাইয়ার অনুপ্রেরণাতেই আমার সংগীতাঙ্গনে পা রাখা। মাধ্যমিক পরীক্ষার পর ফুপুর কিনে দেওয়া কম্পিউটারে কম্পোজিশনের অনুশীলন শুরু হয় রিদমের প্যাটার্ন তৈরির মাধ্যমে। তারপর একটা সময় মজা করে একটা-দুইটা প্যাটার্ন করা শুরু করি। প্রথম একটি রবীন্দ্রসংগীত রিমিক্স করি। এই তো!

 

সংগীতাঙ্গনে প্রথম সুযোগটা আসে কীভাবে?

হাবিব ভাইয়ের করা একটা মুঠোফোনের জিঙ্গেলে গান গাওয়ার মাধ্যমে। তবে এ বিষয় নিয়ে রয়েছে আরেক ইতিহাস। মুঠোফোনের এ জিঙ্গেলটি গাওয়ার জন্য হাবিব ভাই কিন্তু প্রতীক ভাইয়াকেই ডেকেছিলেন। কিন্তু তিনি একটু রাফ ভয়েস চাচ্ছিলেন। তখন ভাইয়া আমাকে দিয়ে চেষ্টা করতে বলার পর আমি সেটি করি। এর পরই হাবিব ভাইয়ের সঙ্গে আমার ব্যাপক সখ্য গড়ে ওঠে। প্রতিদিন রামপুরা থেকে গ্রিন রোডে হাবিব ভাইয়ের স্টুডিওতে যেতাম সাইকেল চালিয়ে। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে আর গান করতে পারমান্যান্টলি তাঁর বাসার কাছেই বাসা নিই। ওই সময় অদিত ভাইও আসতে বললেন। এরপর তো আমি গানের জন্য বাসা ছেড়ে পান্থপথের স্টুডিওতে চলে এলাম।

 

গান করা, সংগীত পরিচালনা অভিনয়-এতসব কীভাবে?

আসলে হয়ে যায় আর কি! নুহাশ ভাইয়ের কারণে অভিনয় করেছি। তিনি আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তার কাজ সব সময় ভিন্নরকম। তবে আমার সব আগ্রহ কিন্তু গান নিয়ে, অভিনয় করার ইচ্ছা ছিল না। অনুরোধ রক্ষার ফলে করেছি। প্রতীক ভাই, হাবিব ভাই, অদিত ভাই গানের ক্ষেত্রে অনেক বেশি হেল্প করেছেন। আর আমি যে গানগুলো করেছি সবই দেখবেন করেছি বাংলা সুর ব্যবহার করে।

 

‘ভালো ছেলেদের কপালে ভালো মেয়ে জোটে না’, সত্য নাকি?

আসলেই কিন্তু! এ পর্যন্ত আমার দেখা ভালো ছেলেদের (বন্ধু) কপাল খুবই খারাপ... হা-হা-হা।

সর্বশেষ খবর