শনিবার, ২০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

চলচ্চিত্র ব্যবসা করছে, এটি আশার কথা

চলচ্চিত্র ব্যবসা করছে, এটি আশার কথা

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী ববিতা অভিনয় থেকে দূরে আছেন প্রায় ১০ বছর হলো। তাঁর কথায় মানসম্মত গল্প ও চরিত্রের অভাবে আর অভিনয়ে ফেরা হচ্ছে না। কেমন কাটছে অবসর সময়। এ নিয়ে ববিতার বলা কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

চলচ্চিত্র থেকে দীর্ঘদিন দূরে আছেন, সময় কাটছে কীভাবে?

সময়টা আসলে ভালোমন্দ মিলিয়েই কাটছে। প্রায় সময়ই কানাডা ও আমেরিকায় পুত্র ও ভাইদের সঙ্গে সেখানে গিয়ে সময় কাটাই। দেশে থাকলে বাসায় দৈনন্দিন কাজকর্ম, রান্নাবান্না, নামাজ দোয়া, টিভি দেখা, বই পড়া-এসব নিয়েই সময় কেটে যাচ্ছে।

 

অভিনয় বা নির্মাণে আসছেন?

আমি তো বরাবরই বলে আসছি ভালো গল্প ও চরিত্রের অভাবে অভিনয় ছেড়েছি। এ দুটি যদি মনের মতো করে পাই তাহলে অভিনয়ে ফিরতে আমার কোনো আপত্তি নেই। আর নির্মাণের চিন্তা আপাতত বাদ দিয়েছি। কারণ সিনেমা হল আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে, দর্শক সিনেমা হলে যায় না, এতে বিনিয়োগ করা অর্থ ফেরত আসবে কোথা থেকে। লোকসান গুনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে যাব কেন।

 

চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী?

আমি সব সময় ইতিবাচক। এ জগৎটাকে ভালোবাসি। আমি চাই আরও ভালো ভালো ছবি হবে। আমার কথা- এমন ছবি বানান যেগুলো বক্তব্যপূর্ণ ও সুন্দর হবে, আবার সমাজের জন্য বার্তাও থাকে; ব্যবসায়িকভাবেও সাফল্য পাবে। ভালো গল্প, স্ক্রিপ্ট, ডায়ালগ-সবকিছু মিলিয়ে যেটা হবে সেটাই ভালো সিনেমা। মানে এরকম না যে, শুধু ধুমধাড়াক্কাই হবে। সব মিলিয়েই ভালো ছবি বানাতে হবে। আমজাদ হোসেন, জহির রায়হানদের ছবিগুলো যে ধরনের হতো সেগুলোকে আমি বলব ফুল প্যাকেজের মুভি। কিন্তু এখন অনেক সময় ছবি বানানো হলো, শুধু সিনেমা হলে অল্প কিছু দর্শক গেল। তাতে তো কিছু হবে না। সব ধরনের লোককেই দেখতে হবে সিনেমা।

 

চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা কেমন মনে হয়?

অনেকে অনেক কারণে হতাশার কথা বলেন। অনেক ব্যবসায়ী আমাদের ফিল্মে ঢুকে গেছেন। তারা শিল্পমান নয়, ব্যবসাটাকেই বেশি প্রাধান্য দেন। সেদিক থেকে বিষয়টি হয়তো তারা বলছেন, দেখা যাক কী হয়। একটা জিনিস কিন্তু ফেলার মতো না; আপনি জানেন নিশ্চয়ই, আগে পরিবার নিয়ে সিনেমা হলে যাওয়া যেত, তখন হলের পরিবেশ অনেক সুন্দর ছিল। সিনেমা হলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল। সবার তো আর গাড়ি ছিল না; রিকশায়, হেঁটে যে যেভাবে পারতেন সিনেমা হলে যেতেন। কিন্তু এখন অনেকে হলে যান না।

 

সিনেমা হলে না যাওয়ার কারণ কি শুধুই নিরাপত্তা?

না, আরও কারণ আছে। অনেকে এখন ভাবছেন ঘরে বসেই তো আমরা টিভি চ্যানেল, অনলাইন প্ল্যাটফরম ও ইউটিউবে বাংলাদেশ, বলিউড ও হলিউডের হিট ছবিগুলো দেখতে পাচ্ছি। তাহলে হলে যাব কেন?

 

তাহলে ড্রয়িং রুমই দর্শকদের হলবিমুখ করেছে?

তা তো অবশ্যই। আমরা যদিও বলি, হলে বসে সিনেমা দেখার আবেদন সবসময় আলাদা। কিন্তু আপনি যখন বিনোদনমূলক সিনেমা দেখতে যাবেন তখন সবকিছু ভেবেই মা-খালা-বোনকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাবেন। এখন তো পরিবারগুলো, বিশেষ করে নারীরা সিনেমা হলে যায় না। কারণ সার্বিকভাবে সিনেমা হলে যাওয়ার পরিবেশ নেই।

 

চলচ্চিত্রের দুর্দশার মধ্যেও গত কয়েক বছরে বেশকিছু ছবি কিন্তু দর্শক দেখেছে?

হ্যাঁ, অনেক ভালো ছবি নির্মাণ হয়েছে এবং কিছু দর্শক দেখেছে, পুরস্কারও পাচ্ছে, মুনাফার মুখ দেখছে। পুরস্কার পাওয়ার পাশাপাশি ছবির ব্যবসায়িক সাফল্য পেলে ভালো লাগে। এটি আমাদের এ শিল্পের জন্য অবশ্যই আশার কথা। একটা ছবির পেছনে লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত আনতে হবে। না হলে নির্মাতা ইনভেস্ট করবেন কেন?

 

চলচ্চিত্রের মন্দাবস্থার পেছনে দায়ী কারা?

আসলে মুষ্টিমেয় লোকের হাতে সিনেমার ব্যবসাটা চলে গেছে। আমাদের শিল্পীরা ভালো অভিনয় করছেন; সব ঠিক আছে কিন্তু আপনি কী বানাচ্ছেন? ভালো গল্প তো নেই।

সর্বশেষ খবর