১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৪:৪৭

‌‘তারা এক্সপ্লোর করারই সুযোগ পেল না’

অনলাইন প্রতিবেদক

‌‘তারা এক্সপ্লোর করারই সুযোগ পেল না’

ইকবাল আসিফ জুয়েল

দেশের ব্যান্ড সংগীতের সাথে যাদের পরিচয় আছে, তাদের কাছে প্রিয় একটি মুখ ইকবাল আসিফ জুয়েল। যিনি কখনও গায়ক, কখনও গিটারিস্ট, আবার কখনও স্ক্রিপ্ট লেখক রূপে ধরা দিয়েছেন। তার সর্বশেষ কাজ ছিল হাইব্রিড এক্সপেরিয়েন্স শীর্ষক কনসার্টের আয়োজন, যেখানে অংশ নেয় বাংলাদেশের বেশকিছু জনপ্রিয় ব্যান্ড। সংগীতের প্রতি ভালোবাসা থেকে বিভিন্ন সময়ে বহুমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখা গেছে গুণী এই শিল্পীকে। কাজ করেছেন একাধিক ব্যান্ডের সাথে। তার বর্ণিল জীবনের নানান পর্যায়ের গল্পই জানবো আজ তার মুখ থেকে… 

এখন যেমন আছেন… 
‘দ্য হাইপ ফেস্টিভ্যাল’-এর ঘোরে আছি। কারণ এটাই আমার একেবারে সর্বশেষ কাজ, যার রেশ এখনও কাটেনি। 

শুরুর শুরুটা যেভাবে…
বর্তমানে ‘মাইলস’ এর সাথে থাকলেও মূলত আমার মিউজিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ‘লেজেন্ড’ ব্যান্ড দিয়ে। মাঝে ‘ওয়ারফেইজ’ এর সাথেও কাজ করা হয়েছে। আর্টসেল ও আর্বোভাইরাসের প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছি। আর্টসেল-এর তৃতীয় অ্যালবামের একাধিক গানে গিটার বাজিয়েছি। কাজ করেছি বেজবাবা’র সাথে। ‘মাইলস’ এর সাথে আমার পথচলা শুরু ১৯৯৯ সাল থেকে। 

মাঝপথে বিরতি? 
আমি ক্যারিয়ার জীবনে কখনোই বিরতি নেইনি। মাইলস সবসময় অ্যাক্টিভ ব্যান্ড ছিল, মাইলসের লাইভ শোতে ব্যস্ততায় সময় কেটেছে। মাইলসের বাইরেও কোনো না কোনো ব্যান্ডে কাজ করা হয়েছে, ব্যান্ডকে প্রডিউস করা হয়েছে, মিউজিক ভিডিওতে কাজ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে সবসময়ই ব্যস্ততার মাঝে সময় পার করেছি এবং এখনও ব্যস্ততায় সময় কাটছে। মাঝে দশ বছর কিছুটা অন্তরালে ছিলাম, তবে কাজ থামে নি। ভক্তদের জন্য ‘নিলানা খবর’ গান নিয়ে হাজির হয়েছি।  

সংগীতের তরে… 
সংগীতের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আজকের আমি। কখনও ব্যান্ডের ভোকাল, কখনও গিটার, সম্ভব হলে নতুন ধারার সংগীতের প্রবর্তন, আবার কখনও একেবারে নিজস্ব একক অ্যালবাম, আবার মিশ্র অ্যালবামেও গেয়েছি। এক কথায়, যখন যেভাবে সম্ভব হয়েছে মিউজিকের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। তেমনই একটা প্রচেষ্টা ছিল, রক সিরিজ মিক্সড অ্যালবাম করার। বেজবাবা’র সাথে করা রকলিংক বাংলাদেশের মিউজিক ভিডিওতে এক নতুন ধারার জন্ম দেয়। তৈরি করেছি বাংলাদেশ ও উপমহাদেশের প্রথম রক গিটার ইন্সট্রুমেন্টাল অ্যালবাম এক্স-ফ্যাক্টর। গানের প্রতি ভালোবাসা থেকে গঠনমূলক কিছু করার লক্ষ্যে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি। আমার ফুলসার্কেল ক্রিয়েটিভ এজেন্সির কাজই সংগীতায়োজন নিয়ে।    

প্রাপ্তির তৃপ্তি… 
মিউজিককে ভালোবেসে যা কিছু করেছি, সবটাই আমার প্রাপ্তি। ভক্তদের ভালোবাসা, অগ্রজদের স্নেহ আর অনুজদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি। প্রাপ্তির তৃপ্তি নিয়েই এতদূর আসা।   

অপ্রাপ্তির আক্ষেপ? 
আমার জীবনে কোনো অপ্রাপ্তি নেই, তবে একটা আক্ষেপ আছে। বাংলাদেশে মিউজিকের প্রপার রিকগনিশন শিক্ষা লেভেলে নেই অর্থাৎ মিউজিকের ইন্সটিটিউশন নেই। যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অংক, বাংলা আলাদা সাবজেক্ট আছে, একইভাবে সংগীতটাকেও যদি অন্তর্ভুক্ত করা যেত, তাহলে খুব ভালো হবে। যাদের অংক, রসায়ন কিংবা পদার্থবিদ্যায় মন নেই, তারা হয়তো মিউজিক এ অনেক ভালো করতে পারত। কিন্তু তারা জানতেই পারলো না, এক্সপ্লোর করারই সুযোগ পেল না।

নতুন কাজ…  
আর্টসেলের তৃতীয় অ্যালবাম আমি প্রডিউস করছি এবং গিটারিস্ট হিসেবেও থাকছি। এ মাসে আর্টসেলের একটি গান বের হচ্ছে, যেটাতে আমারও অংশগ্রহণ আছে। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য একটা মিউজিক ভিডিও করছি। গানটা প্রায় হয়ে গিয়েছে। গান গেয়েছি আমি আর রাফা, ড্রামে আর্টসেলের সাজু এবং বেইজ এ পাভেল। মিউজিক ভিডিওর শ্যুটের কাজ চলছে। 

পথের শেষটা যেভাবে ভাবছেন…  
দেশের সবগুলো ব্যান্ড দলকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার মাধ্যমে আমাদের ব্যান্ড মিউজিককে আরও অনেকদূর এগিয়ে নিতে চাই। আর এগিয়ে যাওয়ার পথে যতোদিন সম্ভব নিজের সেরাটা দিয়ে কিছু করে যেতে চাই।  

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর