বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা
আলাপন

দায় থেকে একটুও সরিনি কখনো

দায় থেকে একটুও সরিনি কখনো

মঞ্চ, টিভি, ওটিটি ও চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেতা-নির্দেশক তারিক আনাম খান। অভিনয়জগতে পথচলা দীর্ঘদিনের। এ মুক্তিযোদ্ধা বেশ কিছু ওয়েব ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। অভিনয়জীবনের জানা-অজানা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথোপকথন- পান্থ আফজাল

 

একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নাকি মেধা কোটার পক্ষে অবস্থান?

সত্যি করে বলতে কি মুক্তিযোদ্ধার যে কোটা আছে সেটা জানতাম না। মুক্তিযুদ্ধ করেছি তবে সার্টিফিকেটের জন্য করিনি। আমার সার্টিফিকেট নেই। সেটা নিয়ে আমার কোনো ক্ষোভ, খেদ কিছুই নেই। আমার মনে হয় যে, মুক্তিযোদ্ধা একটা বড় জায়গা। এখানে কোটার দরকার নেই। আমি মনে করি, মেধার জায়গাটাই বেশি থাকা উচিত। আর সমাজের কিছু সুবিধাবঞ্চিত, প্রতিবন্ধী আছে যারা মেধাসম্পন্ন তারা সুযোগ পাক।

 

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন মনে হচ্ছে?

ইন্ডাস্ট্রি কিন্তু স্টাবলিশ না। একটু সুবাতাস শুরু হয়েছে কেবল। মনে হয় আরও ডেভেলপ হবে। পরিবর্তন আসবে। প্রচুর ভিন্ন ভিন্ন ছবি তৈরি হবে আশা রাখছি।

 

টিভি নাটক কম করছেন...

টিভির নাটক আগের অবস্থায় নেই। আমরা বিটিভির মানুষ, নাটকের মানুষ। একটু যদি মান নিয়ন্ত্রণ করি, মার্কেট বুঝে কাজ করি তাহলে ভালো কিছুই হবে। আমি আশাবাদী মানুষ। ভালো কিছু আশা করি।

 

কখনো কি মনে হয় কেন অভিনয় করছেন?

আমার কাছে সহজ উত্তর- অভিনয় করি ভালোবাসা থেকে। নাটকে ও সিনেমায় অভিনয় এবং পরিচালনা করতে ভালোবাসি। যখন মুক্তিযুদ্ধ করি, যখন দিল্লিতে পড়ালেখা করতে যাই, তখনই ভেবেছিলাম আমার দায় আছে দেশের এবং শিল্পের প্রতি। সেই দায় থেকে একটুও সরিনি কখনো। আগামীতেও প্রিয় দেশের জন্য অনেক কিছু করে যেতে চাই।

 

অভিনয় শেখার স্কুল তৈরির অগ্রগতি?

স্বপ্নটা এখনো আছে। আসলে জায়গা পাওয়াটাই মুশকিল। তবে মনে হয় সামনে একটা কিছু করতে পারব হয়তো মনে হয়।

 

থিয়েটারে নিয়মিত হবেন না?

একটু কাজের প্রেসার হয়ে গেছে তো। থিয়েটারটাকে যে লেভেলে নিয়ে যাওয়া দরকার সেটা কম হচ্ছে। তবে থিয়েটারটাকে পেশাদারির সঙ্গে মেলানো দরকার।

 

হুমায়ুন ফরীদির সঙ্গে আপনার ছিল সখ্য। তাঁকে নিয়ে মজার কিছু স্মৃতি জানতে চাই...

হুমায়ুন ফরীদির সঙ্গে তো প্রতিটি মুহূর্তই মজার। তাঁর সঙ্গে প্রতিদিন দেখা হতো। ফরীদির সঙ্গে ক্রিয়েটিভ আলোচনা ছিল খুবই ইন্টারেস্টিং। তাঁর কথায় ছিল মুগ্ধতা। এমনও হয়েছে সে এক ঘণ্টা ধরে জোকস বলছে কেউ বিরক্ত হয়নি, সবাই হেসেই যাচ্ছিল। তাঁর কথায় সময় কীভাবে যে চলে গেছে কেউ টেরই পেত না। আমার নাট্যকেন্দ্র করার পেছনে তাঁর বড় ভূমিকা ছিল। অদ্ভুত স্বভাবের ছিল সে। সে সবসময় আউট অব দ্য ফ্রেম থাকতে চাইত। আমরা তিন-চার বছর একসঙ্গে অনেক আড্ডা দিয়েছি। ও ওর ইচ্ছামতো চলত। ভালো লাগলে চাকরি করত, না লাগলে ছেড়ে দিয়ে চলে আসত। ছবি দেখা, আবৃত্তি করা, আড্ডা দেওয়া, জোকস করা তাঁর খুবই পছন্দ ছিল। ফিল্মে সে লেট করে যেত, লেট করে আসত। ভালো লাগলে করেছে, না লাগলে করেনি। ফিল্মে হুমায়ুন ফরীদি টোটালি নিজেকে ওয়েস্টেড করেছে। ও মোটামুটিভাবে নিজেকে কমার্শিয়ালাইজড বেশি করেছে।

 

হুমায়ূন আহমেদের প্রথম দিককার নাটকে অভিনয় করেছিলেন...

হুমম... তবে ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিকে কাজ করতে গিয়ে একটু মনোমালিন্য হয়। তাঁর শেষ কাজ ‘ঘেটুপুত্র কমলা’র জমিদার চরিত্রেও কাজ করেছি। তিনি অসাধারণ ছিলেন তাঁর লেখায়।

 

অভিনয়ের কোন সূত্রে বিশ্বাসী?

মানুষের টেনডেনসি হলো স্বাভাবিক মানুষকে দেখা। যে কয়টা চরিত্র করেছি, চিন্তা করেছি সেটা যেন মানুষের জীবনের সঙ্গে মেলে, দেখে, বিশ্বাস করে। গ্রহণযোগ্য অভিনয়ই করা উচিত। আই অলওয়েজ লার্ন। এটা খুবই ইমপোর্ট্যান্ট। সবারই শেখার অ্যাটিচিউড রাখাটা জরুরি। মানুষ আসলে একটি কূপমণ্ডূক জায়গার মধ্যে মানে একটি হাঁড়ির মধ্যে বন্দি হয়ে আছে। এটিকে ভাঙতে হবে।

 

সবাই নেতা হয়ে যাচ্ছে...

আমার নেতা হওয়ার যোগ্যতা নেই।

সর্বশেষ খবর