শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা
ঘড়ি ধরে ৫ মিনিট

ভালো গানের ক্ষুধা আমার আছে

ফাহমিদা নবী

ভালো গানের ক্ষুধা আমার আছে

আমাদের গানের ভুবনের প্রিয় গায়িকা ফাহমিদা নবী। যিনি লুকোচুরি লুকোচুরি গল্পে আমাদের আবেগী এক নদীতে ভেসে নিয়ে যান ইচ্ছার মেঘলা আকাশে। গানের কথার মতো সুরটাও উত্তরাধিকার সূত্রেই পাওয়া।  এ গুণী সংগীত তারকার সঙ্গে সাম্প্রতিক আলাপচারিতা তুলে ধরেছেন- পান্থ আফজাল

 

দেশে কবে ফিরেছেন?

আগস্টের ১৬ তারিখে। যুদ্ধের সময় তো আসতে পারি নাই।

 

নতুন দেশ পেলেন। কেমন লাগছে?

‘কে আবার বাজায় বাঁশি কুঞ্জবনে’। অনেক ভালো লাগছে। আমি তো পুরনো মানুষ। নতুন দেখেছি, পুরনো দেখেছি আবার নতুন করে হতে দেখলাম। আসলে মানুষের তো কোনোকিছুই বদলায় না। আমি যেমন আমার মতো, প্রত্যেকেই তেমনি প্রত্যেকের মতো। তবে আমি মনে করি, সমাজ সংস্কারে প্রত্যেক মানুষের নিজেকে নিজে সংস্কার করতে হবে। যেমন আমার ক্ষমতা আমি শিল্পী। আমার ক্ষমতা আমি গান গাইতে পারি। গান নিয়ে ভালো কথা বলতে পারি। অন্য সেক্টর বা পেশার লোকদের ক্ষমতা একেকজনের একেক রকম। একজন শিল্পীর কিন্তু সমাজে ভূমিকা বেশি থাকে। তাই এ সময় আমাদের স্থির থাকতে হবে। সময়ের অপেক্ষা করতে হবে। সারা দিন যদি আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই থাকতে হয় তাহলে কি ভালো কিছু হবে? এখন তো ফেসবুক আমি খুলতেই পারি না। কে কী করল, কে কাকে কী বলল- সেগুলো নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকে। এভাবে দেশ, সমাজ কি চলবে? আমি হাসব, আমি গাইব, আমি কথা বলব-এটাই তো শিল্পীর ধর্ম। এখন তো কোনো প্রশ্নই করি না। শুধুই শুনি।

 

দেশ প্রস্তুতির মাঝেই বন্যায় আক্রান্ত মানুষ...

খুবই খারাপ অবস্থা। আমি যতটুক পেরেছি, পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের তো কয়েকটি মিউজিক গ্রুপও আছে। একটি ‘গেট আপ স্যান্ড আপ’, এরপর ‘ইন কেস অব ইমার্জেন্সি’ এবং ‘মিউজিশিয়ানস ফর বাংলাদেশ’। আরেকটি ‘বন্যা দুর্গতদের জন্য সাহায্য’। এ প্ল্যাটফরমগুলো থেকে আমরা যে ফান্ড তুলে সাহায্য করছি, যে যে যার মতো পারছি, সেভাবেই করছি। আসলে আমরা চাইলেই কিন্তু সব পারি-যেটা এখন দেখা যাচ্ছে। বন্যার পর কিন্তু পলিমাটি জমে। শুধু ধৈর্য ধরতে হবে এখন, তাহলে ভালো কিছু আসবে। দোয়া রইল মানুষের জন্য। আল্লাহ যেন সবাইকে সুস্থ রাখে।

 

আপনার ফেসবুক আইডিতে দুই বোনের গাওয়া একটি গান ঘুরছে। সেটি নিয়ে জানতে চাই।

‘আমার সকল সুখে বুুবু’-এ গানটি তো? আসিফ ইকবালের লেখা ও নকীব খানের সুর করা। এটা কিন্তু অনেক আগের গান। আমি আর সোমা একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে গেয়েছিলাম। তখন এ গানটির জন্য সবাই পাগল ছিল। গানটি ১৯৮৫ সালের। এরপর নতুন করে গেয়েছি ২০১৮ সালে। এরমধ্যে রিলস বানিয়ে আপ দিয়েছি। আরও একটি গান সবাই পছন্দ করেছিল। সেটা ‘দূরদেশ’ সিনেমার- ‘ভাইটি আমার তুমি কেঁদোনা’। যেটি দিয়ে সিনেমাতে আমার প্লেব্যাক শুরু।

 

সংগীতাঙ্গনে একটা অস্থির সময় চলছে...

এইটা তো আগে থেকেই চলছে। আমি শিল্পী। আমার কাজ শুদ্ধ গান করা। আমি তো নাচতে পারব না স্টেজে। আমার আবার স্টেজ ফোবিয়া আছে। আমি মনে করি, একজন শিল্পীকে কিছু সময় পেছন ফিরে তাকাতে হয়। আমি কিন্তু এটাই মেনে চলি। আমি গান গাইতে চাই। একটা ভালো গানের ক্ষুধা আমার আছে। আমার জীবনে কোনো অশ্লীল গান নেই। করতেও চাই না। ভালোবেসে অডিয়েন্স আমাকে যে স্থানে বসিয়েছে সেটাকে সম্মান জানাই সবসময়। এ সরকারের কাছে চাওয়া, গানের কথা শুদ্ধ হোক। আজেবাজে কথার গান যেন না হয়।

 

এত ব্যস্ততার পরও ব্যস্ততাটা আসলে কী নিয়ে?

আমাদের ব্যস্ততা তো গানকে ঘিরেই। তবে গান করে কী হবে? কে শুনবে? আমি মনে করি, এ সময়ে অটো টিউনে গান করা বাদ দিতে হবে। কোনোরকমে গান করে আসলাম, সেটা চলবে না। গান গাওয়ার পলিসি চেঞ্জ করতে হবে। দু-একটা লাইন না গেয়ে, পুরো গানটি গাইতে হবে। এভাবে গান করলে কাজ হবে। সিনিয়র শিল্পীদের সম্মান দিতে হবে। গানের শিল্পীরা এখন খুবই অবহেলিত। আর সরকারিভাবে শিল্পীদের সম্মানী দিতে হবে। পেনশন দিতে হবে। শিল্পীকে কেন দুস্থ শিল্পীর খাতায় নাম লিখতে হয়?

 

সর্বশেষ খবর